আগামী সপ্তাহে ভারতে আসছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। উদ্দেশ্য— ভারতের সঙ্গে পাঁচ হাজার কোটি পাউন্ডের বাণিজ্যচুক্তি পাকা করা। কোভিড-নিয়ম ভেঙে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে একাধিক মদের আসর বসিয়ে মুখ পুড়েছে বরিসের। এখন তাঁর চেষ্টা, কী ভাবে দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করে নিজের ভাবমূর্তি রক্ষা করা যায়। সেই লক্ষ্যেই আগামী এক বছরের মধ্যে ভারতের সঙ্গে একটি মুক্ত বাণিজ্যনীতি বাস্তবায়িত করা এবং ২০৩০-এর মধ্যে বর্তমান ভারত-ব্রিটেন বাণিজ্য দ্বিগুণ করতে মরিয়া ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী।
কোভিড আইন ভেঙে ১০, ডাউনিং স্ট্রিটে একাধিক পার্টিতে অংশ নেওয়ার পরে জনসনের ইস্তফার বিরোধীরা তো বটেই, সরব হয়েছেন তাঁর নিজের দলের এমপিরা। সম্প্রতি আয়কর নিয়ে প্যাঁচে পড়েছেন ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনক। তিনি প্রধানমন্ত্রীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ, ফলে পরোক্ষে চাপ বেড়েছে বরিসের উপরে।
ব্রেক্সিট-পরবর্তী ব্রিটেনে অর্থনীতি নিয়ে আগে থেকেই চাপে ছিলেন বরিস জনসন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্যনীতির পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে ব্রিটেন এখন ভারতের সঙ্গে নতুন বাণিজ্যনীতি করতে খুবই আগ্রহী। গত জানুয়ারিতেই দিল্লি এসেছিলেন ব্রিটেনের বাণিজ্যমন্ত্রী অ্যান-মারি ট্রেভেলিয়ান। ব্রিটেনে তৈরি গাড়ি ও স্কচ হুইস্কি আমদানিতে ছাড় দিক নয়াদিল্লি, এই আর্জি নিয়ে কথাবার্তা চালান তিনি। বরিস জনসন অনেক দিন ধরেই বলে আসছেন, ভারতে স্কচ হুইস্কির ভাল বাজার রয়েছে।
সূত্রের খবর ২২ এপ্রিল ভারতে এসে পৌঁছবেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী-সহ কেন্দ্রীয় সরকারের শীর্ষ মন্ত্রী ও আমলাদের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা রয়েছে তাঁর। বরিস এসে আবার এই সব প্রসঙ্গ তুলবেন। উল্টো দিকে, ভারতের পক্ষ থেকে ব্রিটেনের কাছে ভিসা ফি কমানো এবং আরও কাজের ভিসা দেওয়ার দাবি জানানো হবে। এখন ব্রিটেনে পাড়ি দেওয়া ভারতীয় পড়ুয়া ও কর্মীদের প্রায় দেড় লক্ষ টাকা দিয়ে ভিসার
আবেদন জানাতে হয়। অনেক দিন ধরেই সেই ফি কমানোর জন্য লন্ডনের কাছে আর্জি জানাচ্ছে নয়াদিল্লি। ব্রেক্সিট-পরবর্তী ব্রিটেনে কর্মীর অভাব মেটাতে ভারত থেকে অদক্ষ ও দক্ষ কর্মী নিয়ে যেতে আগ্রহী বরিস প্রশাসন। যদিও এতে সায় নেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি পটেল ও কনজ়ারভেটিভ দলের অনেক প্রবীণ নেতার। ভারত থেকে আর অভিবাসীর সংখ্যা বাড়াতে আগ্রহী নন তাঁরা। ফলে সে দিক থেকেও চাপে রয়েছেন বরিস জনসন।
সূত্রঃnewslive24