নিউজ ডেস্ক :
করোনার ভুয়া রিপোর্ট দেয়ায় জেকেজি হেলথকেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা চৌধুরী এবং সিইও আরিফ চৌধুরীসহ আটজনের বিরুদ্ধে মামলার রায়ের দিন মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) ধার্য করেছেন আদালত।
আলোচিত এ মামলার রায় মঙ্গলবার দেয়ার কথা রয়েছে। এরইমধ্যে মামলার ৪০ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন আদালতে।
সারাদেশ যখন করোনাভাইরাস আতঙ্কে থমকে ছিল, সেই মুহূর্তে করোনার নমুনা পরীক্ষা নিয়ে প্রতারণার আশ্রয় নেয় ডা. সাবরিনা চৌধুরীর প্রতিষ্ঠান জেকেজি হেলথকেয়ার। স্বাস্থ্য অধিদফতরে আবেদন করে পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহের দায়িত্ব নিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি।
২০২০ সালের মাঝামাঝি সময়ে অভিযোগ আসে, সরকারের কাছ থেকে বিনামূল্যে নমুনা সংগ্রহের অনুমতি নিয়ে বুকিং বিডি ও হেলথকেয়ার নামে দুটি সাইটের মাধ্যমে টাকা নিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা চৌধুরী এবং সিইও আরিফ চৌধুরী।
জেকেজি হেলথকেয়ারের বিরুদ্ধে অভিযোগ-করোনার নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা না করেই ১৫ হাজার ৪৬০ টেস্টের ভুয়া রিপোর্ট দেয়া। ২০২০ সালের ২৩ জুন প্রতিষ্ঠানটিতে অভিযান চালিয়ে মিলে নানা অনিয়মের তথ্য। সিলগালা করে দেওয়া হয় জেকেজি।
গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, জেকেজির ৭ থেকে ৮ জন কর্মী এ সকল ভুয়া রিপোর্ট তৈরির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
এ ঘটনায় জেকেজি হেলথকেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনাকে ২০২০ সালের ১২ জুলাই গ্রেফতার করে পুলিশ। এর আগে ২৪ জুন ডা. সাবরিনার স্বামী জেকেজি হেলথকেয়ারের প্রধান নির্বাহী আরিফুল চৌধুরীসহ আরও ছয়জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। একই বছরের ৫ আগস্ট করোনা রিপোর্ট প্রতারণার অভিযোগে ডা. সাবরিনা চৌধুরীসহ আটজনের বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে অভিযোগপত্র দেয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। ২০ আগস্ট শুরু হয় বিচার।
শুধু করোনার রিপোর্ট জালিয়াতি নয়, দ্বৈত ভোটার হওয়া এবং একাধিক জাতীয় পরিচয়পত্র রাখার অভিযোগে ওঠে সাবরিনার বিরুদ্ধে। ২০২০ সালের ৩০ আগস্ট তার বিরুদ্ধে মামলা করে নির্বাচন কমিশন। একইসঙ্গে সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত অবস্থায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে যুক্ত হয়ে জালিয়াতি ও প্রতারণার সঙ্গে সম্পৃক্ততা থাকায় সাবরিনাকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ২০১৫ সাল থেকে জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটে চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত ছিলেন সাবরিনা।
মঙ্গলবার ডা. সাবরিনা চৌধুরীসহ নয়জনের বিরুদ্ধে করোনার ভুয়া রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগে করা মামলার রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেছেন আদালত।
অভিযোগ প্রমাণিত হলে ডা. সাবরিনার সাত বছরের কারাদণ্ড হতে পারে বলে মনে করছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা।