মোঃ হানিফ মিয়া , রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি।
শ্রেণী কক্ষে ফ্যান ঘুরবে, সেই ফ্যানের বাতাসের জন্য বিদ্যুৎ বিল গুণতে হবে শিক্ষার্থীদের। ধার্য করা হয়েছে বিদ্যুৎ ফি। প্রতিমাসেই এই ফি দিতে হবে শিক্ষার্থীদের। পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এ নিয়ম চালু করা হয়েছে। মডেল স্কুলে এ যেন মডেল নিয়ম; বলছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জানায়, বিদ্যুৎ বিলের জন্য শিক্ষার্থী প্রতি মাসিক ১০ টাকা ফি ধার্য করেছেন শিক্ষকরা। প্রতিমাসে ১০ টাকা হারে বছরে ১২০ টাকা পরিশোধ করতে হবে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে। ইতোমধ্যে টাকা উত্তোলনও শুরু হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের এ নিয়ম নিয়ে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে সচেতন নাগরিকদের মধ্যে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী জানান, আমরা বেতন-সেশন ফি দেই। এরপরও প্রতিমাসে বিদ্যুৎ ফি চালু করা কতটা যৌক্তিক?
স্কুল কর্তৃপক্ষ বলছেন, রাঙ্গাবালী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৭৮০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এ হিসাব অনুযায়ী শিক্ষার্থীপ্রতি ১০ টাকা হারে প্রতিমাসে ৭ হাজার ৮০০ টাকা বিদ্যুৎ ফি বাবদ আদায় হওয়ার কথা। সে অনুযায়ী বছরে সর্বমোট ৯৩ হাজার ৬০০ টাকা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নিবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। অথচ স্কুল কর্তৃপক্ষই বলছেন, প্রতি মাসে তাদের বিদ্যুৎ বিল আসে এক থেকে দেড় হাজার টাকা। আর বছরে বিদ্যুৎ বিল আসে ১২-১৮ হাজার। এখন প্রশ্ন উঠেছে, বাকি টাকা কোথায় যায় কিংবা কে নিবে?
রাঙ্গাবালী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসির উদ্দিন নেছার বলেন, ‘তিন ভবনে এক-দেড় হাজার টাকা আসে। ৬০টি ফ্যান চলে। বিলটা দিবে কে? বিলটাতো কাউকে না কাউকে পে (পরিশোধ) করতে হবে। আমাদের সরকারি কোন বরাদ্দ নেই। আমার কাছে মনে হয়েছে যেহেতু আমাদের খরচ বাড়তেছে, আমাদেরতো কিছু ইনকাম বাড়া দরকার। বিদ্যুতের লাইন চালু করতে আমাদের প্রায় এক লাখ ১৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এই টাকাটাতো আমাদের ম্যানেজ করতে হবে। তাছাড়া আমাদের লাইন সচল ছিল না।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ বছরের জানুয়ারী থেকে বিদ্যুৎ বিল বাবদ টাকা নেওয়া চালু হয়েছে। আমরা শিক্ষকরা মিলে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা দাবি করছি, ওরাতো (শিক্ষার্থীরা) এখনও দেয়নি। পরীক্ষার্থীরা দিছে হয়তো। প্রয়োজনে আমরা নিব না।’ শিক্ষার্থীদের বেতন-সেশন কিংবা স্কুল ফান্ডের তহবিল থেকে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে পারেন কিনা, এমন প্রশ্নের উত্তরে প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘স্কুল ফান্ডের টাকা স্কুল উন্নয়নে ব্যয় করা হয়।’
এ ব্যাপারে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্বে) মুহা. মুজিবুর রহমান বলেন, ‘ম্যানেজিং কমিটি এ ধরণের সিদ্ধান্ত বা রেজুলেশন নিয়েছে কিনা জানা নেই। বিদ্যুৎ বিল নেওয়ার বিষয়ে ওইভাবে সুনির্দিষ্ট কোন নিয়ম নাই। আমি খোঁজ নিয়ে বিষয়টি দেখবো।