বুলবুল হাসান, বেড়া পাবনা প্রতিনিধি :
পাবনার বেড়ায় এ বছর পাটের ব্যপক ফলন হয়েছে, পাট চাষিদের মুখে হাসি ফুটলেও তা মলিন হয়ে পড়েছে পর্যাপ্ত পানির অভাবের কারণে পাট জাগ দিতে না পাড়ায়, এতে বিপাকে পড়েছে বেড়া উপজেলার পাট চাষিরা। তীব্র খরায় অধিকাংশ ডোবা -নালা, খাল বিল, পুকুরের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় কাঁচা পাট কেটে পাট জাগ দিতে পারছেনা। বিভিন্ন জায়গায় পানির অভাবে ক্ষেতেই শুকিয়ে যাচ্ছে পাটগাছ। শীঘ্রই ভারী বৃষ্টি না হলে পাট চাষিদের গলার কাটা হয়ে উঠবে বলে মনে করছেন পাট চাষিরা। অনেকে আবার পাট কেটে ক্ষেতেই রেখে দিচ্ছেন। অপেক্ষা করছেন বৃষ্টির জন্য।
সরেজমিনে দেখা যায় পাবনা জেলার বেড়া উপজেলার সানিলা, ডাক বাংলা, মোহনগঞ্জ, হাটুরিয়া, নাকালিয়া, চাকলা, তারাপুর, কৈটলা, নতুন ভারেঙ্গা, সিংহাসন, র্দীঘলকান্দি সহ বিভিন্ন স্থানে ঘুরে পাট চাষিদের এমন দুর্দশা দেখা যায়। বৃষ্টির ভরা মৌসুমে বৃষ্টির দেখা না পাওয়ায় পাট চাষিরা একদিকে যেমন চিন্তিত রয়েছেন, অপর দিকে কৃষকরা রোপা আমন ধান বপন করতে পারছেন না। পাট কাটার পরে কৃষকেরা রোপা আমন বপন করে সেটাও সম্ভব হচ্ছেনা । এতে উভয় দিকে ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। রোপা আমন ধান চাষ করতে না পারলে কৃষকের খাদ্য ঘাটতি দেখা দিবে এমন সংশয়ে রয়েছে।
বেড়া উপজেলার নতুন ভারেঙ্গা গ্রামের পটচাষি আব্দুল হামিদ বলেন, এ বছর পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় কোথাও পাট জাগ দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত পানি নেই। সেচ দিয়ে পাট জাগ দিতে হচ্ছে। অন্যান্য বছরের চেয়ে ভালো ফলনও হয়েছে।
বেড়া উপজেলার হাটুরিয়া গ্রামের বক্কার বলেন, এ বছর দুই বিঘা জমিতে পাট লাগিয়েছি। ভালো ফলন হয়েছে শ্রমিক আর সেচ খরচ দিয়ে এ বছর ব্যয় বেশি। বৃষ্টি কম হওয়ায় শ্যালোমেশিনে সেচ দিয়ে পাট জাগ দিতে হচ্ছে। ফলে খরচ আরও ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা বেড়ে যাচ্ছে। সরকারের কাছে আমাদের দাবি কৃষকদের যেনো পাটের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করা হয় ।
এ বিষয়ে বেড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নুসরাত জাহান জানান, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ৩৪ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে। তবে যে বৃষ্টি হয়েছে তা পাট পচানোর জন্য যথেষ্ট নয়। বেশ কিছু দিনের খরা আর অনাবৃষ্টির কারণে পাটচাষিরা পড়েছেন দুশ্চিন্তায়। পর্যাপ্ত বৃষ্টি হলে এ সমস্যা দূর হবে। বৃষ্টি না হওয়ায চাষিদের খরচ অন্যান্য বারের তুলনায় বেশি হয়ে যাচ্ছে। বর্তমান বাজারমূল্য যা আছে তাতে চাষিদের লোকসান হবে না।