নিউজ ডেস্ক :
চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিজয় কামনা করে দলীয় নেতাদের সঙ্গে মোনাজাতে অংশ নিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মমিনুর রহমান। পরে প্রার্থীকে পাশে বসিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশে বক্তব্যও দেন তিনি। এতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয়ের জন্য বিএনপি-জামায়াতকে দোয়া করতে বলেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যান চেয়ারম্যান প্রার্থী এটিএম পেয়ারুল ইসলাম। এ সময় তাঁর সঙ্গে জেলা পরিষদের বর্তমান প্রশাসক উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ সালাম, দক্ষিণ জেলার সভাপতি সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান এবং নগরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর পেয়ারুলের বিজয় কামনা করে মোনাজাত করেন নগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য শফর আলী। এতে আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ডিসিকেও হাত তুলে অংশ নিতে দেখা গেছে।
এরপর তিনি বাঁ পাশে পেয়ারুল এবং ডান পাশে সংসদ সদস্য মোছলেমকে বসিয়ে বক্তব্য দেন। এ সময় আগামী নির্বাচনকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক মমিনুর রহমান বলেন, 'এই নির্বাচনে সিদ্ধান্ত হবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতা স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের পক্ষের শক্তির হাতে থাকবে নাকি স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তির হাতে যাবে। আমি মনে করি, বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতা স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে যদি থাকে, তাহলে আমাদের দেশে আওয়ামী লীগ বলি, বিএনপি বলি, জামায়াত বলি, সবাই নিরাপদ থাকবে। আমি মনে করি, বিএনপি-জামায়াতেরও এখন দোয়া করা উচিত শেখ হাসিনা যেন আবার ক্ষমতায় আসেন।'
বয়োজ্যেষ্ঠ আওয়ামী লীগ নেতাদের পাশে বসিয়ে নিজেদের মধ্যে বিরোধ মেটানোরও সবক দেন ডিসি। তিনি বলেন, 'নিজেদের মধ্যে ছোটখাটো ভুল বোঝাবুঝি যদি থাকে, সেগুলোর ঊর্ধ্বে উঠে যে কোনো মূল্যে বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতা যাতে স্বাধীনতার সপক্ষ শক্তির হাতে থাকে, সেজন্য আন্তরিকভাবে কাজ করা উচিত। জাতির স্বার্থে, দেশের স্বার্থে সবাই একসঙ্গে কাজ করব, বাংলাদেশকে রক্ষা করব।' পরে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন সংসদ সদস্য মোছলেম।
ডিসির এ বক্তব্যকে 'সরকারি চাকরিবিধির চূড়ান্ত লঙ্ঘন ও অসদাচরণ' বলে উল্লেখ করেন সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন চট্টগ্রামের সম্পাদক আখতার কবির চৌধুরী।
তিনি বলেন, 'প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের সংবিধান ও দেশের জনগণের প্রতি আনুগত্য থাকার কথা। কিন্তু তাঁর এমন বক্তব্যে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও লজ্জা পান। একজন রিটার্নিং কর্মকর্তা নিরপেক্ষ আচরণ করবেন এটা প্রত্যাশা করার বিষয় না, এটাই স্বাভাবিক। সরকার ও তাঁর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উচিত তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব থেকে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া।