শাহ সাহিদ উদ্দিন
কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি
কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার ইউসুফপুর ইউনিয়নে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিল পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত শুরু হয়। মোঃ আবু তাহের সরকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ হাফিজুর রহমান। এসময় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউনিয়ন পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ জাকারিয়া, মোঃ শাহ আলম মুন্সী, মেহেদী হাসান বিরহমান, মোঃ আনোয়ার হোসেন, মোসলেম উদ্দিন,জামাল হোসেন,রুকন উদ্দিন, মিজানুর রহমান, মোঃ হাসান,মোসা: জোৎস্না আক্তার, মোঃ বাছির, ইউনিয়ন সচিব মোঃ সুমন মিয়া,মোর্শেদা আক্তার মেম্বার সহ আরো অন্যান্য সাবেক মেম্বারগন উপস্থিত ছিলেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জাকারিয়া চেয়ারম্যান বলেন আজ ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস। বাঙালির শোকের দিন। ১৯৭৫ সালের এই দিনে ইতিহাসের নৃশংস ও মর্মস্পর্শী এক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বাংলাদেশের মানুষ হারায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। তিনি আল্লাহর কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বেহেস্ত নসিব করেন। তিনি আরো বলেন শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম যদি না হতো আমরা স্বাংধীন বালাদেশ পেতাম না আমরা একজন বিশ্ব নেতা পেয়েছি বলেই এই স্বাধীনতা পেয়েছি।
জাতির জনক একজন বীরত্ব, ত্যাগ, দৃঢ়প্রত্যয়, নেতৃত্বগুণ ও রাজনীতিক হিসেবে এর সব কটির সম্মিলন জাতি দেখেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মধ্যে, যা সহজেই তাঁকে স্বাধীনতার স্থপতি ও জাতির পিতার মর্যাদায় আসীন করেছে। ঘাতকেরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলেও তিনি স্থান নিয়েছেন বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে। আজ শোকের দিনে বাঙালি তাদের মহান নেতাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে সেনাবাহিনীর কিছুসংখ্যক বিপথগামী সদস্য ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাসভবনে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবার হত্যা করে। বঙ্গবন্ধু ছাড়াও সেই রাতে তাঁর সহধর্মিণী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, তিন ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শিশুপুত্র শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, বঙ্গবন্ধুর একমাত্র ভাই শেখ আবু নাসের, বঙ্গবন্ধুর ফোন পেয়ে তাঁর জীবন বাঁচাতে ছুটে আসা কর্নেল জামিলউদ্দিন আহমেদ, এসবির কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান ও সেনাসদস্য সৈয়দ মাহবুবুল হককে হত্যা করা হয়।
ওই কালরাতেই বিপথগামী সেনাসদস্যদের আরেকটি দল বঙ্গবন্ধুর ভাগনে যুবলীগের নেতা শেখ ফজলুল হক মনির বাসায় হামলা চালিয়ে তাঁকে এবং তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনিকে হত্যা করে। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত ও তাঁর কন্যা বেবি, পুত্র আরিফ সেরনিয়াবাত, নাতি সুকান্ত বাবু, সেরনিয়াবাতের বড় ভাইয়ের ছেলে সজীব সেরনিয়াবাত এবং এক আত্মীয় আবদুল নঈম খানকেও হত্যা করা হয়।
ওই সময় বঙ্গবন্ধুর দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে অবস্থান করায় বেঁচে যান।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ইনডেমনিটি (দায়মুক্তি) অধ্যাদেশের মাধ্যমে বিচারের পথ রুদ্ধ করা হয়। এমনকি খুনিদের দেশের বাইরে বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়। দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রক্ষমতায় আসার পর খুনিদের বিচার শুরু হয়। একই সঙ্গে ১৫ আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস ও এই দিনে সরকারি ছুটিও ঘোষণা করা হয়।
১৯৯৮ সালের ৮ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। পরে উচ্চ আদালত ১২ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। এখন পর্যন্ত ছয় আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। একজন বিদেশে মারা গেছেন। পাঁচজন পলাতক।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন শাহ সোহরাওয়ার্দী নয়ন, মোঃ মোখলেছুর রহমান, শাহ সফিউদ্দিন,মোঃ মোতালেব হোসেন, মোঃ হাসান সরকার, মোঃ তোফায়েল চৌধুরী,মোঃ আওয়াল সরকার, মোঃ রাকিবুল হাসান, মোঃ বাদল মিয়া, আক্তার হোসেন, ইন্জিনিয়ার শাহ রমিজ,আপন আহম্মেদ স্বপন, মোঃ দুলাল মিয়া, সহ আরো অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।