নিউজ ডেস্কঃ
একজন শিক্ষার্থীর প্রকৃত মানুষরূপে গড়ে ওঠার পেছনে বাবা-মার চেয়ে শিক্ষকের অবদান কোনো অংশে কম নয়। মহান আল্লাহতায়ালাও শিক্ষকদের আলাদা মর্যাদা ও সম্মান দান করেছেন। ফলে মুসলিম সমাজে শিক্ষকমাত্রই বিশেষ মর্যাদা ও সম্মানের অধিকারী। কারণ শিক্ষকরা জাতির প্রধান চালিকাশক্তি।
গত বছর ১৯ জুলাই , ২০২১ তারিখে বেড়া বালিকা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নায়েব আলীকে বিধি বহির্ভুতভাবে তৎকালীন এডহক কমিটি সাময়িক বহিস্কার করে। বিধি অনুযায়ী বহিস্কার কালিন সময়ে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক / কর্মচারী বেতন ভাতার অর্ধেক প্রাপ্য এবং প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত থেকে আলাদা হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করবেন। কিন্তু তাকে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
সর্বোপরি এডহক কমিটি বহিস্কার করার এখতিয়ার রাখে না।
স্থানীয় প্রভাবশালী এক ব্যক্তি নায়েব আলী কে স্কুলে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। প্রধান শিক্ষক স্কুলে গেলে ঐ ব্যাক্তি বিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মচারীদের গালিগালাজ করে ও তাদের হুমকি প্রদান করে।
গত পহেলা জুন নায়েব আলী কিছু সময়ের জন্য স্কুলে গেলে তার কিছুক্ষণ পরেই স্কুলে উক্ত ব্যাক্তি প্রবেশ করে খণ্ডকালীন পিয়ন মনিরকে প্রধান শিক্ষক প্রবেশের অপরাধে তাড়িয়ে দেয়। জনৈক ব্যাক্তি দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠানের পুকুর ভোগদখল করে আসছে এছাড়া স্কুলের জায়গা দখল করে পাশ্ববর্তী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের রান্নাঘর তৈরির চেষ্টা করলে নায়েব আলী তাতে বাধা দেয়। সেই থেকে নায়েব আলীর সাথে তার সম্পর্কের অবনতি ঘটে। তিনি শিক্ষক কর্মচারীদের মধ্যে গ্রুপিং তৈরি করে স্কুলের সর্বনাশ করে চলছে এবং তার ন্যায় অন্যায় আদেশ যে মেনে না নেয় তাকেই সমস্যায় ফেলে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কতিপয় ছাত্রী এই প্রতিবেদকে জানায়, আমাদের প্রধান শিক্ষক সৎ চরিত্রবান ও উত্তম প্রশাসক ছিলেন, আমরা উনাকে পূর্বের ন্যায় স্বপদে দেখতে চাই। তিনি নিউজিল্যান্ড থেকে ট্রেনিং করে এসেছেন। তারা আরও বলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যে প্রনোদিত।
প্রধান শিক্ষক নায়েব আলী জানান, আমি উর্ধতন কতৃপক্ষের সাহায্য এবং শুভদৃষ্টি কামনা করি। বহিস্কারের পর হতে আর্থিক দৈনতার মাঝে আছি।
রতনগঞ্জ বহুমুখি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং বেড়া উপজেলা শিক্ষক সমিতির (ভারপ্রাপ্ত) সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের বলেন, উনি আমাদের সজ্জন সহকর্মী ছিলেন, বেতন ভাতা বন্ধ থাকায় তিনি পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
বেড়া উপজেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি আবু বকর সিদ্দিক বলেন, তিনি আমাদের সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন, তার এই অপসারন কোন ভাবেই মেনে নিতে পারচ্ছি না। একজন শিক্ষক যিনি শিক্ষার্থীদের অন্ধকার থেকে আলোর পথ দেখান নায়েব আলী এমনই একজন শিক্ষক। সমিতির সকল শিক্ষক এই বিষয়ে অত্যন্ত মর্মাহত।তিনি আরও বলেন, একজন শিক্ষক কর্মচারীকে তিন থেকে ছয় মাসের বেশি সময় কাল নিয়ম অনুযায়ী অপসারন করে রাখা যায় না।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার খবির উদ্দিন জানান, বিষয়টি আমি ইউএনও এবং নবনির্বাচিত সভাপতি ও বেড়া পৌর মেয়র এডভোকেট আসিফ শামস রঞ্জন সাহেবর সঙ্গে সম্ভাব্য দিক গুলো নিয়ে আলোচনা করে দ্রুত ব্যাবস্থা করার চেষ্টা করা হবে।