সুমন খন্দকার, ইসলামপুর (জামালপুর) প্রতিনিধি: জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার প্রথম শ্রেণি পৌরসভার নির্ধারিত কোন কসাইখানা নেই। যত্রতত্র নুংড়া জায়গায় পশু জবাই করায় বজ্রে দূর্গন্ধে হুমকী মূখে পড়েছে জনস্বাস্থ্য। মাংস ব্যবসায়ীরাসহ স্থানীয় সচেতন মহল জুরুরী ভিত্তিতে প্রশাসনের নিকট নির্ধারিত জায়গায় পশু জবাই করার কসাইখানা তৈরীর দাবি জানিয়েছেন।
জানা যায়, প্রতিবছর ইসলামপুর পৌরসভা কার্যালয় থেকে পৌর কসাইখানা নামে হাটবাজার ইজারা ডাক হলেও বাস্তবে নেই নির্ধারিত কোন কসাইখানা । ফলে ইজারাদাররা পশু জবাই প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘পশু জবাই ও মাংস পরীক্ষা’ নীতিমালার কোন তোয়াক্কা না করে পৌর কসাইখানা দরপত্রের মাধ্যমে নিয়ে ধর্মকুড়া বাজারের যত্রযত্র পশু জবাই করে পরিবেশ নষ্ট করছেন।
মাংশ ব্যবসায়ী কসাইরা কোন উপায় না পেয়ে ইজারাদারের ইচ্ছায় যত্রযত্র তাদের পশু জবাই করা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা। পশু জবাইয়ের কোন নিয়মনীতি না মেনে কাসাইরা পৌর এলাকার ধর্মকুড়া বাজার, কাচারী মোড়, বঙ্গবন্ধু মোড় বাজার, মোশারফগঞ্জ বাজারসহ যত্রতত্র পশু জবাই করা করছেন।
এব্যাপারে উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. তোফালে আহম্মেদ জানান, যত্রতত্র পশু জবাই করা ঠিক নয় এতে পরিবশে নষ্ট হয়। বিষয়টি নিয়ে তিনি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সাথে কথা বলবেন।
ইসলামপুর পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের শেখ জানান, খুব শিগ্রই জায়গা খুজেঁ কসাইখানার নির্ধারিত স্থান তৈরী করা হবে। আপাতত ৬মাসের জন্য শহরের ধর্মকুড়া বিলে পশু জবাই করতে বলা হয়েছে।
এ ব্যাপারে মাংস ব্যাবসায়ীরা সহ স্থানীয় সচেতন মহল জুরুরী ভিত্তিতে প্রশাসনের নিকট নির্ধারিত জায়গায় পশু জবাই করার কসাইখানা তৈরীর দাবি জানিয়েছেন
উল্লেখ্য যে, প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘পশু জবাই ও মাংস পরীক্ষা’ নীতিমালায় বলা হয়েছে,‘জবাইখানায় পশু রাখার শেড থাকতে হবে এবং ঝুলিয়ে পশুর চামড়া ছাড়াতে হবে যাতে মাটি স্পর্শ করতে না পারে। কমপক্ষে তিন দিন পশু রেখে ডাক্তারি পরীক্ষায় সার্টিফিকেট মিললেই জবাইয়ের জন্য নেওয়া হবে। চাকু দিয়ে চামড়া তোলা যাবে না, পুলিং চেইন ব্যবহার করতে হবে। জবাই করার পর মাংস কুলিং অবস্থায় আট থেকে ২৪ ঘণ্টা রাখতে হবে যাতে মাংসের ওপর চর্বির কোটিং পড়ে। এতে মাংস জীবাণুমুক্ত থাকবে। প্রসেসিং রুমে প্যাকেটিং করার আগে ভেটেরিনারি সার্জন পয়জন ও অ্যান্টিবায়োটিকসহ অন্যান্য পরীক্ষার পর সার্টিফিকেট দেবেন এটা বাজারজাত হবে কি না। বাজারজাতের উপযুক্ত হলে সিলম্যান গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়ার জন্য আলাদা আলাদা সিল দেওয়া হবে। এরপর সরকারি চার্জ হিসেবে টাকা নিবেন। জবাইখানায় আট ঘণ্টা হিসেবে প্রতি শিফটে একজন ভেটেরিনারি ডাক্তার, হুজুর, পরিদর্শক, সিলম্যান এবং ক্লিনার থাকবে। এভাবে পশু জবাই হলেই কেবল স্বাস্থ্যসম্মত মাংস পাওয়া যাবে। এ নীতিমালার শর্ত মেনেই জবাই স্লাাবের ইজারাদার ইজারা নেন। সরকার অনুমোদিত জবাইখানার বাইরে এবং সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া পশু জবাই করাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ বিধান রেখে ২০১১সালের ২৪ আগস্ট ‘পশু জবাই ও মাংসের মান নিয়ন্ত্রণ বিল’ ২০১১ পাস হয়েছে।
বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে বিক্রির জন্য কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান জবাইখানার বাইরে পশু জবাই করতে পারবে না। আইন লঙ্ঘনকারী ব্যক্তির ভ্রাম্যমাণ আদালত আইন ২০০৯অনুসারে বিচার হবে। বিচারে কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত হলে অনূর্ধ্ব এক বছর বিনা শ্রম কারাদন্ড অথবা নূন্যতম পাঁচ হাজার এবং অনূর্ধ্ব ২৫ হাজার টাকা আর্থিক দন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন।
সুমন খন্দকার
ইসলামপুর,জামালপুর।
Leave a Reply