নিউজ ডেস্ক :
করোনার প্রভাব কাটার আগেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে বাড়ছে মূল্যস্ফীতির হার। যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের মতো উন্নত দেশেও মূল্যস্ফীতিতে ৪০ বছরের রেকর্ড হয়েছে।
জ্বালানি ও খাদ্যশস্যের দাম বাড়ায় ভেনেজুয়েলায় মূল্যস্ফীতি ছাড়িয়েছে ২২২ শতাংশ। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে দেশগুলোতে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেয়ার শঙ্কা বিশ্লেষকদের।
করোনা মহামারির কারণে ২০২০ সালের প্রথম থেকেই টালমাটাল ছিল বিশ্ব অর্থনীতি। সংক্রমণ ঠেকাতে লকডাউন দেয়ায় প্রায় প্রতিটি দেশেই বন্ধ ছিল উৎপাদন, ব্যবসা-বাণিজ্য ও আমদানি-রপ্তানি। ফলে, অর্থনৈতিক মন্দার কবলে পড়ে বিভিন্ন দেশ।
সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসায় ২০২১ সালের মাঝামাঝি অর্থনীতির চাকা স্বাভাবিক হয়ে এলেও, সেই গতিতে বাধ সেধেছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ।
মস্কো-কিয়েভ সংঘাতের প্রভাব পড়েছে খাদ্য, জ্বালানি ও খাদ্যপণ্যের দাম এবং জাহাজ ভাড়ায়। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে তেল, গ্যাস ও খাদ্যশস্য আমদানি নির্ভর দেশগুলো। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গবেষণা বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে এক বছরে খাদ্যপণ্যের দাম ১০ শতাংশ ও জ্বালানির দাম বেড়েছে ৩৪ শতাংশ। যুক্তরাজ্যে খাদ্যের দাম বেড়েছে প্রায় ৭ শতাংশ আর জ্বালানি খরচও বেড়েছে ৫৪ ভাগ।
এছাড়া, জার্মানিতে এক বছরের ব্যবধানে জ্বালানি খরচ ৮৩ শতাংশ ও খাদ্যে ১৩.২ ভাগ এবং জাপানে জ্বালানিতে ২০ ও খাদ্যে খরচ বেড়েছে ১৩ শতাংশ পর্যন্ত।
জ্বালানি ও খাদ্যশস্যের ক্রমবর্ধমান দামের কারণে মূল্যস্ফীতির চাপ বাড়ছে নিম্ন আয় থেকে শুরু করে উচ্চ আয়ের দেশেও।
অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা জানান, এপ্রিলে ভেনেজুয়েলায় মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ২২২.৩ ভাগ এবং যুক্তরাজ্যে ৯ ভাগ। মে মাসে তুরস্কে সাড়ে ৭৩ ভাগ, যুক্তরাষ্ট্রে ৮.৬, শ্রীলংকায় ৩৯.১, ভারত ৭.০৪, পাকিস্তানে প্রায় ১৪, জার্মানিতে প্রায় ৮, ইউক্রেনে ১৮ এবং রাশিয়ায় মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১৭.১ শতাংশ।
আন্তর্জাতিক জ্বালানি ও ভোগ্যপণ্যের বাজারে অস্থিতিশীল অবস্থার সবচেয়ে বেশি দায়ভার বহন করতে হচ্ছে বিশ্বের দরিদ্র জনগোষ্ঠী ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে। এই অবস্থা দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে শুধু স্বল্পোন্নত নয়, ধনী দেশগুলোও ভয়াবহ অর্থনৈতিক মন্দার কবলে পড়বে বলে শঙ্কা বিশ্লেষকদের।