আকাশ আহমেদ, (নওগাঁ) জেলা প্রতিনিধিঃ
আর মাত্র কয়েকদিন পরই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ইদুল ফিতর। তাই ইদে অবশ্যই সবার নতুন কিছু চাই। যার কারণে ইদ ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতাদের উপস্থিতিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে নওগাঁর পোশাক, জুতাসহ কসমেটিকের দোকানগুলো। বেচাকেনা জমে ওঠায় ইদ উৎসবের রং লেগেছে নওগাঁর বিপণী বিতানগুলোতে। কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করছে ক্রেতারা।
দীর্ঘ দুই বছর পর স্বাভাবিক কেনাকাটা করতে পারছেন মানুষ। করোনার বিধিনিষেধ থাকায় বিগত দুই বছরে কেনাকাটা করলেও সেটি ছিল নানা নিয়মের বেড়াজালে। উৎসবের রং ছিল না সেই কেনাকাটায়। এবার বিধিনিষেধ না থাকায় উৎসাহ নিয়ে মার্কেটে ছুটছেন সবাই।
ইসলামপুর রোডে জলিল গার্মেন্টসের বিক্রয় কর্মী লালু বলেন, বৈশাখের আগে থেকেই মানুষের আনাগোনা বেড়েছে। হয়তো করোনার সময়ে মন খুলে কেনাকাটা, ঘুরে দেখতে পারেনি। আবার অনেকেই ভিড় এড়াতে আগে শুরু করেন। এবার শুরু থেকেই ভিড় দেখা যাচ্ছে। শেষের দিকে হয়তো চাপ কমে যাবে। প্রতিটি ছুটির দিন লোকে লোকারণ্য হয়ে যাচ্ছ শপিংমল ও মার্কেটগুলো।
নওগাঁ জেলা গার্মেন্টস খুচরা বিক্রেতা মালিক সমিতি সভাপতি আলহাজ্ব মোহাম্মদ নাসির হোসেন চৌধুরী বাপ্পী বলেন, এবার একটু আগে কেনাকাটা করছে মানুষ এটা ঠিক। বিষয়টি আমার ব্যবসায়ীদের জন্য খুবই আশার খবর। করোনায় যে দুটো বছর চলে গেছে সেটির ক্ষতি হয়তো পোষাতে পারবো না, তবে কেনাকাটায় মানুষের আগ্রহ যে ভিড় দেখছি এটিতে এখন পর্যন্ত আমরা খুশি।
নওগাঁর পুরাতন সোনালী ব্যাংক রোডে মানুষের ভিড় সামাল দিতে কিছুক্ষণ পরপর প্রবেশ পথ বন্ধ রাখতে দেখা যায়। তুলাপট্টি রোড দুপুরের পরই হয়ে উঠে জনসমুদ্র। গীতাঞ্জলি, দেওয়ান বাজার, আসমান বিগ বাজার, শিলামনি, সেবা প্লাজা, মফিজ মার্কেট, ক্রিসেন্ট মার্কেটে মানুষের চাপে হিমশিম খেয়েছে দায়িত্বরত মার্কেটের নিরাপত্তাকর্মীরাও। তবে এবার তরুণ-তরুণীদের ব্যাপক ভিড় দেখা গেছে বিভিন্ন এলাকায়। মার্কেটের এক পথ দিয়ে প্রবেশ করে অন্য পথ দিয়ে বের হতেই ঘণ্টা চলে যাচ্ছে।
তবে নওগাঁর অভিজাত বিপনী বিতান কাজীর মোড়ে অবশ্য তেমন একটা ভিড় দেখা যায়নি। কাজীর মোড়ে অবস্থিত দর্জিবাড়ি ব্যান্ডের বিক্রয়কর্মী বলেন, আমাদের এই এলাকাগুলোতে নির্দিষ্ট দিনে ভিড় বেশি হয় এমন নয়। অভিজাত এলাকার মানুষও সৌখিন, যখন মন চায় তখনই আসে। বৈশাখের আগে কিছু কেনাকাটা হয়েছে, আবার ২০ রোজার পর বেশি হবে জানান। অভিজাত এলাকা বাদে অন্য এলাকাগুলোতে প্রতিদিনই ভিড় দেখা যাচ্ছে মানুষের। ইতোমধ্যেই মার্কেটের সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল করা হয়েছে। অর্থাৎ ইদের আগ পর্যন্ত মার্কেটে আর সাপ্তাহিক বন্ধ থাকবে না।
নওগাঁ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি ইকবাল শাহরিয়ার রাসেল বলেন, সব মার্কেটেই সাপ্তাহিক বন্ধ ইদের আগে আর থাকবে না। নওগাঁয় মার্কেট ও দোকানপাট সকাল ১০টা থেকে চালু হয়ে রাতে বন্ধ করতে ১১টা ১২টা বেজে যাচ্ছে।
জেলা পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান মিয়া বলেন, ইদ মার্কেটকে ঘিরে যেন শহরে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি না হয় সেজন্য বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে অতিরিক্ত ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়াও ক্রেতারা যেন শান্তিপূর্ণভাবে কেনাকাটা করতে পারে তার শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতেও অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। আমি আশাবাদী ক্রেতা এবং বিক্রেতারা শান্তিপূর্ণ ভাবেই ইদের মার্কেট শেষ করতে পারবেন।