এস আর,সোহেল রানা,তানোর(রাজশাহী) প্রতিনিধিঃ
রাজশাহীর চারঘাটে পল্লী চিকিৎসক আব্দুল মান্নান (৭০) কে গলা কেটে হত্যাকাণ্ডের ২৭ দিন পেরিয়ে গেলেও খুনের রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। দীর্ঘ সময়েও চিকিৎসক হত্যাকাণ্ডের মামলার অগ্রগতি না হওয়ায় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছে নিহত মান্নানের পরিবার।
এদিকে চারঘাট থানা পুলিশ বলছেন, চিকিৎসক আব্দুল মান্নানের হত্যাকাণ্ডটি অতিগুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে মামলার এজাহার নামীয় আসামি রবিউল ইসলামকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে হত্যাকাণ্ডের আসল রহস্য উদঘাটন করা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ।
স্থানীয় গ্রামবাসী ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, নিহত আব্দুল মান্নান পেশায় একজন পল্লী চিকিৎসক ও ওষুধ ব্যবসায়ী। উপজেলার শলুয়া ইউনিয়নের মালেকার মোড়ে তার একটি ওষুধের দোকান রয়েছে। এছাড়া কানুজগাড়ী নিজ বাড়ির অদূরে নিহত আব্দুল মান্নান আলীর একটি কলাবাগান ও বেগুনের জমি রয়েছে। কলা ও বেগুনে পোকা দমনের জন্য তিনি মাঝে মধ্যে কীটনাশক প্রয়োগ করতে জমিতে যেতেন।
ঘটনার দিন গত ২২ এপ্রিল ইফতারের আগে নিজ বাড়ি থেকে ইফতারসামগ্রী নিয়ে ওই বাগানে কীটনাশক প্রয়োগ করতে যান মান্নান আলী। এর পর সন্ধ্যা গড়িয়ে এশার নামাজের সময় পেরিয়ে গেলেও চিকিৎসক মান্নান বাড়িতে ফিরে না আসায় পরিবারের লোকজন তাকে খুঁজতে বের হন। পরে রাত ৮টার দিকে তার নিজ জমির বেগুনক্ষেতে একটি গর্তের মধ্য থেকে আব্দুল মান্নানের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়।
এদিকে হত্যাকাণ্ডের এ ঘটনায় নিহতের বড় ছেলে মাহিম হোসেন লিমন বাদী হয়ে চারঘাট মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পরে ঘটনার ওই রাতেই এজাহারনামীয় আসামি ওই এলাকার আব্দুর রশিদের ছেলে রবিউল ইসলামকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করা হয় একই গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক আলীর ছেলে লিটন আলীকে। পরে দুজনকেই ঘটনার পরের দিন শনিবার দুপুরের দিকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়।
এ ঘটনায় পুলিশ এজাহারনামীয় আসামি রবিউল ইসলামকে তিন দিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
এদিকে বিষয়টি সম্পর্কে নিহতের বড় ছেলে মামলার বাদী মাহিম হোসেন লিমন বলেন, হত্যাকাণ্ডের ২৭ দিন পেরিয়ে গেলেও আমার বাবা হত্যার রহস্য এখনও উদঘাটন হয়নি। আমরা চরম হতাশা ভুগছি। আমার বাবার তেমন কোনো শত্রু না থাকলেও কে বা কারা কেন আমার বাবাকে এভাবে হত্যা করল! আমরা তো কোথাও কারও সঙ্গে কখনও বিরোধে জড়াইনি। এরপরেও কেন এ হত্যাকান্ডের শিকার হলো আমার বাবা। আমরা কি আমার বাবার খুনের বিচার আদৌ পাবো?
বিষয়টি সম্পর্কে চারঘাট মডেল থানার ওসি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেফতারকৃত রবিউলকে তিন দিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এখনও তার কাছ থেকে তেমন কোনো রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হয়নি। তবে মামলাটি অতিগুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে তদন্ত করা হচ্ছে। আশা করি এ ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকবে তাদের গ্রেফতারপূর্বক হত্যাকাণ্ডের রহস্যও উন্মোচন সম্ভব হবে। বিভিন্ন ভাবে হত্যা রহস্য উদঘাটন করার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে একটি টিম কাজ করছে বলেও জানান ওসি জাহাঙ্গীর আলম।
Leave a Reply