নড়াইল প্রতিনিধিঃ
নড়াইলের ঐতিহাসিক প্রত্নতাত্তিক নিদর্শন বাধাঁঘাটের সামনের জায়গা দখল করে শিবলিঙ্গ স্থাপন করায় সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনার ঝড় বইছে।ঐতিহ্য ও নান্দনিক প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যরে চিত্রা নদীর পাড়ের বাধাঁঘাট নড়াইলের অন্যতম দর্শনীয় স্থান।নড়াইলের জমিদারদের নির্মিত শত বছরের প্রাচীন এ বাধাঘাটের অপরুপ সৌন্দর্য্য সাহিত্য ও সিনেমায় স্থান পেয়েছে। বঙ্কিম চন্দ্রের ”কৃষ্ণকান্তের উইল, কমলাকান্তের দপ্তর”এ বাধাঘাটের ঐতিহাসিক বর্ননা এসেছে। সাম্প্রতিক এই বাধাঁঘাটের সামনে শিবলিঙ্গ স্থাপন সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে, সোশ্যাল মিডিয়ায়
MD Shamim Hosain নামের ফেসবুক আইডি থেকে একজন লিখেছেন,আসসালামু আলাইকুম,যদি হামলা মামলার স্বীকার হতে হয় আমি শামিম প্রস্তুত।পাশে কেও থাকেন বা না থাকেন।আমি সব ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই তবে আমার এই মেসেজটা একটু ভেবে দেখেন।নড়াইল জেলার বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, সমাজ সেবক, শুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গ ও সাধারণ জনগণের দৃষ্টি আকর্ষন করছি!!
“”বাধাঁঘাট”” নড়াইল জেলার ঐতিহ্যবাহী কিছু স্থাপনার ভিতর একটি দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা। যেখানে দেশ-বিদেশ থেকে সকল ধর্মের অগণিত পর্যটক আসে এই আকর্ষণীয় স্থাপনা দেখতে। কিন্তু যেখানে বাধাঁঘাটে প্রবেশের রাস্তা ছিল সম্প্রতি সেখানেই একটি শিবলিঙ্গ স্থাপন করা হয়েছে । বাধাঁঘাটে প্রবেশের সম্পূর্ণ জায়গা শিবলিঙ্গ ও মন্দিরকে কেন্দ্র করে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। বাধাঁঘাটে দাড়িয়ে কেউ ছবি তুললে ঘাটের পিলারের সাথে শিবলিঙ্গ যুক্ত হয়ে যাচ্ছে, এজন্য অনেক পর্যটক ছবি তুলতে পারছে না। অনেক ইসলাম ধর্মাবলম্বী মানুষ বাধাঁঘাটের সামনে শিবলিঙ্গ দেখে ঐখান থেকেই ফেরত যাচ্ছে। এখন সকল ধর্মের পর্যটকদের সুবিধার্থে আমাদের করণীয় কি? প্রিয় নড়াইলবাসী, দয়া করে আপনাদের মতামত জানাবেন।আমার ব্যক্তিগত মতামত :-আমরা যেহেতু মুসলিম – হিন্দু একসাথে বসবাস করি সেহেতু সকলের সার্থ- সুবিধা বজায় রেখে মন্দির ও শিবলিঙ্গ থেকে “”বাধাঁঘাট “” কে পৃথক করে দেওয়া হোক।
পোষ্টটি দেওয়ার ১১ ঘন্টায় ১শ ২২ জন কমেন্ট করেছেন।কমেন্টে মুঃ তাওফিকুর রহমান নামে একজন লিখেছেন,সুশীল সমাজ এখানে আসবে সাম্প্রদায়িকতার গন্ধ শুঁকতে ,কিন্তু এটা বুঝবে না এটা নড়াইল জেলার একটি ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা। সকল ধর্মের মানুষের অধিকার আছে স্বাভাবিক ভাবে ব্যবহার করার। F M Emnujaman Emon লিখেছেন, বাঁধা ঘাট কে আমরা ভূলে যায় সেখানে আর না যায় সেটাই শ্রেয়। অপেক্ষার ফটোগ্রাফি লিখেছেন,নড়াইল আমার জেলা বলতে লজ্জা লাগে মুললিমদের অপমান করা হলো এটা করে। Sumsunnahar Nayani লিখেছেন,এটা উদ্বোধন কে কে করেছেন জানেন? এসব নিয়ে কথা বললেই দেশদ্রোহী হতে হয়। Munni Parvin Mou লিখেছেন, আর আমার তো বিশেষ করে সাপের ওই মাথা দেখলেই ভয় করে ওইদিকে যাইতে ইচ্ছে করেনা। Eyan লিখেছেন, আমার একটা ছোট ভাইকে নিয়ে ঘুরতে গেছি ও ওটা দেখে ভয় পেয়েছে।
Neaz Mahmud Viku নামের ফেসবুক আইডি থেকে পোষ্ট করেছেন, নড়াইল জেলার রুপগঞ্জের ঐতিহাসিক বাঁধাঘাট সংস্কার বা রক্ষনাবেক্ষন এবং সীমানা নির্ধারণ নিয়ে কিছু লিখলেই একটা নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের লোকজন আমাকে আর সহ্য করতে পারে না, কারন কি ? ঠাকুর ঘরে কে রে আমি কলা খায় নি।
Kakoli Khatun নামের ফেসবুক আইডি থেকে পোষ্ট করেছেন,লিঙ্গ বসানোর দরকার হলে মন্দিরের জায়গায় বসাও বাঁধাঘাটের জায়গায় মেনে নেয়া হবে না।
আর এসব পোষ্টের কমেন্টে ঐতিহ্য ও নান্দনিক প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যরে চিত্রা নদীর পাড়ের বাধাঘাঁটে শিবলিঙ্গ স্থাপনের সমালোচনা হচ্ছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, মন্দিরের স্মৃতি রক্ষার্থে শিবলিঙ্গ স্থাপন করেছে। এই জায়গার মাপঝোপ নিয়ে ঝামেলা আছে।আমরা দেখছি,আমাদের নজরে আসছে।
Leave a Reply