নিউজ ডেস্ক :
শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় পাশের বাসার ফ্রিজে রাখা বাসি বিরিয়ানি কীটনাশক (এন্ডিল) প্যাকেটে রেখে খাওয়ানো হয়েছিল তিন ভাই-বোনকে, এমনটাই অভিযোগ পরিবারের। ওই খাবার খেয়ে মৃত্যু হয় তিন ভাই-বোনের। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। নিহতদের মা ও আত্মীয় স্বজনদের কান্না ও আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠেছে এলাকা।
নিহত তিনজনের মা আইরিশ বেগম আহাজারি করতে করতে বলেন, প্রতিবেশী রওশন আরা বেগম তাদের বাড়ির ছেলে-মেয়েকে ফ্রিজে রাখা বাসি বিরিয়ানি না দিয়ে, আমার ছেলে-মেয়েকে দিয়েছে। বিরিয়ানি খেয়ে আমার সন্তানরা মারা গেল। শত্রুতা করে আমার ছেলে মেয়েকে মারা হয়েছে।
ফুফু রুপালী বেগম, খুকু মনি কান্না কণ্ঠে বলেন, কীটনাশক (এন্ডিল) প্যাকেটে বিরানি রেখে খাওয়ানো হয়েছিল আমার তিন ভাতিজা-ভাতিজিকে। ওই প্যাকেটের খাবার খাওয়ানোর কথা গোপন রেখে আমাদের বলেনি রওশন আরা। রওশন আরা শত্রুতা করে আমাদের বুক খালি করেছে। আমরা মামলা করবো। আমরা এই হত্যা বিচার চাই।
এদিকে প্রতিবেশী রওশন আরা বেগম বাড়ি থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। তার বোন রোকসানা আক্তার বলেন, আমার বোন ঘরে বসে বিরিয়ানি খাচ্ছিল। তখন খাদিজা ও সৌরভ আসলে তাদের বিরিয়ানি খেতে। খাওয়া শেষে তারা আবার বিরিয়ানি বাড়িতে নিয়ে যায়। বিরিয়ানি খেয়ে আমার বোনও অসুস্থ হয়ে পরে। এখন শুনি খাদিজা, সৌরভ ও সাথী মারা গেছেন। এতে আমার বোনের দোষ কোথায়?
নিহতর পরিবার ও এলাকাবাসী জানায়, শওকত দেওয়ানের তিন মেয়ে ও দুই ছেলে। মঙ্গলবার দুপুরে প্রতিবেশী রওশন আরা বেগমের ফ্রিজে থাকা বাসি বিরিয়ানি খায় তিন ভাই–বোন। এরপর থেকে তাদের পেটে ব্যথা ও বমি হতে থাকে। অসুস্থতা বাড়তে থাকলে তিনজনকে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে শিশু সৌরভ, খাদিজা ও তাদের বোন সাথী আক্তারকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। মঙ্গলবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যায় শিশু খাদিজা ও সৌরভ। বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় সাথী আক্তারের।
সাথী স্থানীয় বিলাসপুর হামিদিয়া শুকরিয়া সিনিয়র মাদরাসার অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী।
বিলাশপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান কুদ্দুস ব্যাপারী বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। ওই খাবার খেয়ে ফুট পয়জিং হয়েছে, নাকি তাদের বিষ খাওয়ানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে জানা যাবে। তবে বিষয়টি তদন্ত করে আসল ঘটনা খুঁজে বের করার দাবি জানাচ্ছি।
জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্তের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর জানা যাবে কি হয়েছিল। পরে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।