আবু সাঈদ (স্পেশাল করসপনডেন্ট)
বাংলাদেশের এক মেধাবী যার নাম আবরার ফাহাদ,
১৯৯৮ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। রাজধানীর নটরডেম কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক ধাপ শেষ করে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ভর্তি হন।
বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেক্ট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী আবরার শেরে বাংলা হলের ১০১১ নম্বর রুমে থাকতেন। তবে সেই আবরার এখন আর জীবিত নেই। রয়ে গেছে আবরারের ১০১১ নম্বর কক্ষের স্মৃতি ও শেরে বাংলা হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে রাতের আঁধারে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা।
সেই ঘটনা ও আবরারকে নানাবিধ আয়োজন-ঘটনাপ্রবাহে নেটিজেনরা স্মরণ করে থাকেন। সম্প্রতি আবরারের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ বুয়েটে ভর্তির মেধা তালিকায় ৪৫০তম স্থান করে নিয়েছেন। এ নিয়ে নতুন করে আলোচনায় আবরার ফাহাদ।
এদিকে উদয় দত্ত নামে একজন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো দিয়ে আবরার ফাহাদকে এঁকেছেন। পরে ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে 'Udoy Datta' পেইজ থেকে শুক্রবার (১ জুলাই) ৯টা ২৬ মিনিটে আপলোড করা হয়। ছবিটির চিত্রশিল্পী উদয় কুমার দত্ত, মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় থানার কাক্কোল গ্রামের মিনতী রানী দত্ত ও আনন্দ মোহন দত্ত দম্পতির সন্তান। রাওয়ান ইবনে রমজান স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এসএসসি পাস করার পর ঝিটকা খাজা রহমত আলী ডিগ্রি কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবেন তিনি।
প্রায় এক বছর যাবত মুঠোফোনেই বিভিন্ন ব্যক্তির ছবি এঁকেছেন উদয়। এ ব্যাপারে তিনি জানান, প্রায় দেড় বছর আগে হাতে স্মার্ট ফোন পাই। এমনিতেও ছোটবেলা থেকে খাতা-কলমে আঁকাআঁকি করা হতো। তো সেই অভিজ্ঞতায় মোবাইলে কিছু করার ইচ্ছা থেকেই।
এদিকে নেটিজেনরা ছবিটি নিয়ে নানান প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। আবরার ফাহাদের স্মৃতি স্মরণ করেছেন তারা। অনেকেই আবরারের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন। কেউ কেউ আবার আবরার ফাহাদের নাম বুয়েটের হল নামকরণের দাবি জানিয়েছেন।
এস. এম. পারভেজ জানিয়েছেন, আবরার ফাহাদকে যেন কেউ না ভুলে না যাই, সেজন্য তার নামে বুয়েট ক্যাম্পাসে হল বানানো হোক।
শহিদুল ইসলাম স্বপন বলেছেন, তুমি আমার ছেলের মত, আমি দোয়া করি আল্লাহ তোমাকে জান্নাত দান করুন। সেই দিন আসবে যেদিন তোমার মৃত্যু দিবস জাতির সবাই পালন করবে
মো. শাহিদুল আলম মন্তব্য করেছেন, বাংলাদেশ হারালো একজন মেধাবী তরুণ, মা হারালো তার স্বপ্ন। আবরার হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
প্রসঙ্গত, বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতারা আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করেন। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে নিশ্চিত করা হয় যে, শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে ভোঁতা জিনিসের মাধ্যমে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সন্দেহ করে যে, আবরারকে তার সাম্প্রতিক একটি ফেসবুক পোস্টের কারণে আক্রমণ করা হয়েছিল, যা ভারতের সাথে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক কিছু চুক্তির সমালোচনা বলে মনে হয়েছিল।
এ নিয়ে দেশব্যাপী প্রতিবাদ হয়। হত্যাকান্ডের পরপরই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিলের পর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে তাদেরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন। পরে মামলার বিচারকার্য দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে শুরু করে অভিযুক্তদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেন আদালত।