নিউজ ডেস্ক:
চা শিল্পের ব্যাপক উন্নয়ন হলেও উন্নতি হয় নি এই শিল্পের সাথে জড়িত চা- শ্রমিকদের। সেই ব্রিটিশ আমল থেকে তাদের জীবন ক্রীতদাসের মতো আজঅব্দি চলছে তাদের জীবন। দিনের পর দিন এ শিল্পের মালিকদের দ্বারা শোষিত ও বঞ্চনার স্বীকার হয়ে যাচ্ছে এই শিল্পের অভাগা শ্রমিকরা।
দিনদিন হু হু করে যেভাবে দেশের দ্রব্যেমুল্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে সেই তুলনায় এই চা শ্রমিকদের বেতন ১২০ টাকা দিয়ে কিভাবে সংসার চলে সেটা ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে।
যে চা দেশে বিদেশে রপ্তানি করে কোটি কোটি টাকা আয় করছেন মালিকরা। কিন্তু যারা যাদের জীবন মান বিলিয়ে দিয়ে এই শিল্প কে টিকিয়ে রেখেছে, তারাই আজ সবচেয়ে বেশি বঞ্চনার স্বীকার যা কোনভাবেই কাম্য নয়। বর্তমানে বাজার দরের সাথে যদি মিলানো যায় তাহলে দেখা যায় ১২০ টাকা দিয়ে একবেলা খেতেই কষ্টসাধ্য। কিভাবে যে এই শ্রমিকরা এই স্বল্প বেতন বা আয়ে তাদের সংসার চালায় তা সত্যিই ভাবার বিষয়।একটি সাধারণ হিসাব করলে দেখা যায় মাছ, মাংস ছাড়া যদি শুধুমাত্র ডাল ভাত খাওয়া হয় তাহলে তিনবেলা খাবার খেতে সর্বনিম্ন ২০০-২৫০ টাকা প্রয়োজন। বর্তমান বাজার দর হিসেবে ৩০০ টাকায়ও সংসার চালানো কঠিন। তারপরও যদি ৩০০ টাকা মজুরি দিতে আপত্তি করে মালিকরা তা খুবই অমানবিক।
হতভাগা চা শ্রমিকদর কে ব্রিটিশ শাসনমলে ১৮৩০ এর দশকে সুন্দর জীবন যাত্রার লোভ দেখিয়ে এনেছিলেন চা- কোম্পানির মালিকরা। কম দামে শ্রম কিনে অধিক হারে মুনাফা অর্জন করার লক্ষে ইংরেজ ব্যবসায়িরা আজীবন কাজের শর্তে চুক্তিবদ্ধ করে ভারতের বিহার, মাদ্রাজ, উত্তর - প্রদেশ,ওড়িশা প্রভৃতি অঞ্চলে কানু, তেলেগু,লোহার,রবিদাস, গোয়ালাসহ প্রায় ১১৬ টি আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে চা বাগানের শ্রমিক হিসেবে বাংলাদেশে নিয়ে এসেছিলো। গাছ নাড়লে টাকা পরে কিন্তু চা শ্রমিকরা এই অঞ্চলে এসে দেখে টাকা তো দূরের কথা : হিংসা - বিদ্বেষ,জীব জন্তুর প্রতিকূল জঙ্গলময় পরিবেশে নিজের জীবন বাঁচাতেই কষ্টসাধ্য।অ অসুখে বি-সুখে,অনাহরে অর্ধাহারে এক বীভৎস জীবনের সম্মুখীন হয় এই শ্রমিকগুলো। এমতাবস্থায় সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত তাদের এই যৌক্তিক দাবি মেনে নিয়ে শান্তিপূর্ণ সমাধানের ব্যবস্থা করা।