এস আর,সোহেল রানা,রাজশাহী,প্রতিনিধিঃ
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি)র আওতাধিন রাজপাড়া থানার এএসআই নাসির যেন বেপরওয়া হয়ে আটক বানিজ্যে নেমেছেন। বার বার মহানগর গোয়েন্দা শাখায় কর্মরত থাকায় শুধু তার থানা এলাকা নয় অন্য থানা এলাকায় কয়েকজন নিয়ে ডিবি পরিচয়ে বেপরওয়া হয়ে আটক বানিজ্যে করে চলেছেন। তার এমন আটক বানিজ্যের বিষয়ে আরএমপি পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারাও বিব্রত। তারাও চাচ্ছেন এমন অপরাধীর
কাশিয়াডাংগা থানা এলাকার বাগানপাড়ার উত্তম মেষপালক ক্যাথলিক গির্জার পার্শে এইস্থানে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে রিক্সা চালক ও এক ডাক্তারকে চার বোতল ফেন্সিডিলসহ আটক করে গলির মধ্যে নিয়ে যায় এএসআই নাসিরসহ ডিবি পুলিশ পরিচয়ে কয়েকজন।
জানা যায়, গত ২৯মে রবিবার বেলা দুইটার সময় কাশিয়াডাংগা থানা এলাকার বাগানপাড়ার উত্তম মেষপালক ক্যাথলিক গির্জার পার্শে রিক্সা যোগে যাওয়ার সময় ডিবি পুলিশ পরিচয়ে রিক্সা চালক (পূর্বে মাদক ব্যাবসায়ী) ও এক ডাক্তারকে চার বোতল ফেন্সিডিলসহ আটক করে গলির মধ্যে নিয়ে যায় এএসআই নাসিরসহ ডিবি পুলিশ পরিচয়ে কয়েকজন। এর পরে ঘন্টা দুই এক দরকষাকষি করে ডাক্তারকে একলক্ষ পনেরো হাজার টাকা ও পূর্বের মাদক ব্যাবসায়ী গুড়িপারার ঢালান নিচপারা এলাকার হাসান এর ছেলে রিক্সা চালক মুজাম এর স্ত্রী আরজিনার নিয়ে আসা নগদ ষাট হাজার টাকা নিয়ে রিক্সা চালক মুজামকে ছেড়ে দেয় এএসআই নাসিরসহ তার সহযোগীরা। এএসআই নাসিরকে টাকা দেয়ার সময় মুজাম এর স্ত্রীর কান্নাশুনে পাশের কাঠের দরজা,জানালা ডিজাইন করা দোকানের মালিক ও কর্মচারিরা বেরিয়ে আসলে তাদের সামনেই রিক্সা চালক মুজামকে ছেড়ে দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন এএসআই নাসিরসহ তার সহযোগীরা।
শুধু এ ঘটনা নয় গত একমাস আগে রাত্রি নয়টার সময় নগরীর পদ্মা গার্ডেন নদীরধার এলাকায় বড়কুঠির নবাবজান এর ছেলে বাবুকে তার মটরসাইকেলের গতিরোধ করেন এএসআই নাসির সহ আরো তিনজন। মদপান করে মটরসাইকেল চালানোর অপরাধ দেখিয়ে ডিবি অফিসে নিয়ে যাওয়ার ভয় দেখায় তারা। এ সময় এএসআই নাসির তার পকেটে থাকা অনেকগুলো ইয়াবা বের করে বলে এই ইয়াবাগুলো দিয়ে তোকে মামলা দেয়া হবে। এ সময় ভুক্তভোগীর ফোনে তার স্ত্রী রুমা লাইলা চৌধুরী ঘটনাস্থলে আসলে অনেক দরকষাকষি করে ৪৮.০০০/ আটচল্লিশ হাজার টাকা নিয়ে ছেরে আসে।
শিরোইল বাসটার্মিনাল এলাকার এক ফল দোকানদার বলেন, গত ১০/১২দিন আগে ভোরে ঢাকা থেকে চাপাইনবাবগঞ্জগামী গ্রামীন ট্রাভেলস থেকে নামা দুই যাত্রীকে দুইটি মটরসাইকেল নিয়ে এসে এএসআই নাসির সহ তার সহযোগীরা তাদের হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে বসে থাকে । প্রায় এক ঘন্টা পরে সি এনজি যোগে দুইজন ছেলে ও একজন মেয়ে এসে ৫০০টাকার বান্ডিল সম্বাবত ৫০,০০০/ পঞ্চাশ হাজার টাকা হবে সে টাকা এএসআই নাসির এর হাতে দিয়ে তাদের ছারিয়ে নিয়ে যায় তারা।
জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার রাজশাহী বিভাগ এর সভাপতি মো: নুরে ইসলাম মিলন বলেন, এক সময় পুলিশের সিভিল টিমের আটক বাণিজ্যের কারনে রাজশাহী শহরময় আতঙ্ক বিরাজ করেছে। রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) কমিশনার জনাব আবু কালাম সিদ্দিক আরএমপিতে যোগদানের পর সেই সিভিল টিম নিস্কিয় করেন। যদিও সিভিলটিম করা পুলিশ হেড কোয়ার্টার থেকে কোন অনুমতি নেই, যাহা নিয়ম বহির্ভূত। এ সিভিল টিমের দ্বারা ভালো কাজ হলেও খারাপ কাজ ছিলো উল্লেখযোগ্য। যখন যাকে খুশি আটক করবে, আর অর্থ আদায় ছিলো তাদের মুল কাজ। যা এই কমিশনার মহোদয় এসে তা বন্ধ করেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ সদস্য বলেন, কনষ্টেবল হয়ে যোগদান করে দির্ঘ ১৭বছর থেকে আরএমপিতে রয়েছেন বর্তমানে এএসআই নাসির। বিভিন্ন থানা ও গোয়েন্দা শাখায় পোষাক ছাড়া সিভিল টিম এর নামে আটক বানিজ্যের শির্ষে রয়েছেন এই এএসআই নাসির। তার সাথে রয়েছেন কিছু নামধারী কথিত সাংবাদিকরা। তাদের ক্ষমতা বলে তার ভাব যেন এএসআই নয় তিনি কোন এসি/ডিসি।
এএসআই নাসির এর বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ বিষয়ে তাকে ফোন করা হলে তিনি বলেন , আমি যা করি তা আমার উর্ধতন কর্মকর্তা ওসি/এসি ও ডিসি স্যারদের নির্দেশেই করি। আপনার কোন কিছু জানার থাকলে এসি,ওসি ও ডিসি স্যারকে ফোন দিয়ে জানতে পারেন তারা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছেন।
এএসআই নাসিরের আটক বানিজ্যের বিষয়ে জিঙ্গাসা করলে রাজপারা থানার অফিসার ইনচার্জ জাহাঙ্গির আলম বলেন, এমন কোন বিষয়ে আমার জানা নেয়। আর বাগানপাড়ার উত্তম মেষপালক ক্যাথলিক গির্জা এলাকা আমার থানা এলাকা না। যদি এএসআই নাসির ওই এলাকায় না আমার থানা এলাকায়ও এমন কোন অপরাধ করে থাকে তাকে ছাড় দেয়া যাবে না বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে রাজপারা জোনের সহকারী কমিশনার জানান ,আমি রাজধানী ঢাকায় ট্রেনিংএ আছি। এএসআই নাসির এর এমন কোন কর্মকান্ড বিষয়ে আমার জানা নেয়। তার বিরুদ্ধে পূবেরও এমন অনেক অভিযোগ পেয়েছি। প্রমান না থাকায় তার বিরুদ্ধে কোন ব্যাবস্থা গ্রহন করা হয়নি। তবে তার বিরুদ্ধে এমন কোন প্রমান থাকলে আপনারা সংবাদ প্রকাশ করুন। প্রমানসহ পেলে তার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানান তিনি।
আগামী পর্বে থাকছে এই এএসআই নাসিরের চাকুরিতে যোগদান থেকে এ পর্যন্ত অপরাধের খোলা চিঠি। সেই সাথে এক থানার ওসি,তার বডিগার্ড ও ওয়ারলেস অপারেটরের মাধ্যমে নিলাম ছাড়া গোপনে দুইটি গাড়ি বিক্রি করার তথ্য।