বিকাশ রায় বাবুল, নীলফামারী প্রতিনিধি:
দেশের সর্ব উত্তরের জেলা নীলফামারীর ডোমার উপজেলায় চলছে বোরো ধান ঘরে তোলার মৌসুম। ধানকাটা শ্রমিকের চরম সংকটের মধ্যেও ধান সংগ্রহে কৃষক কৃষাণীর চলছে মহাউৎসব।
অসময়ে বৃষ্টিপাত, শিলা বৃষ্টির প্রবনতা ও বোরো ধান ক্ষেতে বিভিন্ন রোগের নমুনা দেখা দেওয়ায় আগাম ধান কাটা শুরু করেছে উপজেলার কৃষকরা।
গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ধানের মাঠে ধান কাটার ব্যস্ততায় নি:শ্বাস নেওয়ার ফুসরত নেই তাদের। সূর্যদয় হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত চলছে ধান কাটা ও ধান মাড়াইয়ের কাজ।
তবে কৃষক ধান কাটা নিয়ে পড়েছে চরম বিপাকে। তারা ধান কাটার শ্রমিক পাচ্ছে না। উপজেলার বেশিরভাগ শ্রমিক দেশের দক্ষিণাঞ্চলে ধান কাটার জন্যে অবস্থান করায়, উপজেলায় বর্তমানে শ্রমিকের সংকট চরমে। প্রতি বিঘা (৩৩শতক) চুক্তি ভিত্তিক সাড়ে ৩ হাজার টাকা হতে ৪ হাজার ধান কর্তন করা হচ্ছে। যাহা গত বছরের তুলনায় দ্বিগুন মূল্যে দিয়ে ধান কাটা হচ্ছে। তবুও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না।
বোড়াগাড়ী ইউনিয়নের কৃষক নুরল ইসলাম জানান, শ্রমিক পাচ্ছি না। কষ্ট করে ৪/৫ জনের একটি দল পেয়েছি। সাড়ে ৩ হাজার টাকা বিঘা দরে চুক্তিভিত্তিক ধান কাটতে দিয়েছি এবং ধান মাড়াই বাবদ আরো বিঘা প্রতি ৫শত টাকা ব্যয় করতে হবে। তাছাড়াও ধান শুকানো ও গরুর খাদ্য সংগ্রহে খড় শুকানোর বাবদ শ্রমিক ও বাড়তি টাকা ব্যয় করতে হবে।
সোনারায় এলাকার কৃষক নীলকান্ত ও পাশ্ববতী
পলাশবাড়ী এলাকার কৃষক নরেশ চন্দ্র রায় বলেন, এলাকার পুরুষ কৃষকরা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কাজের সন্ধানে যাওয়ায় ও নারী শ্রমিকরা ইপিজেডসহ নানা রপ্তানী মূখী শিল্প কারখানায় কাজ করায় শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। যদিও স্বল্প সংখ্যক শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে, তাদেরকে দিতে হচ্ছে দ্বিগুন মজুরী। ফলে পরিবারের লোকজন দিয়ে ধান সংগ্রহের আপ্রান চেষ্টা করা হচ্ছে।
হরিনচড়া ইউনিয়নের শালমারা গ্রামের কৃষক স্বপন রায় বলেন, আমি ৭বিঘা জমিতে জিরা ও হাইব্রিড বোরো ধান লাগিয়েছি, ফলনও ভালো হয়েছে। প্রতিবিঘায় আনুমানিক ২২ থেকে ২৫মন পাওয়ার আশা করছি। কিন্তু ধান কাটার শ্রমিক পাওয়া না যাওয়ায় খুব বিপাকে পরেছি। এজন্য পরিবারের লোকদের নিয়ে ধান কাটতে শুরু করেছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবীদ আনিছুজ্জামান বলেন, আবহাওয়ার কারনে এবারে কৃষকদের দ্রুত সময়ে বোরো ধান সংগ্রহ করার পরামর্শ দিয়েছে কৃষি বিভাগ। উপজেলায় ১৩ হাজার ২শত ৩০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ করা হয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে। ফসল ঘরে তোলার ব্যপক চেষ্টা চালানো হচ্ছে