(জামালপুর) প্রতিনিধি :
জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার শিমুলতলা টেকনিক্যাল এন্ড বি.এম কলেজের অধ্যক্ষ আনোয়ার হোসেন এইচ,এসসি পরীক্ষার্থীদের নিকট থেকে ফরম পূরণের ফি নিয়েও ফরম পূরণ না করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে অনিশ্চিতে পড়েছে ২৫জন পরীক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ।
ফরম পূরণের নির্ধারিত সময়ে ফরম পূরণ না করায় পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে পারছে না ওই কলেজের ২৫ জন এইচ,এসসি পরীক্ষার্থী।
এ ব্যাপারে শনিবার (০৫ নভেম্বর) ভোক্তভোগী পরীক্ষার্থীরা তাদের প্রবেশ পত্র নিতে গিলে দেখা যায় তাদের নামে কোন প্রবেশ বোর্ড থেকে প্রেরণ করা হয়নি।
এ নিয়ে ভোক্তভোগী পরীক্ষার্থীদের মাঝে দেখা দেয় বিরুপ প্রতিক্রিয়া। কলেজের অধ্যক্ষকে বার বার প্রবেশ পত্রের কথা জিজ্ঞাস করা হলে তিনি বলেন, আমি সময় মতো ফরম পূরণের জন্য মাইকিং করে সবাইকে ফরম পূরণ করার জন্য জানিয়ে দিছি। আবার বলেন, কলেজের প্রভাষক মোর্শেদা আক্তার তাদের ফরম পূরণের টাকা নিয়েছে। কিন্তু যথা সময়ে তাদের ফরম পূরণ করেনি। এর দায় আমি নিতে পারব না।
পরে ভোক্তভোগী পরীক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট গেলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিশেষ কাজে জামালপুরে থাকায় বিক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থীরা তার সাথে দেখা করতে পারেনি। পরে পরীক্ষার্থীরা ইসলামপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ভোক্তভোগীদের অভিযোগ কলেজের অধ্যক্ষ আনোয়ার হোসেন ও প্রভাষক মোর্শেদা আক্তারের যোগসাজশে আমাদের কাছ থেকে যথা সময়ে ফরম পূরণের টাকা জমা নিয়েও সঠিক সময়ে তারা আমাদের ফরম পূরণ করেননি। সকাল হলেই আমাদের পরীক্ষা। এখন আমরা কি করব। আমাদের দায়ভার কে নিবে এ নিয়ে হতাশায় ভোগছে ভোক্তভোগী পরীক্ষার্থীরা।
কলেজের অধ্যক্ষের নিকট এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি সময় মতো আফজালের মাইক দিয়ে ফরম পূরণের বিষয়টি প্রচার করেছি। আমার কলেজের ম্যাডাম মোর্শেদা আক্তার ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ফরম পূরণ করেনি। তারপরেও আমি বিষয়টি দেখছি যে কি করা যায়। আমি কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের সাথে কথা বলেছি যদি ব্যবস্থা করা যায় তাহলে ভালো না করা গেলে কিছু করার নাই।
অভিভাবকদের অভিযোগ এরকম অবহেলার কারণে শিক্ষার্থীরা এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে পারবে না এটা মেনে নেওয়ার মতো না।
ওই কলেজের একজন এইচএসসি পরীক্ষার্থী জানান, ফরম পূরণের সময় আমি ও আমার বন্ধুরা মিলে ফরম পূরণ করার জন্য জন প্রতি ৫৫০০ টাকা টাকা করে জমা দেই। কিন্তু আমাদের প্রবেশ পত্র নিতে এসে জানতে পারি ফরম পূরণ হয়নি। অধ্যক্ষকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি টালবাহানা করছেন। এখন আমাদের পরীক্ষা দেওয়া নিয়ে চিন্তিত আছি।
অভিযোগ পাওয়া গেছে, অধ্যক্ষ ও তার সহযোগী মোর্শেদা আক্তার তাদের বাড়ি ঘর ফেলে আত্মগোপনে আছে।
অধ্যক্ষের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি যমুনা ট্রেন যোগে ঢাকায় যাচ্ছি দেখি কি করা যায়।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মোর্শেদা আক্তারের সাথে মোবাইল ফোনে বার বার যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায় নি।
উল্লেখ্য, গত ১ জুন ২০২২ তারিখে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ড এইচ,এসসি ফরম পূরণের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। যার ১ম দফায় ফরম পূরণের সময়সীমা ছিল ০৮-০৬-২২ হতে ২২-০৬-২২ পর্যন্ত। যার মেয়াদ শেষ হলে ২য় বার আবারোও ২২/০৬/২২ তারিখের বিজ্ঞপ্তিতে ০৬/০৭/২২ তারিখ পর্যন্ত ৩য় বার ০৬/০৭/২২ তারিখের বিজ্ঞপ্তিতে ২২/০৭/২২ পর্যন্ত ৪র্থ বার ১৯/০৭/২২ তারিখের বিজ্ঞপ্তিতে ২৬/০৭/২২ পর্যন্ত ও সর্বশেষ ০২/০৮/২২ তারিখের বিজ্ঞপ্তিতে ২৩/০৮/২২ পর্যন্ত ফরম পূরণের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়। তার পরেও বিলম্ব ফি সহ ফরম পূরণ করার সুযোগ ছিলো ভোক্তভোগী শিক্ষার্থীদের।
সুমন খন্দকার
ইসলামপুর,জামালপুর।
Leave a Reply