তাওহীদ হাসান উসামা
যশোরের অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহুল আলোচিত ও সমালোচিত টেস্ট বাাণিজ্যের হোতা, কমিশন খোর ও গলাকাটা ডাক্তার গোবিন্দ পোদ্দারকে অবশেষে যশোরের শার্শায় বদলি করা হয়েছে।
এতে হাফ ছেড়ে বেঁচেছেন হাসপাতালের রোগী ও এলাকাবাসি। যশোর জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সুত্রে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। জেলা সিভিল সার্জন ডা. বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস স্বাক্ষরিত এক আদেশে গত রোববার তাকে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলি করা হয়। জানা যায়, অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদানের পর থেকে একের পর এক নানা অনিয়মে জড়িয়ে সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন ডা. গোবিন্দ পোদ্দার। বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে রোগীদের অপ্রয়োজনীয় টেস্ট দিয়ে নির্দ্দিষ্ট প্যাথলজিতে যেতে বাধ্য করার মত গুরুতর অভিযোগ ছিল সব সময়।
এছাড়াও হাসপাতালের অভ্যন্তরে ডাক্তারদের সমন্ময়ে গঠিত একটি সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রন করতো এই ডাক্তার। এমনকি হাসপাতালের জরুরী বিভাগে বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দালালদের শেল্টার দিয়ে আসছিলো। জরুরী বিভাগের অভ্যন্তরে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের সাথে অসৌজন্য মূলক আচারণের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে হাসপাতালে সেবা নিতে আসা গরিব অসহায় মানুষের পকেট কেটে বিপুল সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলার স্বপ্ন এই ডাক্তারকে অষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে। তারই ধারাবাহিকতায় অভয়নগরে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়লে কপাল খুলে যায় তার। হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গু রোগীদেরকে আটকে রেখে প্রতিদিন নিত্য নতুন টেস্ট দিয়ে কমিশন বানিজ্য করে আসছিলো।
সম্প্রতি অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গু রোগী আটকে রেখে টেষ্ট বানিজ্যের অভিযোগ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন গনমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর নড়েচড়ে বসে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অনিয়মের লাগাম টানতে স্বাস্থ্য বিভাগ এ সিন্ধান্ত গ্রহণ করেছে বলে সুত্র জানায়। গতকাল বিকালে ডাক্তার গোবিন্দ পোদ্দারের বদলির খবর ছড়িয়ে পড়লে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে অভয়নগরবাসী। আবদুল্লাহ নামে একজন ভুক্তভোগী সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, ডাক্তারী পেশা একটি মহান পেশা সেই পেশার অমর্যাদা করেছেন তিনি, নানা প্রকার টেস্ট দিয়ে আমাকে অযথা হয়রানি করেছেন বারবার। আবিদ আব্দুল্লাহ নামের অপর একজন বলেন, আমাদের হাসপাতালে শুধু গোবিন্দ পোদ্দার না আরো অনেক রাঘব বোয়াল রয়েছে তাদেরকেও এ হাসপাতাল থেকে বদলির জোর দাবী জানাচ্ছি।
সুন্দলী এলাকার মানব মন্ডল নামের একজন অসহায় রোগী জানান, আমার স্ত্রীর ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হলে হাসপাতালে ভর্তি করি, ৩ দিন পর মোটামুটি সুস্থ হয়ে গেলেও ছুটি না দিয়ে প্রতিদিন টেস্ট করিয়েছেন হাসপাতালে ঐ ডাক্তারসহ আরো একজন। এছাড়া গত ২৭ অক্টোবর-২২ তারিখে উপজেলার দিঘলিয়া গ্রামের মাহমুদুল ইসলাম নামের ১৩ মাসের এক শিশুর প্রেসক্রিপশনে সিপ্রোসিন-৫০০ ও নাপা-৫০০ ট্যাবলেটসহ নানা প্রকার ওষুধ লিখে রোগী-স্বাজনদের কাছে আতংকে পরিণত হয়েছেন ওই ডা. গোবিন্দ পোদ্দার।
Leave a Reply