নিজস্ব প্রতিবেদক :
তিন বছর বয়সের ছোট্ট জান্নাতুল। তার বাবা আব্দুল কাদের দরিদ্র কৃষক। মা গৃহিনী নাজমা খাতুন। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের মতে, শিশুটি বিরল রোগে আক্রান্ত। উন্নত চিকিৎসার অভাবে অনেকদিন বাড়িতে বিছানায় কাতরাচ্ছে।
দ্রুত এই পরিবারের পাশে দাঁড়ালে হয়তো ফুটফুটে এই শিশুকন্যাটি স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবে।
শিশুটি শরীরের গঠন অনুযায়ী মাথার আকৃতি অনেক বড় হওয়ায় হাঁটাচলা করতে পারে না। জন্মের পর থেকেই বিছানায় শুয়ে থাকে ও দু’চোখ দিয়ে শুধু তাকিয়ে থাকে। শিশুটির অভিভাবক দরিদ্র কৃষক হওয়ার কারণে চিকিৎসা করাতে পারছে না। সরকারিভাবে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হলে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবে শিশু জান্নাতুল।
জানা গেছে, পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার গৌরীগ্রামের আব্দুল কাদের ও নাজমা খাতুন দাম্পত্য জীবনে তিন সন্তানের জননী। তিনটি সন্তানের মধ্যে দুইটি শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী।
এর মধ্যে ছোট মেয়ে জন্ম থেকেই রোগে আক্রান্ত। সাধারণ মাথার চেয়েও বেশ কয়েক গুন বড় আকৃতির মাথা।
করোনার অতিমারির শুরুতে সিজারের মাধ্যমে জন্ম নেয় শিশুটি। হতদরিদ্র কৃষক পরিবারের সন্তান জান্নাতুলের বয়স দুই বছর ৬ মাস হলেও এখনো অন্যান্য শিশুদের মতো হাঁটাচলা করতে পারে না, বিছানায় কাটে দিন ও রাত।
টাকার অভাবে উন্নত চিকিৎসা করাতে পারছে তারা। এর ফলে দিনদিন শিশুটির মাথার আকৃতি আরো বড় হতে চলেছে। বাবা কৃষক আব্দুল কাদের তার শেষ সম্বলটুকু দিয়ে চিকিৎসা করিয়েও কোন প্রতিকার পাননি। শিশু জান্নাতুল ফেরদৌসের সরকারিভাবে উন্নত চিকিৎসা করার দাবি এলাকাবাসি ও পরিবারের সদস্যদের ।
আব্দুল কাদের ও নাজমা খাতুন দাম্পতির প্রথম সন্তান নাবিল (১০) জন্ম থেকেই সে শারীরিক প্রতিবন্ধী। জন্মের পর থেকেই তার পেছনে অনেক টাকা খরচ করেছে বাবা মা। সে খরচের হিসাব শেষ হতে না হতেই তাদের ঘরে নতুন অজানা রোগ নিয়ে আসে জান্নাতুল।
জান্নাতুল মায়ের গর্ভে আসার পর থেকেই সুষ্ঠ, সুন্দর সন্তানের আশায় বুক বাঁধে বাবা- মা। যখন জানতে পারে ছোট সন্তানটির বিরল রোগে আক্রান্ত তখন থেকেই দুচোখে অন্ধকার দেখে পরিবারটি।
জান্নাতুলের বাবা আব্দুল কাদের ও মা নাজমা খাতুন কান্না করে বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আকুল আবেদন করছি। তিনি আমার বাচ্চা জান্নাতুলের চিকিৎসার ব্যবস্থা করলে আমার মেয়ে সুস্থ হয়ে যাবে। তারা আরও বলেন, দুই প্রতিবন্ধী শিশুর আর্থিক খরচ বহন করার মতো ক্ষমতা আমাদের নেই। যেটুকু অর্থ সম্পদ ছিল তা শেষ হয়ে গেছে।
আমরা এখন আর্থিক সংকটে ভুগছি। বড় ছেলে নাবিলকে নিয়মিত ওষুধ সেবনের পরামর্শ দিয়েছিলেন সিআরপি’র ডাক্তারা। আমরা অর্থের অভাবে ওষুধ সেবন করাতে পারছি না।
এ বিষয়ে সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম জামাল আহমেদ বলেন, আমরা এই সকল প্রতিবন্ধী শিশুদের পাশে থেকে তাদের সার্বিক সহযোগিতা করবো।
পাবনার সিভিল সার্জন ডা. মনিসর চৌধুরী বলেন, এই বাচ্চাটি হাইড্রোক্যাফালাস রোগে আক্রান্ত। যেসব শিশুরা স্বাভাবিক শিশুর চেয়ে অন্যভাবে জন্মগ্রহণ করে অথবা যাদের প্রতিবন্ধীতা আছে, তারা আমাদের স্বাস্থ্য বিভাগের দ্বারস্থ হলে আমরা তাদের সমস্ত সহযোগিতা করি।
Leave a Reply