আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
অর্থনৈতিক সংকটে পড়া শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া ঠেকিয়ে দিয়েছেন দেশটির অভিবাসন কর্মকর্তারা। দেশটির গণমাধ্যম কলম্বো গেজেটে আজ মঙ্গলবার এ কথা বলা হয়েছে।
এর আগে গোতাবায়ার ছোট ভাই ও দেশটির সাবেক অর্থমন্ত্রী বাসিল রাজাপক্ষ গোপনে দেশ ছেড়ে দুবাই পালিয়ে যেতে চেয়েছিলেন, কিন্তু দেশটির সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের বাধার কারণে তাঁর সেই চেষ্টা ভণ্ডুল হয়েছে।
কর্মকর্তারা বলেন, ৭৪ বছর বয়সী গোতাবায়া রাজাপক্ষ স্ত্রীসহ কলম্বোর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পাশে সামরিক ঘাঁটিতে ছিলেন। তিনি গতকাল সোমবার রাতে সেখানেই ছিলেন। সেখান থেকেই আজ বিমানবন্দরে আসেন।
পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করেছেন গোতাবায়া রাজাপক্ষে। গতকাল তিনি পদত্যাগপত্রে সই করেছেন বলে জানা গেছে। প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের পদত্যাগপত্র কার্যকর হবে কাল বুধবার থেকে। দেশটির পার্লামেন্টের স্পিকার মাহিন্দা ইয়াপা আবেবর্ধনে কাল জনসমক্ষে প্রেসিডেন্টের পদত্যাগপত্র জাতির কাছে ঘোষণা করবেন। প্রেসিডেন্টের পক্ষে থেকে বলা হয়েছে, ‘শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের’ জন্য পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। এর মধ্য দেশ ছেড়ে যাওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলেন তিনি।
এএফপির খবরে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া আজ বিমানবন্দরে গিয়ে ভিআইপি স্যুইটে অপেক্ষা করেন। নিরাপত্তার জন্যই প্রেসিডেন্টকে সেখানে রাখা হয়। এরপর তার পাসপোর্ট সিল মারার জন্য অভিবাসন কর্মকর্তাদের ভিআইপি স্যুইটে যেতে বলা হয়। তাঁরা অস্বীকার করেন পাসপোর্ট সিল মারতে।
তবে বর্তমানে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া কোথায় আছেন, সে সম্পর্কে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি।
এর আগে ভারতের দুই সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি ও হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, আজ সকালে দুবাই যাওয়ার উদ্দেশে গোপনে কলম্বো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি টার্মিনালে হাজির হন বাসিল।
কিন্তু বিমানবন্দরে থাকা লোকজন তাঁকে চিনে ফেলেন এবং অল্প সময়ের মধ্যেই একদল বিক্ষোভকারী বিমানবন্দর ঘেরাও করে অবস্থান নেন। এ পরিস্থিতিতে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বাসিল রাজাপক্ষকে বিদেশভ্রমণজনিত ক্লিয়ারেন্স দিতে অপারগতা জানালে অবশেষে বিমানবন্দর ছেড়ে ফিরে যান শ্রীলঙ্কার সাবেক অর্থমন্ত্রী। বর্তমানে তিনি কোথায় আছেন, সে সম্পর্কে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি—তবে এ ঘটনার পরকলম্বোর গুরুত্বপূর্ণ রাজপথ ও তল্লাশিচৌকিতে অবস্থান নিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। শ্রীলঙ্কার কোনো রাজনৈতিক নেতা, বিশেষ করে রাজাপক্ষের পরিবারের অন্য কোনো সদস্যের পালিয়ে যাওয়া ঠেকাতেই এই অবস্থান।