মোঃ মাসুম ইসলাম
বাঘা ( রাজশাহী) প্রতিনিধি।
রাজশাহীর বাঘায় মীরগঞ্জ রেশম বীজাগার মসজিদের খাদেম লালন হোসেনকে মারপিট সহ প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মীরগঞ্জ ভানুকর গ্রামের হামিদ আলীর ছেলে লালনের সাথে গত শনিবার (৯ এপ্রিল) রাত্রি আনুমানিক ১০টায় রেশম বীজাগারের সামনে জনসম্মুখে এ ঘটনা ঘটে। বেশ কয়েক বছর থেকে রেশন বীজাগারের সাথেই একটি ছোট্ট দোকান ব্যবসা পরিচালনা করে পরিবার পরিজনদের জন্য জীবিকা সংগ্রহের পাশাপাশি রেশম বীজাগার জামে মসজিদে সেচ্ছায় খাদেমের দ্বায়িত্ব পালন করে আসছেন লালন হোসেন ।
অভিযোগ সূত্রে জানাযায়, সারাদিন রোজা রাখার পর তারাবির নামাজ আদায় শেষে প্রতিদিনের ন্যায় মসজিদ থেকে বের হয়ে রেশম বীজাগারের সামনে আসেন লালন হোসেন। আসা মাত্রই তার দোকানে বাকি খাওয়াকে কেন্দ্র করে পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে মনিগ্রাম ইউপির ৪নং ওয়ার্ড সদস্য মেম্বার বাবুর হুকুমে মীরগঞ্জ গ্রামের এলাহি বকশোর ছেলে রাসেল হােসেন(৩০), খােদা বকশাের ছেলে কাদের(৩০), মৃত আকবর আলীর ছেলে দেলুয়ার(২৮) লোহার পাইপ ও হাতুড়ি দিয়ে মারপিট করে গুরুতর ভাবে আহত করে এবং আহত লালনের চিৎকারে বেশ কিছু মানুষ উপস্থিত হলে সকলের সম্মুখেয় প্রাণে মারার হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে চলে যায় আসামি দয় ।
অভিযুক্তদের বিষয়ে স্থানীয়দের থেকে জানতে চাইলে মারপিটের ঘটনার পাশাপাশি পাওয়া যায় অপরাধ জগতের বেশ কিছু তথ্য ও অভিযোগ। রাসেল আনুমানিক ১৫ দিন আগে দীর্ঘ তিন মাস মাদক মামলায় জেল খেটে এসেছে। তিনি ২৫০ বোতল ভারতীয় মাদক দ্রব্য ফেন্সিডিল ও ৫০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট সহ আটক হয়েছিল। ইয়াবা,হেরোইন,ফেন্সিডিলের মত মরণ নেশা দ্রব্যে প্রতিনিয়ত সেবনের পাশাপাশি ক্রয়-বিক্রয়েরও অভিযোগ রাসেল, কাদের ও দেলোয়ারের বিরুদ্ধে এলাবাসীর।এলাকাবাসী দের মতে তারা চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। লালনের ছোট দোকান। সেখানে মাত্র ১৫০ টাকা বাকি খেয়ে অশিকার করে,আবার তাকেই মারপিট করা একজন মাদকাসক্ত নষ্ট মস্তিষ্কের মানুষ ছাড়া সম্ভব না বলে দাবী স্থানীয়দের।
মারপিটের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সাগর আলী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। সেই সাথে সবার উদ্দেশ্যে জানতে চান। একজন জনপ্রতিনিধি কিভাবে নিজে ঘটনার সময় উপস্থিত থেকে মারপিট করার হুকুম দিতে পারেন?
তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, আমাদের ইউপি নির্বাচন হয়েছে আনুমানিক দুই থেকে আড়াই বছর আগে। ৪ নং ওয়ার্ডের মেম্বার হয়েছেন বিএনপি নেতা বাবু। আর সেই থেকে শুরু হয়েছে বিরোধী প্রার্থীর লোকজনের ওপর অন্যায় অত্যাচার সহ বিভিন্ন প্রকার ভয় ভীতি দেখানো। ভোটের পর থেকে এখন পর্যন্ত সহ্য করতে হচ্ছে তার এই আচরণ। সে একজন জনপ্রতিনিধি হয়ে এলাকার বিভিন্ন মাদক ব্যবসায়ী ও অপরাধীদের বাঁচাতে সুপারিশ নিয়ে যান থানা সহ বিভিন্ন স্থানে। দেইনা তার আপন বোনের পৈতৃকসূত্রে পাওয়া জমির অংশ। সেই বোনকে মারধর সহ হুমকি ধামকি দেই সব সময়। এমনকি বোনের মেয়ে জামাই কেও অপমান অপদস্ত করার পাশাপাশি ভয়-ভীতি দেখায় মেম্বার বাবু। গত বছর রোজার মাসে থানায় অভিযোগ ও করেছিল তার বোন।
এ বিষয়ে মেম্বার বাবু বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। গত নির্বাচনে সোহেল এর বিপরিতে ভোট করে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছি। সাম্প্রতিক সে অবৈধ ভাবে মাটি কাটছিল, জনগণের স্বার্থে জনগণদের সাথে নিয়ে আমি বাধাপ্রদান করি এটাই মূল কারণ। ষড়যন্ত্র করে তারা আমার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেছে।
তিনি আরো বলেন, চেয়ারম্যান সাহেবের সাথে কথা বলে দুই পক্ষের মধ্যের সমস্যা সমাধানের কথা চলছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই ( নিঃ) মোঃ তৈয়ব আলী বলেন, দুই পক্ষের অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। সেই সাথে নতুন করে ঝামেলা সৃষ্টি যেন না হয় সেই বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।