নড়াইল প্রতিনিধিঃ
নড়াইলে অবসর প্রাপ্ত এক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে জালজালিয়াতি কাগজ তৈরী করে (অবঃ) এক সেনা সদস্যের জমি রেকর্ড করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
অভিযুক্ত ওই পুলিশ সদস্যের নাম আবু তালেব মুন্সী ওরফে
মোতালেব মুন্সি।
আর অভিযোগকারী হচ্ছেন (অবঃ) সেনা সদস্য জাহাঙ্গীর আলম।
অভিযোগ উঠেছে ভূমি অফিসের কতিপয় কিছু অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারীকে নগদে তুষ্ট করে এ সমস্ত রেকর্ড কার্য্য সুসম্পূর্ণ করেছেন তিনি। হাল রেকর্ডের মালিকদের নাম বাতিল করে নিজের নামে আর এস রেকর্ড করে নিয়েছে এই চতুর সাবেক পুলিশ সদস্য।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, মোঃ মফিজুর রহমান, পিতা - সোলায়মান মোল্যা, সাং - পেরুলি, থানা ও জেলা নড়াইলের কাছ থেকে ২০০১ সালে ৩৭৪ নং আমমোক্তার নামার বলে ২৬ই জুন২০০২ইং তারিখে ৬৩ নং নড়াইল মৌজার এস, এ ৮৯০ নং খতিয়ান, হাল জড়িপ খতিয়ান ৭২১ ও সাবেক ১০৯৬ ও হাল ১৪৯৫ দাগের ২৫ শতক জমি থেকে ১০ শতক জমি নড়াইল সদর সাব রেজিষ্ট্রি অফিস থেকে ৩১৪৫ নং সাফ কবলা দলিল মূলে খরিদ করেন মোছা: হাসিনা বেগম, স্বামী - এ্যাড: ওমর ফারুক, সাং - কুড়িগ্রাম, থানা ও জেলা নড়াইল।
মালিক হয়ে ভোগদখলে করা অবস্থায় আর্থিক সমস্যার কারনে গত ৩০ই সেপ্টেম্বর ২০০৩ইং তারিখে ৫১৫৫ নং সাফ কবলা দলিল মূলে জাহাঙ্গীর আলম ও কবিতা জাহাঙ্গীরের নিকট বিক্রয় করেন তিনি । উক্ত জমিতে ১৯ বছর সেমি পাকা ঘর নির্মান করে নড়াইল সেটেলমেন্ট অফিস থেকে হাল রেকর্ড প্রাপ্ত হয়ে ভোগ দখলে আছেন (অবঃ) সেনা সদস্য ও তার পরিবার ।
এই দাগের জমি নড়াইল জেলায় পুলিশ বাহিনীতে চাকরী করতে এসে পুলিশ কনষ্টেবল মোঃ আবু তালেব মুন্সি ওরফে মোতালেব মুন্সি ( অবঃ) পিতা - মৃত মেছের আলী সাবেক সাং - মদনপুর, থানা- বাউফল,জেলা- পটুয়াখালী,জাল জালিয়াতি কাগজ পত্র তৈরী করে ক্ষমতার অপব্যবহার করে
জমির হাল রেকর্ডীয় মালিকদের নাম বাতিল করে নিজের নামে আর এস রেকর্ড করে নিয়ে এসেছেন তিনি। নিজের ক্রয়কৃত জমি অন্যের নামে রেকর্ড হওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছে (অবঃ) সেনা সদস্য জাহাঙ্গীর আলম ও তার পরিবার।
এবিষয়ে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমাদের ক্রয় কৃত জমি হাল রেকর্ডের মালিক আমরা।আমাদের নাম বাদ দিয়ে আর এস রেকর্ড নিজের নামে করে এনেছে ভূমিদস্যু, জালিয়াত সাবেক পুলিশ সদস্য আবু তালেব। আমি যশোর জোনাল অফিস সহ সব যায়গায় যাব। আমি এই ভূমি দস্যু (অবঃ) পুলিশ সদস্য আবু তালেব মুন্সির বিচার দাবি করি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নড়াইল গ্রামের বয়োবৃদ্ধ এক ব্যাক্তি জানান, আবু তালেব মুন্সি পুলিশ বাহিনীতে কনস্টেবল পদে ১৯৮৬ সালে চাকরীর সুবাদে পোষ্টিং নিয়ে নড়াইলে আসেন।এবং চাকরী থেকে অবসরে গিয়ে এখানেই আছেন।
এখানে এসে চাকরীর পাশাপাশি নড়াইল ভূমি অফিসে যাতায়াতের সুবাদে ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে এবং জাল জালিয়াতি কাগজ তৈরি করে অন্যের জমি নিজের নামে রেকর্ড করে নেন এই ( অবঃ) পুলিশ সদস্য।
অবসরে গিয়ে বর্তমানে তিনি নড়াইল মৌজার যে দাগে বসবাস করছেন সেটাও জাল কাগজ তৈরি করে দখল করে নেওয়া।কিছু দিন আগে খাস খতিয়ানের জমি থেকে লক্ষাধিক টাকার গাছ বিক্রি করেছেন তিনি।
নড়াইল মৌজার ১০৯৫ ও ১০৯৬ দাগে প্রায় ১ একর ৩৬ শতক জমি নিজের নামে রেকর্ড করে নিয়েছেন তিনি এর মধ্যে জাহাঙ্গীরের ১০ শতক জমিও আছে। এখন মৌজা গেজেট আকারে প্রকাশ হওয়ার জন্য ঢাকায় আছে। গেজেট হয়ে আসলে চরম ক্ষতির সম্মুক্ষিন হবে ( অবঃ) সেনা সদস্য জাহাঙ্গীর আলম ও তার পরিবার।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য মোতালেব মুন্সি বলেন, রেকর্ড সুত্রে আমি মালিক। যারা জমি দাবি করছে তাদের নামে কেন রেকর্ড হয়নি? আপনি কিভাবে মালিক হলেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,এই জমি নিয়ে নড়াইল জেলা প্রশাসক কে বিবাদী করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা চলছে।রেকর্ড সূত্রে আমি মালিক।
আপনার কাছে মালীকানা দাবী করার মত কোন কোন কাগজ পত্র আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার কাছে কোন কাগজ পত্র নেই, সব কোর্টে জমা দেওয়া।