আকাশ আহমেদ, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি
নওগাঁর ধামইরহাটে গাংরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে খোলা আকাশে বটগাছের নিচে পাঠদান কর্মসূচী চলছে। বিদ্যালয়ের বয়স শত বছর পেরিয়ে গেলেও আজ শ্রেণী কক্ষ সংকট দূর হয়নি। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদেরকে অনেক কষ্ট করে পাঠদান কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে। বার বার উর্দ্বতন কর্মকর্তা বিদ্যালয় ভবন নির্মাণের আশার বাণি শুনানোর পরও সমস্যার সমাধান হয়নি।
জানা গেছে,উপজেলার উমার ইউনিয়নের গাংরা গ্রামে বৃটিশ আমলে ১৯২০ সালে গাংরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। এটি উপজেলার অন্যতম প্রাচীন একটি প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বিদ্যালয়ে ১৯৯৫-৯৬ অর্থ বছরের তিন কক্ষ বিশিষ্ট একটি ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। ওই ভবনের একটি কক্ষ অফিস হিসেবে ব্যবহার করা হয়। অপর দুটি কক্ষ ক্লাস রুম হিসেবে ব্যবহার করা হয়। দুই শিফটে এ বিদ্যালয়ে পাঠদান পরিচালনা করা হয়। প্রথম শিফটে প্রাক-প্রাথমিক, প্রথম এবং দ্বিতীয় শ্রেণীর পাঠদান চলে। এছাড়া পঞ্চম শ্রেণীকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে প্রথম শিফট থেকে পাঠদান করা হয়। সেক্ষেত্রে মোট শ্রেণী কক্ষের প্রয়োজন চারটি। আছে মাত্র দুটি। প্রয়োজনের তাগিদে সিঁড়ি ঘরটিকে সংস্কার করে শিক্ষকগণ সেটিও ক্লাস রুম হিসেবে ব্যবহার করছেন। শ্রেণী কক্ষ সংকটের কারণে একটি শ্রেণীকে সবসময় বারান্দায় অথবা বটগাছ না হয় আম গাছের নিচে ক্লাস নিতে হয়। বর্তমানে ওই বিদ্যালয়ে ১৪১ জন শিক্ষার্থী এবং প্রধান শিক্ষকসহ পাঁচজন শিক্ষক রয়েছেন।
গত মঙ্গলবার দুপুুরে গিয়ে দেখা যায়,প্রধান শিক্ষক জান্নাতুল ফেরদৌস পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীকে নিয়ে বটগাছের নিচে খোলা আকাশে পাঠদান করছেন। তাকে সহযোগিতা করছেন সহকারি শিক্ষক মো.শহীদুল ইসলাম। তবে বটগাছের চারিদিকে সুন্দর করে ইট,সিমেন্ট,বালু দিয়ে বাঁধানো ও পলেস্তার করা হয়েছে। দিনের পর্যাপ্ত আলো,প্রাকৃতিক বাতাস ও গ্রামের মনোরম পরিবেশে শিক্ষার্থীরা পড়াশুনা করছে। তবে বর্ষাকালে তাদেরকে বিম্বড়নায় পড়তে হয়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোসা.জান্নাতুন ফেরদৌস বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি উর্দ্বতন কর্তৃপক্ষ অবগত করেছি এবং বিদ্যালয়ের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে ছবিসহ বিভিন্ন তথ্য পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে যে ভবনে ক্লাস নেয়া হয় সেটির বর্ষাকালে ছাদ দিয়ে পানি চুঁইয়ে পড়ে। তবে সংস্কার করে সেটি ব্যবহার যোগ্য করা হয়েছে। একটি নতুন ভবন নির্মাণ করা হলে শ্রেণী সংসট সমস্যা থাকবে না। এতে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা আনন্দে পাঠ গ্রহণ করতে পারবে।
উপজেলা প্রকৌশলী মো.আলী হোসেন বলেন, বিষয়টি নিয়ে উপজেলা শিক্ষা কমিটিতে আলোচনা হয়েছে। একটি কার্যবিবরণী তৈরি করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।