পিরোজপুর প্রতিনিধিঃ
ইন্দুরকানী প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের স্বীকৃতি ও এমপিওভূক্তির দাবিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাত লাভের আশায় পিরোজপুরের ইন্দুরকানী থেকে ঢাকার পথে পদযাত্রা শুরু করেছেন বিদ্যালয়টির প্রতিবন্ধী শিক্ষক জাহিদুল ইসলাম।
ইন্দুরকানী থেকে ঢাকার দূরত্ব ২৩৩ কিলোমিটার। বৃহস্পতিবার সকালে ইন্দুরকানী প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় থেকে পায়ে হেটে তিনি ঢাকার গণভবনের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন। এছাড়া তার সাথে সফরসঙ্গী হিসেবে রয়েছেন আরিফুর রহমান টুটুল জাহিদুল ইসলামের একটি পা অচল ও একটি চোখ দৃষ্টিহীন। হাতদুটিও প্রায় অচল। ঘরে তার বৃদ্ধ বাবা শাহজাহান মোল্লা মা মানষিক রোগী। বৃদ্ধা মা নানা রোগে আক্রান্ত। বাবা, মা, স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটছে তার। বাধ্য হয়ে তিনি এখন একটি চায়ের দোকান খুলে বসেছেন।
জাহিদুল ইসলাম জানান, নিজের শারিরীক প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করেছি। প্রতিবন্ধীদের শিক্ষা জীবন কতটা কষ্টের হয় তা আমি জানি। তাই ২০১৮ সালে ইন্দুরকানী প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়টি আমরা প্রতিষ্ঠা করি।
সরকারের সকল ধরণের নীতিমালা মেনে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করে সমাজকল্যাণ মন্ত্রনায়লয়ের বিজ্ঞপ্তি অনুসারে স্বীকৃতির জন্য আবেদন করা হয়।
স্থানীয় সংসদ সদস্য আনোয়ারহোসেন মঞ্জু বিদ্যালয়টির প্রশাসনিক অনুমোদনের জন্য একাধিকবার ডিও লেটার প্রদান করেছেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রনালয়ে। তারপরেও কোন কাজ হয়নি। আমরা ২১ জন শিক্ষক কর্মচারী বিনা বেতনে ১৫৩ জন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীদের পাঠদান করি।
তাদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বর্তমানে অর্থ কষ্টে বিদ্যালয়টি প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। আমরা শিক্ষক কর্মচারীরা চরম মানবেতর জীবন যাপন করছি। সরকারি ভাবে আমাদের কোন ধরণের সহায়তা দেয়া হয় না। তাই যাতে ইন্দুরকানী প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়সহ এধরণের সকল প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়গুলোকে অনতিবিলম্বে স্বীকৃতি ও এমপিওভূক্ত করা হয় সে দাবি নিয়ে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করতে চাই। তার দেখা পেলে আশা করি তিনি আমাকে খালি হাতে ফেরাবেন না।
ইন্দুরকানী প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহবায়ক আহাদুল ইসলাম জানান, ২০১৮ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করার পর থেকে নিয়মিত বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের পাঠদান চলছে। তবে বর্তমানে শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন ভাতা ও বিদ্যালয়ের সার্বিক খরচ মেটাতে পারছি না। বিদ্যালয়টি প্রায় বন্ধের উপক্রম হয়েছে। বিদ্যালয়টি বন্ধ হয়ে গেলে ১৫৩ জন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুর শিক্ষা জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। আমাদের বিদ্যালয়ের মতই সারাদেশে কয়েক শতাধিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মচারীরা কোন ধরণের বেতন ভাতা পাচ্ছে না। তাই এই বিদ্যালয়গুলো দ্রুত এমপিওভুক্ত করা জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
পিরোজপুর সংবাদদাতা।