নিউজ ডেস্ক :
রাজধানীর বনানী ও নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে চুরি ও ছিনতাইকৃত মোবাইল ফোন কারবারি চক্রের মূলহোতাসহ সাতজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৩। এসময় তাদের কাছ থেকে ৬৫টি ট্যাব, ১০১৫টি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন, ৩১৭টি বাটন মোবাইল ফোন, ৬টি সিমকার্ড ও নগদ ২০ হাজার ২১০ টাকা জব্দ করা হয়।
গ্রেফতাররা হলেন- আবুল হোসেন (২৮), নজরুল ইসলাম (৪৬), তাজউদ্দিন আহম্মেদ (৪৮), মো. মাঈনউদ্দিন (৩০), সুজন মিয়া (২৩), মো. মানিক (৩০) ও লিটন মিয়া (৪০)।
র্যাব বলছে, মূলত ছিনতাই ও চোরাইকৃত মোবাইল ফোন অল্প দামে কিনে সেগুলোর আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করে সুযোগ বুঝে বেশি দামে বিক্রি করছে কয়েকটি চক্র। গ্রেফতাররা সবাই মোবাইল ফোন ছিনতাই ও চোর চক্রের সঙ্গে যোগসাজশে চোরাই ও ছিনতাইকৃত মোবাইলের অবৈধ ব্যবসা করে আসছিলেন।
মোবাইলগুলোর আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করে বিভিন্ন চক্রের যোগসাজশে বিভিন্ন মার্কেটের সামনে ভাসমান দোকানে গোপনে বিক্রি হচ্ছে। আর এসব চোরাই মোবাইলের মূল ক্রেতা মূলত স্বল্প আয়ের শ্রমজীবী মানুষ।
শুক্রবার (২৪ জুন) দুপুরে কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-৩ এর অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, মোবাইল চোর ও ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা রাজধানীসহ নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় অবৈধ মোবাইল কেনা-বেচা নিয়ে তৎপর রয়েছেন। এসব মোবাইল ফোন বিভিন্ন মার্কেটের সামনে ভাসমান দোকানে গোপনে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা সুকৌশলে নানা সিন্ডিকেটের সঙ্গে যোগসাজশে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে চুরি এবং ছিনতাইকৃত মোবাইল ফোন কেনা-বেচায় জড়িত রয়েছেন।
এরই ধারাবাহিকতায় ২৩ জুন রাতে র্যাব-৩ এর আভিযানিক দল রাজধানীর বনানী এবং নারায়নগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় অভিযান চালিয়ে চুরি ও ছিনতাইকৃত মোবাইল কারবারি চক্রের মূলহোতাসহ সাতজনকে গ্রেফতার করে।
চক্রের মূলহোতা আবুল হোসেনের নেতৃত্বেই ছিনতাইকারী ও চোর চক্রের সদস্যরা সুকৌশলে নানা সিন্ডিকেট হোতার সঙ্গে যোগসাজশে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মোবাইল সংগ্রহ করতেন। চুরি এবং ছিনতাই করা মোবাইল ফোন কমদামে কিনে সিদ্ধিরগঞ্জ এবং রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার ভাসমান দোকানে বিক্রি করতেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন র্যাব-৩ এর অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ
লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন বলেন, মূলত ছিনতাই ও চোরাই মোবাইল ফোনগুলো অল্প দামে কিনে আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করে সুযোগ বুঝে বেশি দামে বিক্রি করতেন তারা।
র্যাব-৩ এর অধিনায়ক আরও বলেন, ছিনতাইকারীদের প্রধান টার্গেট পথচারীদের মোবাইল। এসব মোবাইল স্বল্পদামে চোরাই মোবাইল কারবারিদের কাছে বিক্রি করতেন। এরপর মোবাইলগুলোর আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করে বিভিন্ন চক্রের যোগসাজশে বিভিন্ন মার্কেটের সামনে ভাসমান দোকানে গোপনে বিক্রি করতেন। আইএমইআই পরিবর্তন করার কারণে এসব মোবাইল পরে উদ্ধার করা সম্ভব হয় না।
বাংলাদেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ডাকাতি, ছিনতাই ও চোরাইমাল বিক্রি ও কাছে রাখা আমলযোগ্য অপরাধ। তা সত্ত্বেও দীর্ঘদিন ধরে তারা নির্বিঘ্নে-নির্ভয়ে চোরাই মোবাইল বিক্রি ও আইএমইআই পরিবর্তনের অবৈধ ব্যবসা করে যাচ্ছেন বলেও জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।