মোঃ সোহেল মোল্লা
নেছারাবাদ পিরোজপুর থেকে:-
একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা সংগ্রামী জীবন।আজ এক বছর হল মন্টু ভাই আমাদের মাঝে নেই।
৭১এ মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে তিনি বিপ্লবী ছাত্রইউনিয়নের একজন অকতোভয় নেতা ছিলেন,মিছিলের শ্লোগানে প্রকম্পিত করতেন পিরোজপুরের রাজপথ।২৬শে মার্চ ১৯৭১ পিরোজপুর ট্রেজারির অশ্রাগার ভেঙে অশ্র নিয়ে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পরেন।
পাকিস্তান সরকার অশ্রাগার লুটের মামলার আসামিও করেন তাকে।বাংলা ভাষায় পিরোজপুরে সকল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করার দাবিতে তৎকালীন পিরোজপুর মহাকুমার এসডিওকে (পাকিস্তানী চর)আক্রমন করা হয়।
পিরোজপুরের যে কজন যুবক এ অপারেশন করেন তার মধ্যে আমার মন্টু ভাই অন্যতম।এ কাজের জন্যও পাকিস্তান সরকার তার বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন।
বাঙালী রা যখন পাকিস্তানি হানাদারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ ভাবে মুক্তির সংগ্রাম করছিলেন ঠিক তখনি বিপ্লবী ছাত্র ইউনিয়নের একজন কর্মী হিসেবে ৯নং সেক্টরের সাব সেক্টর কমান্ড(সুন্দরবন) থেকে ভারি অশ্র,গোলাবারুদ তৎকালীন পিরোজপুর,বাগেরহাটের বিভিন্ন মুক্তি ক্যাম্পে আমাদের মন্টু ভাই ও তার প্রিয় বন্ধু চাঁন- ভাই আর বেশ কয়েকজন হেবি ফাইটারকে সাথে নিয়ে পৌছে দিতেন।
যা ছিল মুক্তির সংগ্রামে এক লোমহর্সক অভিজান।কোথাও কোন মুক্তি যোদ্ধারা আটকে পরলে তাদেরকেও উদ্ধার করতেন মন্টু ভাই ও তার প্রিয় বন্ধু চাঁন ভাই।
একদিন ভান্ডারিয়ায় আরেক বীর মুক্তিযোদ্ধা বাবুল গাজী কে আটকে পরলে আমার মন্টু ভাই ও তার বন্ধু চাঁন ও কয়েকজন ফাইটারকে নিয়ে একটি বিয়ে বাড়ি থেকে প্রকাশ্যে উদ্ধার করে সেইফ জোনে নিয়ে এসেছিলেন।যা ছিল মুক্তি যুদ্ধে এক ভাইয়ের পাশে আরেক ভাইয়ের দাড়ানো।
তিনি তিনটি সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহন করেছিলেন।যুদ্ধে তিনি তার মায়ের সাথে একবার দেখা করতে এসেছিলেন যা ছিল বেদনাতীত।এভাবে কাটিয়েছেন দীর্ঘ নয় মাস!
দেশ স্বাধীনের পরে আবারও প্রতিবাদী বিপ্লবী ছাত্র ইউনিয়নের নেতা কর্মীরা।রুখে দাড়াতেন মজুদদার, লুটেরা,অত্যাচারীদের বিরুদ্ধে।ঠিক তখনই তাদের দমন করার জন্য রক্ষি বাহিনি গঠন করা হল।মুক্তি পাগল মানুষের মত আমার ভাইকে-ও বারবার অত্যাচার করেছে রক্ষী বাহিনী নামক রাষ্টীয় সন্ত্রাসীরা।তবুও তিনি আপোস করেন নি শোষনের কাছে।জীবন যুদ্ধে সংগ্রাম করে গেছেন জীবনের শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত।
আজ তার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী।এক বছর হল আমি আমার ভাইকে দেখি না।অনুভব করি শুধু তাকে।তার শুন্যতা অপুরনীয়।মিস করি ভাই কে সব সময়!
আমি গর্ব করি আমার মন্টু ভাই কে নিয়ে ।আমি যেন আমার ভাই এর আদর্শ মত পুরটা পথ চলতে পারি।অনেক ভালবাসি ভাইকে,কিন্তু কখনো বলতে পারি নাই!!
মহান আল্লাহ্ র কাছে আমার ভাই র জন্য দোয়া চাই,তিনি যেন তাকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করেন।
নেছারাবাদ প্রতিনিধি:-