উদয় কুমার দাশ, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি;
জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ সুরক্ষায় তামাক কর নীতি প্রণয়নের দাবী
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬ সালে দক্ষিণ এশিয়া স্পিকার সামিটে ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে তামাকের ব্যবহার সম্পুর্ণভাবে নির্মুল করার প্রতিশ্রæতি দেন। এই লক্ষ্য অর্জনের কৌশল হিসেবে তিনি দেশে একটি শক্তিশালী তামাক কর নীতি প্রণয়নের ঘোষণা দেন। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার ৬ বছরেও দেশে তামাক কর নীতি প্রণয়ন হয়নি। বাংলাদেশে কার্যকর তামাক নিয়ন্ত্রণের অতি সত্ত¡র একটি শক্তিশালী তামাক কর নীতি প্রণয়ন করতে হবে। তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচি সমাবেশে বক্তব্যে বক্তারা একথা বলেন।
৩১ মে বিশ্ব তামাক মুক্ত দিবস। তামাকের ক্ষতি সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে এবং তামাক মুক্ত বিশ্ব গঠনের দাবীকে জোরালো করতে বিশ্বব্যাপি এই দিবসটি পালিত হয়। গতকাল (১ জুন ২০২২) বুধবার দিবসটি উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট, বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক ফর টোব্যাকো ট্যাক্স পলিসি ও এইড ফাউন্ডেশন,সাতক্ষীরা জেলার তামাক বিরোধী জোটভুক্ত সংগঠন মৌমাছি, প্রভা, মিড়া, ডুইডো সকাল ১১টায় সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের চত্বরে একটি অবস্থান কর্মসূচি আয়াজন করে।
অবস্থান কর্মসূচি শেষে তামাক বিরোধী সংগঠনসমূহের একটি প্রতিনিধি দল জাতীয় তামাক কর নীতি প্রণয়নসহ তামাক নিয়ন্ত্রণের বিভিন্ন দাবী সম্বলিত একটি স্মারকলিপি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে পেরণের জন্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) কাজী আরিফুর রহমান এর কাছে প্রদান করেন।
এসময় বক্তারা আরো বলেন, তামাক পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের ওপর ব্যাপকভাবে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারের কারণে প্রতি বছর ১ লাখ ৬২ হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে, প্রায় ৪ লক্ষ মানুষ পঙ্গুত্ব। মানুষের মৃত্যু ও অর্থনৈতিক ক্ষতি কমিয়ে আনতে হলে তামাকজাত দ্রব্যের মূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে নিতে হবে। তামাকজাত দ্রব্যের উচ্চ মূল্য ও এর ওপর উচ্চ হারে করারোপ তামাক নিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে কার্যকর ও সাশ্রয়ী পদ্ধতি হিসাবে বিশ্বব্যাপি স্বীকৃত। তামাকজাত দ্রব্যের মূল্য ১০ ভাগ বৃদ্ধি পেলে নি¤œ ও মধ্যম আয়ের দেশে তামাকের ব্যবহার ৮ ভাগ পর্যন্ত কমে আসে।
বক্তারা আরো বলেন, বাংলাদেশে তামাক কর ব্যবস্থা জটিল ও ত্রæটিপূর্ণ তাই এটি তামাকের ব্যবহার কমাতে কার্যকর অবদান রাখতে পাছে না। দেশে তামাক কর নীতি প্রণীত হলে তামাকজাত দ্রব্যের ওপর করারোপ একটি সাধারণ নিয়মের মধ্যে আসবে। এর মাধ্যমে আধুনিক ও কার্যকর করারোপ পদ্ধতি ও কর আদায় পদ্ধতির প্রচলন হবে ফলে তামাক কর ব্যবস্থার জটিলতা কমে আসবে।
তারা আরো বলেন, জাতীয় তামাক কর নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে কর প্রশাসন আরো কার্যকর ও দক্ষ হয়ে উঠবে, তামাক কোম্পানীর হস্তক্ষেপ এবং কর ফাঁকি রোধ করা যাবে। এর মাধ্যমে সকল তামাকজাত দ্রব্য, তামাক উৎপদন ও বিক্রয় চেইন, তামাক চাষ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ, তামাক রপ্তানী ইত্যাদি বিষয়কে করজালের আওতায় আনা যাবে। এর ফলে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি পাবে এবং তামাকের ব্যবহার উল্লেখযোগ্য হারে কমে আসবে যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুসারে ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গঠনকে এগিয়ে নেবে।
কর্মসূচিতে মৌমাছি সংস্থার নির্বাহী পরিচালক সুশান্ত মল্লিক, প্রভা’র নির্বাহী পরিচালক শাম্মী আক্তার কুমকুম,মিড়া’র নির্বাহী পরিচালক দুলাল চন্দ্র দাশ,ইয়াকুব আলী অংশ নেন।