নড়াইল প্রতিনিধিঃ
যশোর-নড়াইল-ঢাকা জাতীয় মহাসড়ক,নড়াইলের রুপগঞ্জ বাজারসহ নড়াইল পৌরসভার সরকারি খাস খতিয়ানের জমি সেটেলমেন্ট অফিসের চিহ্নিত দালাল মোহাম্মদউল্লাহ, যুথিকা রাণী মজুমদারসহ ভূমি দস্যূদের নামে আর এস রেকর্ডের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নড়াইল সেটেলমেন্ট অফিসের দূর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তারা ও ভূমি দস্যূদের যোগসাজসে সরকারি জমি ব্যাক্তির নামে,অন্যের জমি নিজের নামে রেকর্ড করানোর ব অভিযোগ রয়েছে।
নড়াইল সেটেলমেন্ট অফিস সূত্রে জানা যায়,হাল(আর এস) রেকর্ডে ৪৬৫ ও ১৫৫ নং খতিয়ানে সাবেক(এস এ) ২৪৮,২৪৯ ও ২৪৭নং দাগের সরকারি জমি সাবেক আউড়িয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা ও বর্তমান ভওয়াখালী গ্রামের ইফসুফ মোল্যার ছেলে মোহাম্মদউল্লাহ্ ও কুড়িগ্রামের সন্তোষ কুমার আচায্য এর কন্যা যুথিকা রাণী মজুমদারসহ ভূমি দস্যূদের নামে রেকর্ড হয়েছে।
নড়াইল পৌর ভুমি অফিস সূত্রে জানা যায়,কুড়িগ্রাম মৌজায় এস এ ২৪৮,২৪৯ ও ২৪৭ দাগের ৩৩ শতক জমি সরকারি ‘ক’ তপশিলভুক্ত ও সড়ক ও জনপথ বিভাগের নামে রয়েছে।
অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রফেসর মুন্সী হাফিজুর রহমানের জমি নিজ নামে রেকর্ড করেছে মোহাম্মদউল্লাহ।প্রফেসর মুন্সী হাফিজুর রহমানের ছেলে পলাশ সিদ্দিকী জানান,আমি প্রবাসে থাকি,আমার বাবার বয়স হয়েছে তিনি বাসা বাড়িতেই অবসর কাটান।প্রতিনিয়ত জমিজমার বিষয়ে অফিসে গিয়ে খোজখবর রাখা আমার বাবার পক্ষে সম্ভব নয়।এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে আমাদের নামীয় ৩০ শতক জমি মোহাম্মদউল্লাহ তার নামে রেকর্ড করে নিয়েছে।তিনি আরো বলেন মোহাম্মদউল্লাহ সেটেলমেন্ট অফিসে দালালি করে সেই সুবাদে সেটেলমেন্ট অফিসের কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার সহযোগিতায় আমাদের মতো স্বপন কুন্ডুসহ আরো অনেকের জমি সে রেকর্ড করে নিয়েছে।
নড়াইল পৌর ভুমি অফিসের উপ-সহকারি কমিশনার মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন,আমরা সরকারি জমির হাল(আর এস) পর্চাসহ অন্যন্য তথ্যের জন্য সেটেলমেন্ট অফিসে চিঠি প্রেরণ করছি এখনও পর্চাসহ অন্যান্য তথ্য হাতে পাইনি।
মোহাম্মদউল্লাহর সাথে মোবাইলে এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাগজপত্র আছে বলে ফোন কেটে বন্ধ করে দেন।
সদর উপজেলার সহকারি কমিশনার ভূমি মোঃ রুহুল কুদ্দুস বলেন,সরকারি খাস খতিয়ানের জমি আমরা রেজিষ্টারভুক্ত করে সংরক্ষন করি। সরকারি খাস খতিয়ানের জমি রক্ষায় আমরা সর্বাত্নক চেষ্টা করব। সরকারি জমি আত্নসাতের কোন সুযোগ নেই।
নড়াইল সহকারি সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সেলিম হাসানের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন,আমি রেকর্ড কার্যক্রম চলাকালীন সময়ে ছিলাম না।এখন শুধু বিতরন চলছে। কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলে এ সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় কোন সুযোগ থাকলে তিনি প্রতিকার পাবেন।
কুড়িগ্রামের মেঃ শাকিল আহমেদ বলেন,নড়াইল শহরের ভুমি দস্যূরা জমিদারদের বাজোয়াপ্ত জমি দুর্নীতির মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছে।এখন এদের বড় বড় আলীশান বাড়ি,সমাজের অভিজাত শ্রেণীতে চলাফেরা।স্থানীয়
এলাকাবাসী জানান,১৭৯১ সালে নাটোরের রানী ভবানীর রাজ কর্মচারী রুপরাম রায় নড়াইলের জমিদারির পত্তন করেন। রুপরাম রায়ের পুত্র কালী শংকর রায় বর্তমান নড়াইল পৌরসভার কুড়িগ্রাম,নড়াইল,ভাদুলীডাঙ্গা মৌজায় সুরম্য অট্রালিকা,নাট মন্দির,বাগান বাড়ি,খেলার মাঠ,দিঘী খনন,বাধাঘাট,হাতিশালা নির্মাণ করেন।১৯৪৭ সালে নড়াইলে জমিদাররা দেশ ত্যাগের পর জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হলে জমিদারদের রেখে যাওয়া অঢেল সম্পত্তি সরকারি খাস খতিয়ানভূক্ত হয়।নড়াইলের ভুমি দস্যূরা সেই সময় থেকেই এসব সরকারি জমি ভূয়া কাগজপত্রসহ নানা দূর্নীতির মাধ্যমে মালিক বনে যান। যার ধারাবাহিকতা এখনও অব্যাহত রয়েছে।
Leave a Reply