নিউজ ডেস্ক :
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অনশন করায় রোকসানা আক্তার (৩৮) নামে এক স্বামী পরিত্যক্তা নারীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার (১৮ জুলাই) দুপুরে উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের হিনানপুর দেওয়ান বাড়ি গ্রামের প্রেমিক মনির হোসেনের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
সোনারগাঁ থানা সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের হিনানপুর দেওয়ান বাড়ি গ্রামের মৃত রাজু মিয়ার ছেলে মনির হোসেনের সঙ্গে বাইশটেকি গ্রামের মৃত মনু মিয়ার মেয়ে স্বামী পরিত্যক্তা রোকসানা আক্তারের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি উভয়ের পরিবারসহ এলাকার লোকজন অবগত রয়েছেন।
সোমবার ভোরে প্রেমিক মনিরের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অবস্থান নেন রোকসানা। এ সময় মনিরের বাড়ির লোকজন তাকে একাধিকবার মারধর করে বাড়ির বাইরে বের করে দিলেও রোকসানা অনড় অবস্থানে থাকেন। পরে দুপুরে মনির, তার ভাই গোলজার, খোকন, ছেলে রানা ও মনিরের স্ত্রীসহ ৭-৮ জনের একটি দল তাকে বেধড়ক পিটিয়ে রক্তাক্ত করেন। রোকসানার অবস্থার অবনতি হলে তারাই তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে মৃত্যুর খবর জেনে তারা হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন, রোকসানা নামের এক নারীর মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে রাখা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় তার সঙ্গে আসা কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
নিহতের মা শাফিয়া বেগম বলেন, রোকসানাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর সে মারা যায়। আমার মেয়েকে নির্যাতন ও মারধর করা হয়েছে মর্মে থানায় অভিযোগ দিয়েছি।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে তালতলা ফাঁড়ি পুলিশের উপপরিদর্শক রাজু আহম্মেদ জানান, স্বামী পরিত্যক্তা রোকসানার সঙ্গে মনির হোসেনের দীর্ঘদিন ধরে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন স্থানে তারা একাধিকবার উভয়ের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয়। বিষয়টি উভয়ের পরিবারসহ এলাকার লোকজনের জানাজানি হয়। দুপুরে প্রেমিক মনিরের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অবস্থান নেয় রোকসানা। এ সময় মনিরের বাড়ির লোকজন তাকে বাড়ি থেকে একাধিকবার টেনে বের করে দেয়। পরে মনিরের স্ত্রীসহ ৭ থেকে ৮ জন মিলে লোহার পাইপ ও রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে আশপাশের লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যায় তার মৃত্যু হয়। ঘটনার পর থেকে জড়িতরা পালিয়ে যায় তাদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের অভিযান চলছে। এ ঘটনায় মামলা দায়ের প্রস্তুতি চলছে।