প্রথমে জমি-জমা, এরপর একে একে সংসারের ছোট-বড় সকল ধরনের প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিক্রি করে নেশার পেছনে। সব কিছু শেষ হওয়ার পর শুরু করে চুরি-ছিনতাই। এলাকার লোকজনের মারপিট ও পুলিশের হাতে ধরা পড়ে জেল-হাজত ঘুরে এসে আবার একই কাজ। ফলে অনেক আগেই স্ত্রী, সন্তান চলে গেছে তাকে ছেড়ে। রংপুর চিনিকলের চাকুরী হারানো অস্থায়ী শ্রমিক এক মাদকাসক্ত যুবক বাবু মিয়া এবার বৃদ্ধা মা ও প্রতিবন্ধী বোনের মাথা গোঁজার ঠাঁই একটিমাত্র ঘরের চালের টিন খুলে নিয়ে বিক্রি করে দেয় তিন দিন আগে। সোমবার (১১ এপ্রিল) রাতে এসে আবারও ঘরের ছাউনির কাঠ ও খুঁটিগুলোও তুলে নিয়ে জ্বালানী হিসেবে বিক্রি করে দিয়েছে ।
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নে বামনহাজরা গ্রামে ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে খোলা আকাশের নিচে দিন কাটাচ্ছেন নেশাখোর ওই যুবকের মা অশীতিপর বৃদ্ধা খাতেমা বেগম (৮০) ও প্রতিবন্ধী বোন হেলেনা বেগম (৪৫)। প্রতিবেশীদের ঘরের বারান্দায় রাতে শুয়ে ও তাদের দেয়া খাবার খেয়ে দিন কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।
প্রতিবেশীরা জানান, নেশার পিছনে সবকিছু শেষ করে দিয়ে বাবু মিয়া এখন তার মা-বোনের বসবাসের একমাত্র ঘরটিও বিক্রি করে দিয়েছে। শেষ সম্বল বোনের নামে দলিলকৃত এক শতাংশ জমি বিক্রির জন্য চাপ দেয়ার পর তার ওপরের এই ঘরটি সে বিক্রি করে দিয়েছে।
বৃদ্ধা খাতেমা বেগম বলেন, আমাদের পাশাপাশি গ্রামের প্রতিবেশীদেরও জীবননাশের ভয় দেখায় বলে তাকে কেউ কিছু বলে না এখন। ভিটার এক শতাংশ জমি বিক্রির জন্য সে প্রতিনিয়ত আমাকে ও আমার প্রতিবন্ধী মেয়েকে অত্যাচার করছে।
প্রতিবেশী ও রংপুর চিনিকলের কর্মচারী ফারুক হোসেন ফটু জানান নিজ গ্রামের পাশাপাশি মহিমাগঞ্জ রেলস্টেশনে চুরি-ছিনতাই করে নেশার টাকা সংগ্রহ করে অভিযুক্ত বাবু মিয়া। পুলিশ তাকে কয়েকবার আটক করলেও কিছুদিন পর আবার ফিরে এসে আবার একই কাজ করেন তিনি।