নিউজ ডেস্ক :
প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ডলার সংরক্ষণ এবং দর নিয়ে বাড়তি মুনাফার অভিযোগে ছয় ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধানকে দায়িত্ব থেকে অপসারণের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকগুলো হচ্ছে ডাচ বাংলা, সিটি, প্রাইম, সাউথইস্ট, ব্র্যাক এবং স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড।
এ নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, ট্রেজারি অপারেশনে অতিরিক্ত মুনাফা করায় পাঁচটি দেশি এবং একটি বিদেশি ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ছয় ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধানকে অপসারণ করতে সোমবার ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের চিঠি দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সম্প্রতি ডলারের বাজারে অস্থিরতা তৈরি হওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলো পরিদর্শনে গিয়ে ডলার কেনাবেচার তথ্য পর্যালোচনা করে। তাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেখতে পায়, ছয় ব্যাংকের কোনো কোনোটি ডলার কেনাবেচা করে গত মে মাসে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪০০ শতাংশ পর্যন্ত মুনাফা করেছে। যার মাধ্যমে ডলার বাজারকে আরো অস্থিতিশীল করে তোলা হয় বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ছয় ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ডলার বিক্রি করে অস্বাভাবিক মুনাফা করেছে কয়েকটি ব্যাংক। এজন্য তাদের ট্রেজারি বিভাগের প্রধানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
নিকট অতীতে একসঙ্গে শীর্ষ পর্যায়ের ছয় ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ ছয় কর্মকর্তাকে সরিয়ে দেয়ার ঘটনা এটাই প্রথম। এর আগে ২০০২ সালে ওম প্রকাশ আগরওয়াল নামের এক ব্যবসায়ী জালিয়াতির মাধ্যমে পাঁচটি ব্যাংক থেকে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। ওই ঘটনায় একসঙ্গে পাঁচ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে (এমডি) অপসারণ করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।
আমদানি খরচ বাড়ায় গত মে মাস থেকে দেশে ডলারের সংকট চলছে। রপ্তানি ও প্রবাসী আয় দিয়ে আমদানি দায় শোধ করা যাচ্ছে না। এর ফলে বেড়ে গেছে ডলারের দাম। বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের দাম গত তিন মাসে আন্তঃব্যাংক লেনদেনের ক্ষেত্রে ৮৬ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯৫ টাকা নির্ধারণ করেছে। তবে ওই দামে শুধু বাংলাদেশ ব্যাংকই ডলার বিক্রি করছে। অন্যান্য ব্যাংকে ডলার লেনদেন হচ্ছে আরো বেশি দামে।
বিভিন্ন ব্যাংক প্রবাসী আয় আনছে ১১২-১১৩ টাকায়। আর রপ্তানি বিল নগদায়ন হচ্ছে ১০৪-১০৫ টাকায়। ফলে আমদানিকারকদের ঋণপত্র নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে প্রতি ডলারের দাম রাখা হচ্ছে ১০৭-১০৮ টাকা।
এদিকে মার্কিন ডলারের বিপরীতে সোমবার আরো ৩০ পয়সা দর হারিয়েছে টাকা। আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে সোমবার এক ডলারের জন্য খরচ করতে হয়েছে ৯৫ টাকা।