পিরোজপুর প্রতিনিধি :
সাবেক প্রতিমন্ত্রী মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক নূরুল ইসলাম মঞ্জু’র ২য় মৃত্যুবার্ষিকী কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে বুধবার (২৫ মে) বিকেলে জেলার ভান্ডারিয়া, কাউখালী ও ইন্দুরকানী উপজেলায় বিএনপির আয়োজনে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার বিকেলে আলোচনা সভায় ইন্দুরকানী উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল লতিফ হাওলাদারের সভাপতিত্বে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলার বিএনপির সাবেক সাধারণ হাওলাদার ফাইজুল কবির তালুকদার, উপজেলার ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি শহিদুল ইসলাম। এছাড়াও কাউখালীতে উপজেলার বিএনপির আয়োজনে আলোচনা সভায় উপজেলা বিএনপির সভাপতি এস এম আহসান কবিরের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক এইচ এম দ্বীন মোহাম্মদ সহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। ভান্ডারিয়া উপজেলা বিএনপির আয়োজনে দলীয় কার্যালয়ে মো: জালাল উদ্দিন সিকদারের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা যুবদল নেতা এইচ এম শামিম, পৌর যুবদলের জাহিদুল ইসলাম রনি সহ নেতৃবৃন্দ। আলোচনা সভা শেষে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
পারিবারিক সূত্রে জানাযায়, নূরুল ইসলাম মঞ্জুরের বাড়ি পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার নদমুলা ইউনিয়নের চরখালী গ্রামে। তার বাবা প্রয়াত হেমায়েত উদ্দিন আহমেদ ছিলেন স্যানিটারি ইন্সপেক্টর। বাবার চাকরিস্থল বরিশালে তার জন্ম হয় ১৬ নভেম্বর ১৯৩৭ সালে। তিনি বরিশালের ব্রজমোহন স্কুলে লেখা-পড়া কালে শিশু-কিশোর সংগঠন মুকুল ফৌজের বরিশাল শহর সংগঠক নির্বাচিত হন। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় অংশ গ্রহণ করে কারাবরণ করেন। ১৯৫৪ সালে বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ৫৫ সালে সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৬১ সালে তিনি ইকবাল হল (জহুরুল হক হলের) ভিপি নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৬২ সাল থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত বৃহত্তর বরিশাল আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি ছিলেন।
নূরুল ইসলাম মঞ্জুর মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে ৯নং সেক্টরের বেসামরিক প্রধান ছিলেন। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সদস্য ছিলেন। ১৯৭০ সালে তিনি বরিশাল সদর থেকে এম এন এ (জাতীয় পরিষদ সদস্য) নির্বাচিত হন। ১৯৭৩ সালে বরিশাল সদর থেকে থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি বিএনপিতে যোগদানের পরে ১৯৯৬ সালে পিরোজপুর-২ (ভান্ডারিয়া-কাউখালী) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৯ সালে তিনি জেলহত্যা মামলায় আটক হন। ২০০৪ সালে তিনি খালাস পান। মৃত্যু পর্যন্ত তিনি পিরোজপুর জেলা বিএনপির প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন। তিনি ২০২০ সালের ২৫ মে বার্ধক্য জনিত কারনে মৃত্যুবরণ করেন।
ভান্ডারিয়া উপজেলার বিএনপির সভাপতি আহমেদ সোহেল মঞ্জুর সুমন বলেন, তার বাবা সাবেক এমপি, সাবেক প্রতিমন্ত্রী এবং মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে ৯নং সেক্টরের বেসামরিক প্রধান ছিলেন। তিনি একাধিক বার সংসদ সদস্য ছিলেন সারা জীবন তিনি মানুষের জন্য কাজ করে গেছেন। বিএনপি প্রতিষ্ঠার পর থেকে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সাথে তিনি রাজনীতি করেছেন। মৃত্যুর আগ মূহুর্ত পর্যন্ত তিনি জাতীয়তাবাদী দলের পক্ষে সংগ্রাম করে গেছেন। সকলের কাছে তার জন্য দোয়া কামনা করছি।
জেলা বিএনপির আহবায়ক আলমগীর হোসেন বলেন, নূরুল ইসলাম মঞ্জুর মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে ৯নং সেক্টরের বেসামরিক প্রধান ছিলেন। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেছিলেন। তিনি সাবেক এমপি এবং মন্ত্রী ছিলেন। এই অঞ্চলের উন্নয়নে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তিনি বরিশাল থেকে পিরোজপুরের উন্নয়নের সূচনা করেছিলেন। তিনি জাতীয়তাবাদী শক্তির পক্ষে সবসময় কাজ করে গেছেন। জেল খেটেছেন এবং প্রতিহিংসার স্বীকার হয়েছেন। তিনি জেলা বিএনপির সাবেক উপদেষ্টা ছিলেন তিনি আমাদেও পথ প্রদর্শকও ছিলেন আমরা তার রুহের মাগফিরাত কামনা করি।
পিরোজপুর প্রতিনিধি