সানজিম মিয়া – রংপুর প্রতিনিধি
রংপুরের গঙ্গাচড়ায় দেবর কর্তৃক ভাবিকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার আলমবিদিতর ইউনিয়নের খামার মোহনা গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা কুদ্দুস আলী (৪৫) পিতা ফজলুল হক এবং মোসলিম (৪০) পিতা-মৃত আব্দুল হামিদ এর বিরুদ্ধে গতকাল রবিবার (২ অক্টোবর) রাত ১১ টার দিকে গৃহবধূকে ধর্ষণের উদ্দেশ্যে গৃহবধূর ঘরে প্রবেশ করলে ঐ গৃহবধূ কৌশলে বাইরে বেরিয়ে এসে ৯৯৯ এ কল করেন।
৯৯৯-এ কল করার বিষয়টি জানতে পেরে দেবর মোসলেম বাড়ির টাডি ব্যাড়া ভাংচুর করে গৃহবধূকেই ফাঁসানোর চেষ্টা করেন এবং গৃহবধূকে বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দেয়।কিছুক্ষণ পর পুলিশ এসে ঘটনার বর্ণনা শুনে গৃহবধূকে বাড়িতে রেখে ধর্ষণের চেষ্টা করা দুই ব্যাক্তিকে শাসিয়ে চলে যায়।
গতকালের ঘটনাটির পিছনে এক বিশাল রহস্য আছে। বেশকিছু সঙ্গতিপূর্ণ বিষয়ে ০৭/০৯/২০২২ সালে ৫জনের নামে মামলা করেছিল এই গৃহবধূ। মামলার জের ধরেই তার ওপর নির্যাতন। চলুন জেনে নেই কি ঘটেছিল ২০২২ সালে।কেন ৫জনের নামে হয়েছিল মামলা।
গৃহবধূর রশিূদুল ইসলামের সাথে এটি দ্বিতীয় বিবাহ।প্রথম বিবাহ হয়েছিল আলমবিদিতর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আজিজুল ইসলামের সাথে।আজিজুল ইসলামের সংসারে ১ ছেলে ও ১ মেয়ে জন্ম দেয় গৃহবধূ। আজিজুল ইসলামের মৃত্যুর পরে গৃহবধূর গচ্ছিত সম্পদ আত্মসাৎের নিমিত্তে রশিদুল ইসলাম বিভিন্নভাবে গৃহবধূকে প্রলোভন দেখিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে এবং বিয়ে করার প্রস্তাব দেয়।
বিয়ের কিছুদিনপর গৃহবধূর গচ্ছিত দশ লক্ষ্য টাকা ও তিনটি গরু ফুসলিয়ে নিজের কব্জায় নেয়। গরু ও টাকা হাতিয়ে নেয়ার পর বিভিন্ন অপবাদে গৃহবধূর সাথে দূরত্ব সৃষ্টি করে স্বামী রশিদুল যার মদদদাতা তার আপন ভাই মোসলেম ও সহযোগী কুদ্দুস।
গৃহবধূর ভরণ পোষণ থেকে শুরু করে সংসারের খরচ দেওয়াও বন্ধ করে দেয় তারা যাতে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হয়।
ভরণ পোষণ না দেয়া এবং শারিরীক নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে গঙ্গাচড়া মডেল থানা লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন গৃহবধূ। সেই মামলার পর থেকে নির্যাতনের মাত্রা আরও বৃদ্ধি পায়।তারপরেও অনেক কষ্ট সহ্য করে স্বামীর সংসার করেন তিনি।
পরিশেষে গৃহবধূকে বিদায় করতে না পেরে দেবর মোসলেম ও সহযোগী কুদ্দুস পরিকল্পনা করে তার স্বামীকে ঢাকায় পাঠিয়ে তাকে কুপ্রস্তাব দেয়।কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বিভিন্নভাবে নির্যাতন চালায়।
শেষমেশ নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে নিরুপায় হয়ে গতকাল রাত ১২ টার দিকে ৯৯৯ এ ফোন করে পুলিশের সহায়তা চায়।রাতারাতি পুলিশ এসে গৃহবধূকে উদ্ধার করে।এমতাবস্থায় তাদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানায় নির্যাতিত গৃহবধূ। স্ত্রীর অধিকার ফিরে পেতে স্বামীর বিরুদ্ধেও মামলা করবেন তিনি।
Leave a Reply