তাওহীদ আল উসামা
অভয়নগরে অপরিকল্পিতভাবে যেখানে সেখানে খনন করা হচ্ছে মৎস্যঘের। এতে যেমন কমে যাচ্ছে কৃষি জমি তেমনি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে পানির অবাধ প্রবাহ। পানির অবাধ প্রবাহ বাধগ্রস্থ হলে কিছু কিছু এলাকায় স্থায়ী জলাবদ্ধতার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এছাড়াও পানির অবাধ প্রবাহ বাধাগ্রস্থ হওয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে দেশীয় নানা প্রজাতির মাছ।
অভয়নগর উপজেলা মৎস্য অফিসের তথ্যমতে দেশীয় নানা প্রজাতির মাছ হারিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বড় নেতিবাচক ভুমিকা রাখছে অপরিকল্পিত মৎস্যঘের। এমতাবস্থায় জনসচেতনতা বৃদ্ধি খুবই জরুরী হয়ে পড়েছে। ঘের খননে মাছের লাভের চেয়ে অনেক বেশী ক্ষতি হচ্ছে কৃষিজীবী ও পরিবেশের। এই সাফল্যই সুদুরপ্রসারী নেতিবাচক প্রভার ফেলেছে কৃষিজীবীদের। শুধুমাত্র অপরিকল্পিত ঘের খননের জন্যই অভয়নগর উপজেলার বিভিন্ন ফসলের মাঠে দেখা দিয়েছে জমির প্রকৃতি পরিবর্তন, দীর্ঘ মেয়াদি জলাবদ্ধতা, ঘেরখননে মাটি বহনে গ্রামীণ রাস্তা নষ্ট, ফসল উৎপাদন ব্যাহত, বিলের পানি বেরুনোর নালা (খাল, ড্রেনেজ) ব্যবস্থা না থাকায় গ্রামের বাড়ি-ঘরে জলাবদ্ধতা, কৃষিজীবীদের মধ্যে বেকারত্ব বৃদ্ধি, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্ঠনী নষ্ট, কৃষিকাজ না থাকায় যুব সমাজ মাদকে আসক্ত হচ্ছে এবং সর্বপরি নগরীতে ভাসমান শ্রমিক বাড়ছে। অপরিকল্পিত মৎস্যঘেরখননের ফলে এসব না সূচক ও নেতিবাচক প্রভাব দেখেও অজানা কারণে নিশ্চুপ আছে প্রশাসন ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ।
অপরিকল্পিতভাবে ঘের খননে জলাবদ্ধতায় প্রতি বছরই ব্যাপক ফসলহানি হচ্ছে। ফসল হানির পরিমান প্রতিবছরই অস্বাভাবিক ভাবে বাড়ছে। পরিবেশের উপর বাড়ছে চাপ। এছাড়াও ফসল রোপনের আগেই ডুবে যাচ্ছে খনন এলাকা। গত কয়েক বছরে অভয়নগরে বাণিজ্যিক মাছের ঘের বেড়েছে আশঙ্কাজনকহারে। মাছের উৎপাদন বাড়ায় একে সাফল্য হিসেবে দেখছে মৎস দপ্তর। গতকাল শনিবার অভয়নগরের কোটা, চলিশিয়া, এক্তারপুরসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় স্কেভেটর দিয়ে মাটি কেটে অপরিকল্পিত ঘের খনন করতে দেখা যায়। জানা যায়, মাছের ব্যবসা তুলনামূলক লাভজনক হওয়ায় এখন একশ্রেণির ঘের ব্যবসায়ী অতিমুনাফার লোভে কৃষিজমি নষ্ট করে ঘের খনন করছে।
বাগদাহ গ্রামের কৃষক আঃ মজিদ জানান, কৃষি জমি থেকে বেশ কয়েকবছর আগে ইট ভাটায় মাটি বিক্রি করলে জমি নিচু হয়ে যায়। এজন্য ধান হতোনা, গত ২ বছর নেট পাটা দিয়ে ঘিরে মাছ চাষ করলেও এবার স্থায়ীভাবে ঘের খনন করছি। অভয়নগর উপজেলা মৎস্য অফিসার ফারুক হোসেন সাগর জানান, অভয়নগরে চাহিদার তুলনায় মাছের উৎপাদন প্রায় ৪গুন বেশি। তারপরও মানুষ অপরিকল্পিতভাবে ঘের খনন করে লাভবান হওয়ার চেষ্টা করছে৷ মাছ চাষ লাভজনক হওয়ায় মানুষ এদিকে ঝুকছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গোলাম সামদানী জানান, অপরিকল্পিত মৎস্যঘের খননের বিপক্ষে আমাদের তেমনকিছু করার নেই। তবে অপরিকল্পিত মৎস্যঘের খননের ফলে আমাদের ফসলি জমি কমে যাচ্ছে। এবং খাদ্য উৎপাদনে দির্ঘ্যমেয়াদী নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।