নড়াইল প্রতিনিধিঃ
নড়াইল সদর উপজেলার ৮নং কলোড়া ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান আশিষ কুমার বিশ্বাস ও তার প্রতি ওয়ার্ডে নিয়োগ দেওয়া বিশেষ এজেন্ট ও কতিপয় অসাধু মেম্বারদের যোগসাজশে অভিনব কৌশলে প্রধানমন্ত্রীর উপহার বয়স্ক ভাতার টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানার জন্য কলোড়া ইউনিয়নের পশ্চিম বাহিড়গ্রামে উপস্থিত হলে ভূক্তভোগী কৃষ্ণ পদ বিশ্বাস (৯০), জানান, চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি অঙ্গত ও স্থানীয় ইউ পি মেম্বার সিফার বিশ্বাসের সহায়তায় বয়স্ক ভাতার জন্য আবেদন করি, চেয়ারম্যান উপস্থিত থেকে আমাদের দিয়ে আবেদন ও পরবর্তীতে সীম কার্ডের মাধ্যমে একাউন্টের কাজ সম্পন্ন করান,কিন্তু সীম কার্ড আমাদের কাছে দেননি, পরবর্তীতে সীম কার্ড চাইলে বলেন এখনো কাজ হয়নি, পরে জানতে পারি আমাদের টাকা তারা উত্তোলন করে নিয়েছে, এ বিষয়ে অঙ্গতের কাছে জানতে গেলে সে খারাপ আচরন করে, এ বিষয়ে চেয়ারম্যানের কাছে গিয়েছিলেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন মেম্বার ও অঙ্গত আমাকে নিয়ে গিয়েছিল চেয়ারম্যানের কাছে, তারা তো চেয়ারম্যানের লোক,
রানী বিশ্বাস (৬৫) এর মেয়ে জানান, আমার মার বয়স্ক ভাতার জন্য কয়েকবার মেম্বারের মাধ্যমে আবেদন করে না হওয়াতে আমি নিজেই যাই নড়াইল সমাজ সেবা অফিসে,আবেদন করি, কয়েকদিন পড়ে অফিসে গিয়ে জানতে পারি আমার মায়ের নামে ভাতার কার্ড হয়েছে,আমাকে অফিস থেকে বলে এই নম্বরে টাকা চলে গেছে, আর বই তোমাদের চেয়ারম্যান অথবা মেম্বারের কাছে খোজ করো,আমি বাড়িতে এসে সেই নাম্বারে ফোন দিয়ে বলি আপনার নাম্বারে আমার মায়ের বয়স্কভাতার টাকা চলে গেছে, সে অস্বীকার করে ফোন কেটে দেয়, এর কিছুক্ষণ পরে সেই নাম্বার থেকে ফোন দিয়ে আমাকে ভয়ভীতি দেখায়, আমি তার কথা শুনে ফোন রেখে দেই, এর পর আবার ফোন দিয়ে আমাকে বলে তুমি দুই হাজার টাকা নিয়ে ঝামেলা শেষ করো, আমি তাতে রাজি হইনি, এখন জানতে পেরেছি আমার মায়ের বয়স্ক ভাতার টাকা যে মেরেছে সে ছোট মুশুড়িয়া গ্রামের অনন্ত,সেও চেয়াম্যানের লোক,
বিদ্যান ঘোষাল জানান, অঙ্গত আমার ভাই, সে চেয়ারম্যানের লোক। সে, মেম্বার ও চেয়ারম্যান যোগসাজশ করে আমার বয়স্ক ভাতার টাকা মেরে দিয়েছে, আমি কার কাছে বিচার চাইবো?
এবিষয়ে ভূক্তভোগীরা জানান আমরা মৌখিক ভাবে চেয়ারম্যান আশিষের কাছে জানালে কোন পদক্ষেপ নেয়নি চেয়ারম্যান। তাই প্রতিকার পাওয়ার আশায় আমরা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকের স্মরনাপন্ন হয়েছি।
এ বিষয়ে কলোড়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি শাহরিয়ার মুক্ত ও সাধারণ সম্পাদক উৎপল কুমার বিশ্বাস এ প্রতিবেদককে জানান, ২০২১-২২ অর্থ বছরের অসহায় হতদরিদ্রদের প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসাবে বয়স্ক ভাতা হিসাবে ইউনিয়ন পরিষদ কতৃক তালিকা ভুক্ত করে বিকাশ এ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ছয় হাজার টাকা দেওয়ার কথা।
এরই ধারাবাহিকতায় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের নির্দেশে কলোড়া ইউনিয়নে বাছাইকৃত নতুন ১৭০ ও ১২৯ মোট নতুন ২৯৯ জনের তালিকা নিবন্ধিত হয়ে আসে। এর মধ্যে প্রায় ১৭০ জনের বয়স্ক ভাতার টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।
তাদের মধ্যে উল্লেখ্য অরবিন্দ সমাদ্দার (৬৫) সাং -আগদিয়ার চর, গৌয়ুর রায় (৭৫) সাং- আগদিয়ারচর, হিরামতি মালাকার, স্বামী হিমেল মালাকার,
প্রভাষ কুমার বিশ্বাস, সাং আগদিয়ার চর, কৃষ্ণ পদ বিশ্বাস, রানী বিশ্বাস, ও বিদ্যান ঘোষাল সাং পশ্চিম বাহিরগ্রাম সহ আরও অনেকের বয়স্কভাতার টাকা কলোড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেম্বাররা যোগসাজস করে প্রতারনার মাধ্যমে মেড়ে দিয়েছে। আমরা ডিসি মহোদয় সহ সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করেছি। ভূক্তভোগীরা যাতে প্রতিকার পায় আমরা সে জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।