লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধিঃ-
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরবাদাম পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন জসিম এক প্রবাসীর ১৭টি মহিষ জিম্মায় রাখার নামে আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে ভূক্তভোগী সৌদি প্রবাসী আবদুল ওদুদ মহিষগুলো ফেরত পেতে সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন। ওদুদ উপজেলার আলেকজান্ডার ইউনিয়নের সুজন গ্রামের বাসিন্দা। চেয়ারম্যান জসিম চরবাদাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি।
থানা পুলিশ সূত্র জানায়, ওদুদ সৌদি প্রবাসী। ২০১১ সালে ৫টি গরু ও ৮ টি মহিষ কিনে ওদুদ তার শশুর চরআলগী ইউনিয়নের চর নেয়ামত গ্রামের নুর মোহাম্মদের কাছে গরু-মহিষগুলো লালন-পালন করতে দেন। ২০১৯ সালে তিনি দেশে ফিরে আসেন। ৯ বছরে গরু ও মহিষগুলোর বাচুর জন্ম নেয়। এতে বৃদ্ধি পেয়ে ৭টি গরু ও ২০ টি মহিষ হয়। দেশে ফেরার পর গরু ও মহিষগুলো চাইলে ওদুদের শশুর দিতে অস্বীকার জানায়। এতে ২০২১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি তিনি (ওদুদ) বাদী হয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (রামগতি) আদালতে মামলা দায়ের করেন। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহিদুল ইসলাম মামলাটি তদন্তের জন্য রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়। এর অনুলিপি চরবাদামের ইউপি চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন জসিমকেও দেওয়া হয়।
সূত্র জানায়, ২৪ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও রামগতি থানার উপ-পরিদর্শক মজিবুর রহমান তফাদার ১৭ টি মহিষ ও ৫টি গরু নুর মোহাম্মদের কাছ থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। একই বছরের ৪ মার্চ তিনি গরু উদ্ধারের পর মহিষ ও গরুগুলো লালন-পালনের জন্য চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেনের জিম্মায় রাখা হয়। এনিয়ে ওইদিন তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে প্রতিবেদনও দাখিল করেন। আদালতের নির্দেশে গত ৮ ডিসেম্বর চেয়ারম্যান জসিম ৫ টি গরু ওদুদকে ফেরত দেন। কিন্তু মহিষগুলো ফেরত দেননি। প্রায় ১০ লাখ টাকা মূল্যের মহিষগুলো ফেরত দিতে চেয়ারম্যানকে ১৯ ডিসেম্বর লক্ষ্মীপুর জজ আদালতের আইনজীবী মুহাম্মদ রহমত উল্যাহ বিপ্লব লিগ্যাল নোটিশ পাঠায়। এরপর দু’বার পুলিশ ওই চেয়ারম্যানকে মহিষগুলো ফেরত দিতে নোটিশ করেন। কিন্তু তিনি তা কর্ণপাত করছেন না। সবশেষ চলতি বছর ৩১ মার্চ মহিষগুলো ফেরত দিতে আদালতের আদেশক্রমে এসআই মজিবুর রহমান ফের নোটিশ দেয়। এতেও চেয়ারম্যান মহিষগুলো ফেরত দেয়নি।
আবদুল ওদুদ জানায়, একের পর এক সময় দিয়েও চেয়ারম্যান আমার মহিষগুলো ফেরত দিচ্ছে না। তিনি হয়রানি করছেন। আমি মহিষগুলো ফেরত চাই।
আবদুল ওদুদের মেয়ে জামাই জুলফিকার আলী চৌধুরী জানান, নুর মোহাম্মদ চেয়ারম্যান জসিমের লোক। জিম্মায় রাখার নামে চেয়ারম্যান মহিষগুলো আত্মসাত করেছেন। এজন্য তিনি মহিষগুলো ফেরত দিচ্ছে না।
চরবাদাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন জসিম বলেন, আদালতের আদেশ মানতে আমি প্রতিনিয়ত চেষ্টা করছি। কিন্তু মহিষগুলো চর থেকে আনা এখনো সম্ভব হয়নি। দ্রুত সময়ের মধ্যে মহিষগুলো হস্তান্তরের চেষ্টা করছি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও রামগতি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মজিবুর রহমান তপাদার বলেন, নোটিশ করা সত্ত্বেও চেয়ারম্যান মহিষগুলো বুঝিয়ে দিচ্ছে না। তিনি কালক্ষেপন করছেন। দ্রুত মহিষগুলো ফেরত পেতে আদালতে ফের প্রতিবেদন দাখিল করবো।