সাগর মোড়ল,তালা-সাতক্ষীরা
দেশের দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চলের একটি প্রাচীন এবং ঐতিহাসিক জনপদ হলো তালা উপজেলা সদর। কপোতাক্ষ নদের তীরে অবস্থিত জাঁকজমক পূর্ন এই উপশহরটি পর্যায়ক্রমে থানা ও উপজেলায় উন্নীত হয়েছে। কিন্তু জাঁকজমক পূর্ন এই উপশহরটি কালের বিবর্তনে আজ সেই অবস্থা আর নেই। সন্ধ্যা পার হলেই উপশহরে নেমে আসছে অন্ধকারাচ্ছন্নতা!
এই উপশহর এবং এখানকার ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা বর্তমানে কোনও ভাবে টিকে আছে মূলত উপজেলা প্রশাসন, থানা প্রশাসন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, ২টি ব্যাংক এবং কয়েকটি এনজিও এর উপর ভিত্তি করে। প্রতিষ্ঠানগুলোতে সেবা নিতে আসা মানুষদের কারনে উপশহরে মানুষের আনাগোনা সাময়িক সময়ে দেখা যায়। মূলত এই সময়ের কারনেই এখানকার ছোট ছোট হোটেল, রেস্তোরা বা অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো টিকে আছে সংগ্রাম করে।
সূত্রে প্রকাশ, তালা উপজেলা মৎস্য অফিস রয়েছে সদর থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দুরে বারুইহাটি গ্রামে। গুরুত্বপূর্ন রেজিষ্ট্রি অফিস প্রায় ৬/৭ কিলোমিটার দুরে ইসলামকাটি গ্রামে। উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিস ও খাদ্য গুদাম রয়েছে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দুরে পাটকেলঘাটা বাজারে অবস্থিত। এতে করে এক শহর থেকে জনগন সরকারের সকল সেবা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং বিভিন্ন এলাকায় যেতে যেয়ে সময়, শ্রম এবং আর্থিক সহ নানাভাবে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।
তথ্য মতে প্রকাশ,তালা উপশহরের দোকনগুলোতে একদিকে ক্রেতার অভাব অপরদিকে ব্যাংক ঋনের পর্যাপ্ততা না থানায় বড় ব্যবসায়ী বা শিল্প প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয়নি। কিন্তু তালা সদরের তিন পাশ ঘেঁসে জাতপুর, পাটকেলঘাটা ও কপিলমুনি বাজার বছরের পর বছর সমৃদ্ধ ও উন্নতী হয়েছে। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে তালার ছোট বা মাঝারি ব্যবসায়ীদের উপর।এমনকি সরকারি ছুটির দিনগুলোতে তালা উপশহরে সুনসান নিরবতা বিরাজ করে।
একসময়ের তালা থানার অধিন পাটকেলঘাটা প্রশাসনিক থানায় রুপান্তর সহ সম্প্রতি বছরগুলোতে গ্রামে গ্রামে হাট-বাজার গড়ে ওঠায় দিনে বা রাতে তালা বাজারে ব্যবসায়ীরা সংকটের সন্মুখিন হচ্ছে। স্থানীয় অধিবাসী বা দুর-দুরান্ত থেকে তালা উপশহরে আসা মানুষদের সবসময় কোনও না কোনও ভোগান্তির মধ্যে থাকতে হচ্ছে! উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং উপজেলা পরিষদের ভবনগুলো দুরাবস্থার মধ্যে রয়েছে। তার সাথে এখানকার ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও যাতায়াতের রাস্তাগুলো ঝুঁকি তৈরি করছে। সংকট নিরসন সহ তালার পরিকল্পিত উন্নয়নে এখানকার সংশ্লিষ্ট নেতাদের তেমন ভূমিকা রাখতে দেখা যাচ্ছে না। যে কারনে আশপাশের উপজেলা সদরগুলোর তুলনায় তালার মানুষ কাংখিত উন্নতি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
এছাড়া উপজেলা প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ন কয়েকটি দপ্তর বিভিন্ন এলাকায় অবস্থিত হওয়ায় মানুষদের যেমন নানাবিধ ক্ষতির সন্মুখিন হতে হচ্ছে, তেমনি অফিসগুলোর দাপ্তরিক কাজে ধীরতা তৈরি হচ্ছে। যা মানুষের ভোগান্তি সৃষ্টি সহ তালা উপশহরের উন্নয়নে অন্তরায় হয়ে উঠেছে। সরকারি গুরুত্বপূর্ন এই দপ্তরগুলো উপজেলা পরিষদের মধ্যে বা সংলগ্নে স্থাপন সহ উপশহরের পরিকল্পিত উন্নয়নের জন্য সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন তালার সচেতন নাগরিকবৃন্দ।