নিজস্ব প্রতিবেদক :
যশোরে র্যাবের অভিযানে দুই মেট্রিক টন সিলিকন জেলযুক্ত চিংড়ি উদ্ধার হয়েছে। পরে সেখানে মৎস্য অধিদপ্তর খুলনার সহযোগীতায় ভ্রম্যমান আদালতের মাধ্যমে দুই মেট্রিকটন চিংড়ি উদ্ধার সহ ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
বৃহস্পতিবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে যশোরের র্যাব সদস্যরা শহরের বাহাদুরপুরে অভিযান চালিয়ে চিংড়িভর্তি তিনটি ট্রাক জব্দ করেন।অভিযানের বিষয়ে র্যাব ৬ যশোর ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার এম নাজিউর রহমান বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি খুলনার ডুমুরিয়া ফুলতলা শাহাপুর থেকে তিন ট্রাক সিলিকন জেলযুক্ত চিংড়ি ঢাকা কাওরান বাজার ও আব্দুল্লাহপুর যাচ্ছে।
এমন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাবের একটি চৌকস দল ছায়া তদন্ত শুরু করে। পরে ট্রাক তিনটি শহরের বাহাদুরপুর যশোর- মাগুরা মহাসড়কে আসলে ট্রাকসহ ড্রাইভারকে আটক রেখে খুলনা মৎস্য অধিদপ্তরকে জানানো হয়। পরে তারা এসে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তিন ট্রাক চিংড়ির মধ্যে ৬১ কার্টুনে দুই মেট্রিক টন চিংড়িতে সিলিকন জেলের উপস্থিতি সনাক্ত করে যার বাজার মূল্য প্রায় ১৫ লাখ টাকা। পরে আদলতের মাধ্যমে তিনটি ট্রাকে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
যা চিংড়ির মালিকদের কাছ থেকে আদায় করা হয়েছে। এবং উদ্ধারকৃত চিংড়ি মৎস্য অধিদপ্তরের মান নিয়ন্ত্রন কর্মকর্তার উপস্থিতে বিনষ্ট করা হয়েছে। মৎস্য অধিদপ্তরের মৎস্য পরিদর্শন ও মাননিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা লিপটন সরদার বলেন, আমাদের দেশে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী স্থানীয় বাজারে চিংড়ি সরবারহের জন্য অসাধু উপায়ে ওজন বৃদ্ধি করছে যা আইনগত অপরাধ। আমরা দীর্ঘদিন যাবত এই অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে আসছি তারই ধারাবাহিকতায় ওবং র্যাব ৬ যশোরের সহযোগীতায় এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।
তিনি সিলিকন জেলের ভয়াবহতা সম্পর্কে বলেন, চিংড়ির দেহে যা পুশ করা হচ্ছে তাতে ক্রেতারা শুধু ওজনের দিক থেকে ঠকছেন তা নয়। এসব জেল মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এতে বড় ধরনের রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সে অর্থে এটি ‘স্লো-পয়জনিং’-এর পর্যায়ে পড়ে। অর্থাৎ এসব মাছ ব্যবসায়ী নীরব ঘাতকের ভূমিকা নিয়ে অগণিত মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছেন।
এক কেজি চিংড়িতে ২৫০ গ্রাম জেল পুশ করা হচ্ছে। এতে প্রতি কেজিতে বিক্রেতা ১০০ টাকা বেশি পাচ্ছেন। এসব চিংড়ির প্রায় সবই জেলযুক্ত। ভাতের মাড় ও আরও কয়েক প্রকার কেমিক্যাল ব্যবহার করে বিশেষ ধরনের এই জেল তৈরি করা হয়।
সিরিঞ্জ দিয়ে ওই জেল চিংড়ির মাথায় পুশ করা হয়।মৎস্য পরিদর্শন ও মাননিয়ন্ত্রণ পরিদর্শক আশেকুর রহমান বলেন, চিংড়ি ব্যবহূত এই জেলটি মূলত সিজারিয়ান অপারেশনের পর রোগীর ক্ষত ঢাকতে ব্যবহার করা হয়। যা সিলিকন জেল নামে পরিচিত। কোনো নিয়ন্ত্রণ না থাকায় যে কেউ এগুলো কিনতে পারে। চিংড়িতে ব্যবহূত এসব জেল জীবননাশী। এগুলো মানুষের চোখ, কিডনি নষ্ট করে দিতে পারে। ধীরে ধীরে মানুষ মৃত্যুর দিকে ধাবিত হতে থাকে ।