সুমন ইসলাম,ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:
ঠাকুরগাঁও আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে সেবা নিতে গিয়ে প্রতিটি পদে পদে হয়রানি ও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন গ্রাহকরা। অনেকে সেবা না পেয়ে ভোগান্তি নিয়ে ফিরছেন বাড়ি। দিনভর পাসপোর্ট অফিসে বসে থেকে সেবা না পেয়ে শেষে দালালদের কাছে গিয়ে অতিরিক্ত টাকা খরচ করছেন। দপ্তরটিতে সেবার চেয়ে ভোগান্তিই বেশি বলে অভিযোগ তাদের। সেবাগ্রহীতাদের অনেকে জানিয়েছেন আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালকের রুমের দরজা প্রায় সময় ভিতর থেকে বন্ধ থাকে। তিনি বিশেষ বিশেষ কাজে তার রুমে লোক নিয়ে গিয়ে রুমের দড়জা বন্ধ করে কাজ করেন।
বৃহস্পতিবার (০১ সেপ্টেম্বর ) দুপুরে সরেজমিনে শহরের ইসলামবাগে পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে দেখা যায়, অফিসের কোনো লোকজন নেই, সেবা নিতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছেন অনেকে। পাসপোর্ট নিতে গিয়ে অনেক গ্রাহককে অফিসে বসে থাকতে দেখা যায়।
পাসপোর্ট নিতে যাওয়া ঘুমারু পাল ও কেরকেরু পাল জানান, পাসপোর্ট প্রদানের তারিখ ছিল আগস্টের প্রথম সপ্তাহে কিন্তু মাস পেরিয়ে গেলেও পেলামনা। এখানে আসলেই বলে এপ্রুভ হয়েছে, কাগজ আসলে পাবেন।
পাসপোর্ট করতে আসা রাশেদ বলেন, ‘সকাল ৯ টা থেকে বসে আছি এখন দুপুর কারো দেখা নেই। দুই একজনের দেখা পাওয়া গেলেও তাদের কাছে জানতে চাইলে তারা কিছুই বলছে না। অফিস সহকারি পরিচয়ে একজন অনেক্ষ অফিসের একরুমে পাসপোর্টেও বিষয় নিয়ে কথা বলছেন, আমি গেলে একজন বলেন, এ কাজটা হোক তারপরে দেখা করেন বলে রুমের দরজা লাগিয়ে দেন।’
রফিক ইসলাম বলেন, দুই ঘণ্টা ধরে অফিসে বসে আছি একটা লোকও নেই। এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি অফিস এভাবে ফাঁকা ফেলে রাখা মানে দায়িত্বের অবহেলা। অফিসে কার সাথে কথা বলবো কোনো উপায় পাচ্ছি না। পাসপোর্ট করতে এসে এতো ভোগান্তিতে পড়েছি যে বলার কিছুই নেই। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করছি বিষয়গুলো দেখার জন্য।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, তিন মাস পর পাসপোর্ট হাতে পেলাম। পাসপোর্ট করতে যে এতো ভোগান্তি আগে জানলে আসতাম না। পাসপোর্ট নেওয়ার জন্য এখন পর্যন্ত ৬ দিন ঘুরে গেছি। অফিসে কোনো লোক থাকে না।
পাসপোর্ট করতে আসা আরো অনেকে জানান আজ নাকি তাদের সার্ভারের কাজ চলছে তাই কাজ প্রায় বন্ধ রয়েছে। অফিসে আসার পরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটে যাচ্ছে কিন্তু কেউ নেই। সেবা নিতে এসে ভোগান্তি নিয়ে বাড়ি ফিরে যেতে হচ্ছে। কাজ কবে হবে জানিনা। ভুক্তভুগীদের দাবি কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি আর্কষণ করছি যাতে এর একটা দ্রুত সমাধান হয়।
ঠাকুরগাঁও আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপ-সহকারী পরিচালক ফরিদ উদ্দীন আহমেদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে দেখা যায় তার রুমের দরজা লাগানো। কিছুক্ষন অপেক্ষার পরে দরজা খুললে তার সাথে দেখা হয়, ভোগান্তির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জনবল সংকটের কারনে এমন সমস্যা হচ্ছে। আমিসহ মাত্র তিনজন লোক নিয়ে চলছে পাসপোর্ট অফিস। এছাড়া আউট সোর্সিংয়ের ২-৩ জন কাজ করছে। এ কথা বলে ব্যাস্ততা দেখিয়ে নিজ রুম থেকে চলে যায় তিনি। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও পাসপোর্ট অফিসে তার আর দেখা মেলেনি।