বিশেষ প্রতিনিধি
এম এন উদ্দিন
‘নদীর কথা বলি, নদীর কথা শুনি’ প্রতিপাদ্য নিয়ে দুই দিন ব্যাপী,
পটুয়াখালীর কুয়াকাটা পর্যটনকেন্দ্রে আয়োজিত নদীবিষয়ক সেমিনার,
সমুদ্র সৈকত পরিচ্ছন্ন অভিযান, সচেতনতা কার্যক্রম, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বাংলাদেশ নদীবন্ধু সমাজের উদ্যোগে কুয়াকাটার একটি আবাসিক হোটেলের সম্মেলন কক্ষে ‘নদীবন্ধু সম্মেলন’ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নাছিম আখতার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে নদীবন্ধু সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘নদী রক্ষায় আমাদের শপথ নিতে হবে। দুঃখজনক হলেও সত্য, আমরা সেটি করতে কেউ পারছি না। নদী, খাল আমাদের জীবনধারার অংশ।
একটু সচেতনতা থাকলেই নদী টিকিয়ে রাখা সম্ভব। হতাশার বিষয় হলো ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। জীবন-জীবিকার জন্য এখন ভূ–উপরিভাগের পানির ওপর নির্ভর করতে হবে। এবং আগামী যে যুদ্ধ হবে তা হবে পানি নিয়ে, গ্যাস, তেল বা অন্য কিছু নয়।
দ্বিতীয় দিনে নানা কর্মসূচির মধ্যে অতিথিদের কথা, পুরস্কার ও সনদ বিতরণ, এবং কেন্দ্রীয় সহ সাধারণ সম্পাদক হাছিবুর রহমান এর পরিচালনায় নদীরজ্ঞান বিষয়ক ভিন্নধর্মী প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনটির সভাপতি প্রাণকৃষ্ণ বিশ্বাসের সভাপতিত্বে সেমিনারে বক্তব্য দেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যাথলজি ও প্যারাসাইটোলজি বিভাগের প্রধান খন্দকার জাহাঙ্গীর আলম।
তিনি বলেন, নদী রক্ষায় সবাইকে সচেতন হতে হবে। নদীর গতিপথ, নাব্যতা ঠিক রাখতে হবে এবং দূষণের হাত থেকে নদীকে রক্ষা করতে হবে।
নদীবন্ধু সমাজের সহসভাপতি ও আলোকচিত্রী দেবদাস মজুমদার তাঁর বক্তব্যে বলেন, প্রতিনিয়ত উপকূলের নদী, খাল, জলাশয় দখল-ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এতে উপকূলের কৃষি, মৎস্যসম্পদসহ জীববৈচিত্র্যের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। উপকূলের জনজীবন বিপর্যয় থেকে বাঁচাতে তিনি নদী, খাল ও জলাশয় দখল-ভরাট না করার আহ্বান জানান। এ ছাড়া যেসব নদী, খাল ও জলাশয় দখল হয়ে গেছে, সেগুলো চিহ্নিত করে দ্রুত উদ্ধার করার আহ্বান জানান।
সেমিনারে মঠবাড়িয়ার মিরুখালী স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. আলমগীর হোসেন খান, হাঙ্গার প্রজেক্টের বরিশাল বিভাগীয় সমন্বয়ক ফারুক হোসেন খান, কুয়াকাটা টুরিস্ট পুলিশের পরিদর্শক হাসনাইন পারভেজ, কুয়াকাটা প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. নাসির উদ্দিন ,মানবাধিকার নারী নেত্রী জনাবা মিশু রহমান প্রমুখ আলোচনা করেন।এর আগে গতকাল সংগঠনটির সদস্যরা কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালান। এতে ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরাসহ স্থানীয় পর্যটন উদ্যোক্তরা সংহতি জানিয়ে অংশ নেন। এ সময় সৈকতের ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের সৈকত পরিছন্ন রাখার ব্যাপারে সচেতন করা হয়। সব শেষে প্রাণকৃষ্ণ বিশ্বাস কে সভাপতি ও মোঃ জাকির হোসেন কে সাধারণ সম্পাদক করে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়।
বিশেষ প্রতিনিধি :-