ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি:- ঠাকুরগাঁও সদর থানার অন্তর্গত ৭ চিলারং ইউনিয়নের ভেলাজান কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্য সেবা কর্মকর্তার অসাধু আচরণের স্বাস্থ্য সেবা পেতে আসা জনসাধারণের ভোগান্তির অন্ত নেই। গত প্রায় ২-৩ বছর পূর্বে ভেলাজান কমিউনিটি ক্লিনিকের কর্মকর্তা (CHCP) হিসেবে দায়িত্ব প্রাপ্ত হয়ে আসা ওয়াজেদ আলী, পিতা-মৃত চেহারু মোহাম্মদ গ্রাম ও ডাকঘর ভেলাজান, উপজেলা ও জেলা ঠাকুরগাঁও এর বিরুদ্ধে।
অনুসন্ধান করে ও স্থানীয় এলাকাবাসীর (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) সাথে কথা বলে জানা যায় , ওয়াজেদ আলীর বাড়ির সংলগ্ন কমিউনিটি ক্লিনিক হওয়ায় ওয়াজেদ আলী ক্লিনিকের নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে, নিজ কর্মস্থল কমিউনিটি ক্লিনিকে সময়মত উপস্থিত হন না, অনেক সময় ক্লিনিকের দরজা খোলা রেখেই বাড়িতে বা ব্যক্তিগত কাজে বাইরে চলে যান। ২-৫ টাকা ছাড়া ওষুধ দেন না, টাকা না দিলে মানুষের সাথে অসাধু আচরণের মাধ্যমে অপমান অপদস্থ করে তাড়িয়ে দেন ।নিজের স্ত্রীর ইউপি নির্বাচনে যারা ভোট দেয়নি তাদের স্বাস্থ্য সেবা দেন না, নিজের পছন্দের লোকদের বাড়িতে গোপনে ওষুধ দেন আবার অপছন্দের কাউকে ওষুধ দেন না, বলেন ওষুধ শেষ হয়ে গেছে। ক্লিনিকের ওষুধ বাড়িতে সংরক্ষণ করেন । সেবা গ্রহীতা গেলেই এককথা ওষুধ নেই, প্যারাসিটামল, হিস্টাসিন, আইরন আর ভিটামিন বি কমপ্লেক্স এর সামান্য নামমাত্র ওষুধ পাওয়া যায়। কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করতে আসার দুই তৃতীয়াংশ মানুষ এই স্বাস্থ্যসেবা না পেয়ে অপমান অপদস্ত হয়ে বাড়িতে ফেরত যান যা এলাকার জনসাধারণের মধ্যে ব্যাপক সমালোচনা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়ে এলাকার মানুষের মাঝে নিন্দার উদ্যেগ হয়েছে। এবং হত দরিদ্র অসহায় মানুষরা কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সেবা হতে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন।
স্থানীয় সুশীল সমাজের পক্ষ থেকে আমিনুজ্জামান নামে এক ব্যক্তি জানান যে, ভেলাজান কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবা গ্রহণ করতে আসা জনসাধারণের মাঝে ব্যাপক সমালোচনা চলছে, সেবাগ্রহীতা ঠিক মতো স্বাস্থ্য সেবা পাচ্ছেন না,সেবা গ্রহীতা গেলেই এককথা ওষুধ নেই, প্যারাসিটামল, হিস্টাসিন, আইরন আর ভিটামিন বি কমপ্লেক্স এর সামান্য নামমাত্র ওষুধ পাওয়া যায়। কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করতে আসা মানুষেরা কর্মকর্তার আচরণে অসন্তুষ্ট হয়ে কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাস্থ্য সেবা নিতে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন, যার ফলে সরকারের উন্নয়ন প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। এবং আমার এলাকাবাসীসহ আমি নিজে একজন ভুক্তভোগী।
তবে বিষয়টি অস্বীকার করে ওই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ওয়াজেদ আলী জানান, এটি ভিত্তিহীন এবং বানোয়াট। আমার কাগজ পাতি ঠিক আছে, আমার এলাকায় ছয় হাজার জন স্বাস্থ্য সেবা গ্রহীতা রয়েছে আমি বিশ হাজার লোককে স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে আসছি।
ভেলাজান কমিউনিটি ক্লিনিকের সভাপতি শহীদুল ইসলাম শহীদ জানান যে, অভিযোগের ভিত্তি রয়েছে, তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি অভিযোগ পেয়েছি এবং স্থানীয় জনসাধারণের মাধ্যমে অবগত হয়েছি। পাঁচ ছয় মাস পূর্বে আমি সভাপতি হওয়ার পর একবার শুধু আমাকে ডেকেছেন এবং স্বাক্ষর নিয়ে ওষুধ তুলেছেন, এরপর আজ অবধি উনি আমাকে ডাকেন নি কিংবা ঔষধ তোলার জন্য স্বাক্ষর নেয়নি। তিনি ওষুধ তুলেছেন কিনা বা মানুষকে স্বাস্থ্য সেবা কিভাবে দেন আমি নিজেই সে বিষয়ে স্পষ্ট না । অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে কয়েকবার সভা ডাকতে বলা হলেও তিনি বিষয়টি কর্ণপাত না করে সভার আয়োজন করেন নি। বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত করে অভিযোগ প্রমাণ হলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অভিযোগের ভিত্তিতে কথা বলার জন্য ঠাকুরগাঁও জেলার সিভিল সার্জন ডা: নূর নেওয়াজ আহাম্মেদ এর সাথে মুঠোফোনে কয়েক বার যোগাযোগ করা হলে মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।