শাকিল আহমেদ,নড়াইলঃ
নড়াইল সদরের মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ও অভিযুক্ত ছাত্রকে জুতার মালা গলায় পরানোর ঘটনায় মামলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৮ জুন) সদর থানার এসআই শেখ মোহাম্মদ মুরসালিন বাদী হয়ে ১৭০ থেকে ১৮০ জনের নামে মামলা করেছেন।
পুলিশের ওপর হামলা ও কাজে বাধা এবং অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিতের ঘটনায় এ মামলা করা হয়। মামলায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন-নড়াইল সদর থানার বিছালী ইউনিয়নের আড়পাড়া গ্রামের মালেক মুন্সীর ছেলে শাওন মুন্সী, মির্জাপুর গ্রামের সৈয়দ মিলনের ছেলে সৈয়দ রিমন আলী ও একই গ্রামের মনিরুল ইসলাম রুবেল। পুলিশ অভিযান চালিয়ে পৃথক পৃথক স্থান থেকে তাদের গ্রেফতার করেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শওকত কবীর।
তিনি বলেন, ‘গ্রেফতারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ওই এলাকার পরিবেশ এখন শান্ত রয়েছে।’
ভারতের বিতর্কিত বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মাকে সমর্থন করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার অভিযোগের ঘটনায় কলেজের অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস ও ছাত্র রাহুল দেবের গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেওয়ার ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়।
এ ঘটনায় দু’টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান নড়াইলের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান।
অধ্যক্ষের মেয়ে শ্যামা বিশ্বাস জানান, এ ঘটনার পর বাবা বাড়িতে অবস্থান করছেন না। এ ছাড়া ফোনটিও বন্ধ রয়েছে।
জানা যায়, অধ্যক্ষের বাড়ি সদরের সিঙ্গাশোলপুর ইউনিয়নের বড়কুলা গ্রামে।
এদিকে ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জুবায়ের হোসেন চৌধুরী ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রিয়াজুল ইসলামের নেতৃত্বে দু’টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র রাহুল দেব রায় নিজের ফেসবুক আইডিতে নূপুর শর্মার ছবি দিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয় বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় গত ১৮ জুন রাহুল কলেজে আসার পর তার সহপাঠীরা বিষয়টি কলেজ অধ্যক্ষকে জানালে তিনি উপস্থিত শিক্ষকদের পরামর্শক্রমে রাহুলকে স্থানীয় বিছালী পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেন। এরইমধ্যে শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা বিক্ষুব্ধ হয়ে ক্যাম্পাসে শিক্ষকদের ৩টি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে ফেলে। একপর্যায়ে পুলিশের লাঠিচার্জ ও এলাকাবাসীর ইটপাটকেল নিক্ষেপে কলেজ শিক্ষক, পুলিশসহ ১২জন আহত হন। এ ঘটনার পরে নড়াইলের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান ও পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায়সহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং এ সময় অভিযুক্ত রাহুল দেব রায় ও অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে পুলিশ উদ্ধার করে সদর থানায় নিয়ে আসে। পরদিন রাহুলের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়।