ভারতীয় হাই কমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামীকে সাথে নিয়ে নাটোরে আজ রোববার হাই-টেক পার্কের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি। নাটোরের সিংড়া উপজেলা শেরকোলে ৯.২৮ একর জমির উপরে বাংলাদেশ হাই- টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ ১৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে হাই-টেক পার্ক নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে তিন হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিসহ প্রতি বছর এক হাজার তরুণ-তরুণী প্রশিক্ষণের সুযোগ পাবে। হাই-টেক পার্কে ষ্টিল স্ট্রাকচারের সাত তলা মাল্টিটেনেন্ট ভবন, তিন তলা ডরমেটরি ভবন, একটি সিনেপ্লেক্স ভবন, খেলার মাঠ থাকছে। ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন পরবর্ত্তী সিংড়া উপজেলা মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র দক্ষ নেতৃত্ব এবং ডিজিটাল আর্কিটেক সজীব ওয়াজেদ জয়ের তত্ত্বাবধান ও পরামর্শে প্রযুক্তির উদ্ভাবনী সংস্কৃতিতে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ।
এখন আর বাংলাদেশ শ্রম ঘন অর্থনীতির দেশ নয়, তথ্য প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ একটি দেশ। কায়িক পরিশ্রমের জন্যে কষ্টকর প্রবাস জীবন নয়, তথ্য প্রযুক্তির প্রশিক্ষণ গ্রহন করে এদেশের তরুণ- রুণীরা ঘরে বসেই বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন করছেন। তথ্য প্রযুক্তি খাতে ২০ লক্ষ তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান তৈরী হয়েছে। তথ্য প্রযুক্তি খাতে ১.৪ বিলিয়ন ডলার উপার্জন করছে বাংলাদেশ। পলক বলেন, ২০৪১ সালের প্রযুক্তি নির্ভর মেধাবী উন্নত দেশ গড়তে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
তারুণ্যের অফুরান শক্তিতে প্রযুক্তি নির্ভর দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করাই আমাদের লক্ষ্য। এই লক্ষ্য পূরণে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, রোবটিক্স, সাইবার সিকিউরিটি এবং মাইক্রো প্রসেসর নিয়ে কাজ করছে দেশের প্রযুক্তি খাত। আমাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে মেধাভিত্তিক শীর্ষ প্রযুক্তির দেশে পরিণত হবে বাংলাদেশ। আর এই লক্ষ্য পূরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র সততা, সাহসিকতা ও দূরদর্শী নেতৃত্বের কোন বিকল্প নেই। প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের মানুষের ভাষা, সংস্কৃতি এবং আবহাওয়া একই।
আমরা দুই দেশের মানুষের চলমান বন্ধুত্বকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের এক হাজার ৯৮৪ সেনা সদস্যের জীবন উৎসর্গসহ ভারতের অসামান্য অবদানকে এদেশের মানুষ শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতায় স্মরণ করে। সম্মানীত অতিথির বক্তব্যে ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী বলেন, বাংলাদেশের ১২টি জেলায় হাই-টেক পার্ক স্থাপন কার্যক্রমে বিনিয়োগসহ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে যৌথভাবে কাজ করছে বাংলাদেশ-ভারত। এসব পার্ক স্থাপন কার্যক্রম সম্পন্ন হলে এদেশের তরুণ-তরুণীরা উপকৃত হবেন। ভবিষ্যতে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক আরো উন্নত হবে এবং অর্থনৈতিক অংশীরারিত্ব আরো জোরদার হবে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডাঃ বিকর্ণ কুমার ঘোষ, নাটোরের জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ এবং পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা। অনুষ্ঠান শেষে প্রযুক্তিতে সফল ১৯জন উদ্যোক্তার হাতে ল্যাপটপ তুলে দেন অতিথিবৃন্দ। ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন শেষে প্রতিমন্ত্রী পলক ভারতীয় হাই কমিশনারকে সাথে নিয়ে নির্মাণাধীন হাই-টেক পার্ক প্রাঙ্গণে গাছের চারা রোপন করেন।