শাকিল আহমেদ,নড়াইলঃ
নড়াইল সদর উপজেলার মির্জাপুর ইউনাইটেড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় অপর একজনকে গ্রেপ্তার ও মির্জাপুর পুলিশ ফাঁড়ির এস আই মোরসালিন কে প্রত্যাহার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে যশোরের মনিহার সিনেমা হলের সামনে থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তার নূর-নবী (৩৭) নড়াইল সদর উপজেলার কলোড়া ইউনিয়নের গোবরা গ্রামের মৃত ফয়েজ চৌকিদারের ছেলে। তিনি ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালান। গতকাল রাতেই তাঁকে সদর থানায় নেওয়া হয়।
পুলিশ জানায়, ঘটনার দিন নূর-নবী খুবই বেপরোয়া ছিলেন। তাঁকে সামাল দেওয়া কঠিন হচ্ছিল। এ নিয়ে ওই ঘটনায় পাঁচজন গ্রেপ্তার হলেন। এর আগে পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করে। তাঁরা হলেন নড়াইল সদর উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মনিরুল ইসলাম ওরফে রুবেল (২৭), ব্যবসায়ী মো. শাওন খান (২৮) ও ইজিবাইকচালক সৈয়দ রিমন আলী (২২) এবং খুলনার সরকারি বিএল কলেজে স্নাতক (সম্মান) শেষ বর্ষের ছাত্র রহমতুল্লাহ বিশ্বাস (২৪)। তাঁদের মধ্যে প্রথম তিনজনের বাড়ি সদর উপজেলার মির্জাপুর গ্রামে। আর রহমতুল্লাহের বাড়ি রুখালি গ্রামে।
পুলিশ আরও জানায়, আগে গ্রেপ্তার হওয়া ওই চার আসামির প্রত্যেকের তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ সোমবার তাঁদের রিমান্ড শুরু হবে। ওই ঘটনায় ২৭ জুন পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ১৭০ থেকে ১৮০ জনের নামে মামলা করে।
রোববার রাতে নূর-নবীকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মাহামুদুর রহমান আজ সকাল ১০টায় জানান, তাঁকে কিছুক্ষণের মধ্যে আদালতে নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, গত ১৭ জুন ওই কলেজের একাদশ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী নিজের ফেসবুকে ভারতের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল বিজেপির বহিষ্কৃত মুখপাত্র নূপুর শর্মাকে প্রণাম জানিয়ে ছবিসহ একটি পোস্ট দেন।
এ নিয়ে উত্তেজনা তৈরি হলে ১৮ জুন অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস কলেজশিক্ষক, ওই শিক্ষার্থীর বাবা ও কলেজ পরিচালনা পরিষদের কয়েক সদস্যকে ডেকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। আলোচনায় নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, কলেজ ক্যাম্পাসে পুলিশ ডেকে শিক্ষার্থীকে তাদের কাছে সোপর্দ করা হয়। পুলিশ সদস্যরা ওই শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাস থেকে নিয়ে যেতে চাইলে উত্তেজিত ছাত্র ও বহিরাগত কয়েকজন বাধা দেন। তখন জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে বিষয়টি জানানো হয়।
বিকেল চারটার দিকে শিক্ষক স্বপন কুমার বিশ্বাস ও ওই শিক্ষার্থীকে কলেজের দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষ থেকে বের করা হয়। নিচতলার কলাপসিবল গেটের সামনে আনার পর তাঁদের গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেওয়া হয়।