মোঃ সাহানুর ইসলাম
একজন স্বপ্নবাজ তরুণ শুভংকর বিশ্বাস। লড়ছে জীবন যুদ্ধে, বেঁচে থাকার যুদ্ধে।
মানবতার ফেরিওয়ালা এই শুভঙ্করের বাড়ি যশোরের বাঘারপাড়ায়।
ছোটবেলা থেকে শুভঙ্কর ছিল খুব মেধাবী।
উচ্চ মাধ্যমিক পড়াশোনা শেষ করে ভর্তি হন বাংলাদেশের প্রথম সারির একটি বিশ্ববিদ্যালয় ইবিতে।
শুভংকর বিশ্বাস ইবির ২০০৭-০৮ ব্যাচের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের একজন ছাত্র। পড়াশোনা শেষ করে কর্মসংস্থান হিসেবে যোগদান করেন ঢাকার NRBC ব্যাংকে। এর পাশাপাশি তিনি প্রতিষ্ঠা করেন Sellfishbd নামের একটি অনলাইন অফলাইন ভিত্তিক মাছের প্রতিষ্ঠান। যার মধ্য দিয়ে কর্মসংস্থান তৈরি হয় অনেক বেকার যুবকের।
আর Sellfishbd'র লভ্যাংশের কিছু অংশ চলে যেত পথশিশুদের জন্য।
সব কিছু সুন্দর ঠিকঠাক চলছিল।
২০২১ সালের নভেম্বরের মাঝামাঝি হঠাৎ করেই শুভ অসুস্থ হয়ে পড়লে ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়ে, বিভিন্ন পরিক্ষা নিরীক্ষা করে ১৮ জানুয়ারী ২০২২-রিপোর্টে ধরা পড়ে ব্রেন টিউমার।
আর তাতেই মাথার উপর আকাশ ভেঙ্গে পড়ে শুভংকরের পরিবারের উপর। খুব দ্রুত রোগীর অবস্থার অবনতি হতে থাকলে উন্নত চিকিৎসার জন্য, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জন বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. রাজিউল হক ভারতের দিল্লিতে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।
সব বাঁধা মাড়িয়ে ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২২- দিল্লির হরিয়ানার মেডানটা-ডি মেডাসিটি নামের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে শুভংকরের সার্জারী সম্পন্ন হয়। বায়োপসি রিপোর্ট হাতে আসলে ঘটনার মোড় নেয় অন্যদিকে। রিপোর্টে ক্যান্সারের জীবানু ধরা পড়েছে বলে জানা যায়। এইদিকে চিকিৎসারত ডাক্তাররা তার জীবনের আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিল। তবে শুভংকর যেন হেরে যাওয়ার পাত্র নন। বিস্ময়করভাবে তার সচেতন স্বাভাবিক জ্ঞান ফিরে আসলে ডাক্তাররা সুস্থ হবার আশ্বাস দেন।
ভিসা জটিলাতায় ৬ বছরের সৌমিতার যাওয়া হয়নি বাবার সাথে। ভিসার জটিলতা কাটিয়ে বাবাকে দেখতে তাই বাংলাদেশ থেকে ছুটে এসেছে সৌমিতা। বাবাকে কাছে পেয়েই যেন ঝাপিয়ে পড়েছে বাবার বুকের মধ্যে। শক্ত করে জড়িয়ে ধরেছে সে বাবাকে। যেন কেউ তার বাবাকে আর ছুঁতে না পারে। বাবা মেয়ের এমন ভালোবাসার বন্ধন কাদিয়েছে উপস্থিত সবাইকে।
ইতিমধ্যে তার ২৯ টি রেডিওথেরাপি সম্পন্ন হয়েছে। বাকি রয়েছে আর মাত্র ১ টি। এরপর দীর্ঘ ১ বছর ধরে চলবে কেমোথেরাপী।
এরিমধ্যে শেষ হয়েছে প্রায় ১৮ লক্ষাধিক টাকা। প্রথমদিকে পারিবারিক ভাবে তার ব্যয়ভার বহন করার প্রচেষ্টা ছিল।কিন্ত এখন তার পরিবার নিঃস্বপ্রায়। চিকিৎসা শেষ করতে এখনও আনুমানিক ১৬-১৭ লক্ষ টাকার প্রয়োজন।
আপনাদের সহযোগিতা পেলে হয়ত এই আকাশ সমান বাঁধা মাড়ানো তার পরিবারের পক্ষে সম্ভব হবে। আর তাতেই বেঁচে যেতে পারে একজন ভবিষ্যতের বাংলাদেশে।