নিউজ ডেস্ক :
শেরপুরে চারদিনের কন্যাশিশু নিয়ে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন নারজিনা আফরিন তৃষা নামের শিক্ষার্থী। তিনি শেরপুর সরকারি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী।
মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) সকালে শেরপুর সরকারি মহিলা কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্রে বাংলা দ্বিতীয় পত্র লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। আর শিশুকে নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্র চত্বরে অপেক্ষা করছেন তার শাশুড়ি সুলতানা মহসিনা।
তৃষার পরিবার জানায়, গত বছরের ১৯ নভেম্বর পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় মুন ও তৃষা দম্পতির। পরে এবছরের ২ নভেম্বর রাতে শেরপুর শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাদের কন্যা সন্তানের জন্ম হয়।
দ্বিতীয় দিনের পরীক্ষা শেষে কথা হয় পরীক্ষার্থী তৃষার সঙ্গে। তিনি জানান, আমি পরীক্ষা ভালোই দিচ্ছি। এখানে স্যারদের সহযোগিতা পাচ্ছি। কিন্তু অনেকক্ষণ বসে থেকে পরীক্ষা দিতে হয় বলে শারীরিক কিছু সমস্যা হয় মাঝেমধ্যেই। আমার শাশুড়ি মা পরীক্ষার সময় আমার মেয়ের দেখভাল করছেন। আমার আগ্রহ ছিল পড়াশোনা শেষ করার। শাশুড়ির জন্যই পরীক্ষাটা দিতে পারছি। তা না হলে চারদিনের বাচ্চা নিয়ে পরীক্ষা দিতে আসতে পারতাম না।
তৃষার শাশুড়ি সুলতানা মহসিনা বলেন, আমার বউ মা খুবই ভালো ও মেধাবী শিক্ষার্থী। তার ইচ্ছাশক্তিও প্রচুর। তার সাহসেই আমরা সাহস পেয়েছি। আমরা তাকে সাহস দিচ্ছি সবসময়। সে যে পর্যন্ত পড়াশোনা করতে চায় আমরা তার পাশে থাকবো। পড়াশোনার বিকল্প নেই। আমার বউ মা দুইটা পরীক্ষাই খুব ভালো দিয়েছে। সে যখন পরীক্ষা দেয় তখন আমি পরীক্ষা কেন্দ্রেই নাতিকে নিয়ে বসে থাকি। আমাকেও কেন্দ্রে আগত অন্যান্য অভিভাবকগণ ও শিক্ষকরা সহযোগিতা করছেন। মাঝেমধ্যে কান্নাকাটি করলেও মায়ের পরীক্ষায় কোনো সমস্যা হচ্ছে না।
এদিকে শেরপুর সরকারি মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও কেন্দ্র সচিব মো. হাবিবুর রহমান বলেন, আমরা পরীক্ষার্থীর মার কাছে শিশু রেখে পরীক্ষা দেয়ানোর ব্যবস্থা করছি। তার পরীক্ষা দেয়ায় যাতে কোনো সমস্যা না হয় আমরা সেদিকে খেয়াল রাখছি। এত ছোট শিশুকে নিয়ে পরীক্ষা হলে বসা বিশাল ব্যাপার। তার মনের ইচ্ছে ছিল বলেই সম্ভব হয়েছে।