নিউজ ডেস্ক :
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, ফার্মাসি, আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস ও ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদভুক্ত ক ইউনিটের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা ছিল আজ শুক্রবার।
এ পরীক্ষায় ক্যাম্পাসের কলাভবন কেন্দ্রের একটি কক্ষে পরিদর্শকদের সিদ্ধান্তহীনতার কারণে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন কয়েকজন ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থী ও তাঁদের অভিভাবকেরা। তাঁরা একে ‘অনিয়ম’ আখ্যা দিয়ে এই পরীক্ষা বাতিল করে পুনরায় নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
আজ বেলা ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ক ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষা হয়েছে দেশের আটটি বিভাগের প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রে। ঢাকা বিভাগের পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্র ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। ক্যাম্পাসের কেন্দ্রগুলোর মধ্যে অন্যতম বড় কেন্দ্র ছিল কলাভবন। এই কেন্দ্রের ২০৬৮ নম্বর কক্ষে ওই বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের।
পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগ, কলাভবনের ২০৬৮ নম্বর কক্ষের পরিদর্শকেরা পৌনে ১১টার দিকে কক্ষে প্রবেশ করেন। কিন্তু তাঁরা ওই কক্ষের পরীক্ষার্থীসংখ্যার সমপরিমাণ ওএমআর শিট ও প্রশ্নপত্র নিয়ে যাননি। এ কারণে ৩০-৩৫ জন শিক্ষার্থী যথাসময়ে ওএমআর ও প্রশ্নপত্র পাননি। কক্ষ পরিদর্শকদের সিদ্ধান্তহীনতার কারণে এ নিয়ে সেখানে তুমুল হইচই হয়। পরে অবশ্য ওই শিক্ষার্থীদের ওএমআর ও প্রশ্ন সরবরাহ করে আধঘণ্টা সময় বাড়িয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু শুরুতেই প্রশ্ন পাওয়ায় শিক্ষার্থীদের একটি অংশের পরীক্ষা আগেই শেষ হয়ে যাওয়ায় খাতা জমাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ওই কক্ষে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়। ফলে দেরিতে পরীক্ষা শুরু করা শিক্ষার্থীসহ অনেকেরই পরীক্ষা খারাপ হয়েছে।
কলাভবনের ২০৬৮ নম্বর কক্ষে পরীক্ষা দেওয়া একজন শিক্ষার্থী ও তাঁর অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ওই কক্ষে যতজন পরীক্ষার্থী ছিলেন, পরিদর্শকেরা ততটা ওএমআর শিট নিয়ে যাননি। প্রথমে কিছু শিক্ষার্থীকে ওএমআর ও প্রশ্নপত্র দেওয়া হলেও ৩০-৩৫ জন শিক্ষার্থী প্রশ্ন ও ওএমআর পাননি। এমন পরিস্থিতিতে আরও কিছু প্রশ্নপত্র নিয়ে আসা হয়। তখন দেখা যায়, ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীদের জন্য তৈরি করা প্রশ্নপত্র নিয়ে আসা হয়েছে, কিন্তু বাংলা মাধ্যমের জন্য তৈরি করা প্রশ্ন আনা হয়নি। এভাবে দু-তিন-চারবার প্রশ্নপত্র আনা হয়। এ অবস্থার কারণে যে পরীক্ষা বেলা ১১টায় শুরু হওয়ার কথা, তা শুরু হয় সাড়ে ১১টার দিকে। এটা নিয়ে পরীক্ষার হলে হুলুস্থুল ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। যাঁরা প্রশ্ন পাননি, তাঁরা চিৎকার-চেঁচামেচি করেছেন। প্রথমে প্রশ্ন না পাওয়া শিক্ষার্থীদের পরে আধঘণ্টা সময় বাড়িয়ে দেওয়া হলেও হুলুস্থুল পরিস্থিতির কারণে ওই কক্ষের অধিকাংশেরই পরীক্ষা খারাপ হয়েছে।
ওই অভিভাবক আরও বলেন, ‘প্রশ্ন বা ওএমআর যদি কোনো কারণে কম থাকে, তাহলে কক্ষ পরিদর্শকেরা সেগুলো আনার পর সবাইকে একসঙ্গে প্রশ্ন বা ওএমআর দেবেন, এটাই নিয়ম। সবার পরীক্ষা একসঙ্গে শুরু হয়ে একসঙ্গে শেষ হবে, এটাই হওয়া উচিত। কিন্তু এখানে তা করা হয়নি। কক্ষ পরিদর্শকেরা সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি। এ ছাড়া কিছু প্রশ্ন ও ওএমআরের মাঝখানে ছাপা ছিল না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এই অবস্থা হলে আমাদের ছেলেমেয়েরা যাবে কোথায়? এত গুরুত্বপূর্ণ একটি পরীক্ষায় এমন অনিয়ম হয় কীভাবে? এই পরীক্ষা বাতিল করে নতুন করে নেওয়া উচিত।’
এ বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও সাড়া দেননি ‘ক’ ইউনিট ভর্তি পরীক্ষার প্রধান সমন্বয়কারী ও ফার্মাসি অনুষদের ডিন সীতেশ চন্দ্র। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। এ বিষয়ে আমি সংশ্লিষ্ট ডিনের সঙ্গে কথা বলব।’
Leave a Reply