সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ ইফতিয়াজ সুমন
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম শীর্ষ খবরকে বলেন, ‘সুনামগঞ্জে বৃষ্টি থাকলেও উজানের বৃষ্টিপাত হচ্ছে খুবই বেশি, যার ফলে নদ-নদীর পানি দ্রুত বেড়ে যাচ্ছে। উজানে বৃষ্টিপাত কমলে এই পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।’
সুনামগঞ্জ পৌর শহর থেকে বন্যার পানি নেমেছিল গত মাসের শেষের দিকে। টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে জেলার নদ-নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় দুই সপ্তাহ পর আবার পানি ঢুকেছে শহরের ঘরবাড়িতে।
জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় সুরমা নদীর মূল পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এতে প্লাবিত হয়েছে পৌর শহরের নবীনগর, পশ্চিম তেঘরিয়া, উত্তর আরপিন নগর ও মরাটিলা এলাকা।
পশ্চিম তেঘরিয়ার বাসিন্দা হাবিবুর রহমান "শীর্ষ খবর" কে বলেন, ‘ঘরও পানি ডুকিয়া হাঁটু পানি। এখন মালপত্র সব নিয়া বিছানার ওপর বসে আছি। কোনো ত্রাণ আমরা পাই নাই। কিতা করতাম, কই যাইতাম, বুঝরাম না।’
নবীনগর এলাকার ফরিদা বেগম বলেন, ‘রাত থকি পানি ঘর আওয়া শুরু করছে। আর ইলান পানি আওয়া আমরা আগে দেখি নাই। এখন ছেলে-মেয়ে নিয়া বড় চিন্তার মধ্যেই আছি। নিজে খাইমু কিতা আর এরারে দিমু কিতা।’
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, সুরমার পানি দিরাইয়ের পুরাতন এলাকার পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৯ সেন্টিমিটার, ছাতক পয়েন্টে ২ দশমিক ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া তাহিরপুর এলাকায় যাদুকাটা নদীর পানি প্রবাহিত হচ্ছে বিপৎসীমার ৬৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে।
টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে এখন পর্যন্ত ৫২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ আছে। এর মধ্যে ৪০টি প্রাথমিক আর ১২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়।
পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র নিরাপদে রাখার নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা অফিস।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম আব্দুর রহমান "শীর্ষ খবরকে" বলেন, ‘বিদ্যালয়ে পানি ঢুকলে পাঠদান বন্ধ করে এলাকাবাসীকে আশ্রয় দেয়ার জন্য উপজেলা অফিসারদের নির্দেশনা দেয়া আছে। তারা তাদের প্রধান শিক্ষকদের মাধ্যমে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এখন পর্যন্ত প্রাথমিকে ৪০টি বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ করা হয়েছে।’
বৃষ্টিপাত আরও তিন দিন
সিলেট আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ সাইদুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘চলমান বৃষ্টিপাত আরও কয়েক দিন থাকবে। এই মাসে ৬৮৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এই কয়েক দিনে যে পরিমাণে বৃষ্টিপাত হচ্ছে, তা ১৯ তারিখ পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।’