মাসুদ রানা,খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি;
বেগুন চাষে সফল হয়েছেন দিনাজপুরের খানসামা সোহেল। অন্যান্য সবজি চাষের পাশাপাশি বেগুন চাষ করে লাভবান হচ্ছেন স্থানীয় কৃষকরা। শুরুতেই বেগুনের দামও ভাল পাওয়া যায়। বর্তমানে পরিবহণ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো থাকায় এলাকার চাহিদা মিটিয়ে এ বেগুন যাচ্ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন সবজি বাজারে।
কৃষক সোহেল উপজেলার আঙ্গাারপাড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা তিনি গত কয়েক বছর বেগুন চাষ করে লোকসান গুনতে হয়েছিল। তবু এ বছর ৮৫ শতাংশ জমিতে বেগুন চাষ করেন। এ বছর বাজারে বেগুনের চাহিদা বেশি। তাই খরচের দ্বিগুণ টাকার বেগুন বিক্রি করে লাভবান হন। ভিন্ন মাত্রায় ফসল চাষ করে ভালো ফলন না পেয়ে যখন লোকসানের মুখে জর্জরিত, ঠিক তখনি বেগুন চাষ করে লাভের মুখ দেখেন এ কৃষক।
জানা যায়, চাষি সোহেল কয়েকজনের বেগুন চাষ দেখে বেগুন চাষ শুরু করেন। এসব বেগুন স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা শহরের পাইকাররা কিনে নিয়ে যান। প্রথমে প্রতি ৪০কেজি বেগুন পাইকারি ১২০০ টাকা দরে বিক্রি করলেও এখন ১৬০০-১৮০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সোহেল ও তার ভাই রাসেদ বাজারে বিক্রির জন্য ক্ষেত থেকে বেগুন সংগ্রহ করছেন।
সোহেল বলেন, আগের সপ্তাহে ১৩২০ কেজি বেগুন তুলেছি, আর আজ ১৯২০ কেজি বেগুন উঠাইলাম। তিন বছর পূর্বে বাৎসরিক চুক্তিতে ৮৫ শতাংশ জমি বর্গা নেই। সেখানে বিভিন্ন শাকসবজি চাষ করে লোকসানে পড়ি। পরে আমার নিজস্ব জমানো টাকা দিয়ে বৈশাখ মাসের শুরুতে পুরো ৮৫ শতাংশ জমিতে বেগুন চাষ করলে বাম্পার ফলন হয়। এতে আমি অনেক লাভবান হয়েছি।
তিনি আরও বলেন, সব মিলিয়ে আমার যা খরচ হয়েছে সেটা তুলতে পেরেছি। এছাড়া ক্ষেতে যা বেগুন আছে তা বিক্রি করলে আরও কিছু টাকা পাওয়া যাবে।
স্থানীয়রা জানান, আঙ্গারপাড়া ইউনিয়নের এ অঞ্চলটি অপেক্ষাকৃত উঁচু। এসব জমিতে আমন চাষ হয় না। অন্য ফসলের আবাদ তেমন হয় না। উপজেলায় বড়হাট পাশে হওয়ায় বিক্রি করার সুবিধা থাকায় এলাকার কৃষকেরা প্রতি বছর বেগুন চাষ করেন। বাজার ভালো থাকলে বেশি লাভ হয় আর দাম কমে গেলে ক্ষতি হয়। এরপরও প্রতি বছরই তারা বেগুন চাষ করেন।
ঢাকা থেকে বেগুন ক্রয় করতে আসা ব্যবসায়ী আব্দুর রাসেদ বলেন, আমি দিনাজপুরের খানসামা থেকে বিভিন্ন সবজি ক্রয় করে ঢাকা পাঠাই। এ বছর সোহেলের কাছ থেকে বেগুন কিনে ঢাকা পাঠিয়েছি।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বাসুদেব রায় জানান, উপজেলায় বিভিন্ন শাক সবজির চাষ দিন দিন বৃদ্ধি পেয়েছে। মোঃ সোহেল ইসলামের বেগুন চাষে লাভবান হয়েছে। এটা আমাদের গর্ব। আমরা ভবিষ্যতে তার আরও সফলতা কামনা করছি।